সাফ অনূর্ধ্ব-১৬ নারী চ্যাম্পিয়নশিপ জয়ী দলের গোলরক্ষক ইয়ারজান বেগমের একবছর আগের জীবনই ভিন্ন ছিল। বছর পেরিয়ে এসে জীবন পাল্টে গেছে তার। যার মঞ্চ তৈরির প্রধান কারিগর ইয়ারজানের পঞ্চগড়ের কোচ আবু তারেক টুকু। তার উদ্যোগের কারণে এখন সাফজয়ী গোলকিপার ইয়ারজান।
চ্যাম্পিয়ন ট্রফি নিয়ে সোমবার দেশে ফিরেছে বাংলাদেশ। বুধবার চ্যাম্পিয়নদের সংবর্ধনা দিয়েছে চ্যানেল আই। ছিল পুরস্কার পর্বও। সকাল ১১টায় বাফুফের বাসে চড়ে চ্যানেল আই প্রাঙ্গণে আসেন শিরোপাজয়ী বীরকন্যারা, ফুলেল শুভেচ্ছায় বরণ করে নেয়া হয় তাদের।
পরে চ্যানেল আই অনলাইনের সঙ্গে আলাপচারিতায় ইয়ারজান জানান, ‘জেলা দলে খেলার সময় একবছর আমার খেলা বন্ধ ছিল। সেসময় আমার কোচ আবু তারেক টুকু আমার বন্ধুর মাধ্যমে আমার সাথে যোগাযোগ করেন। আমাকে ফোন দিয়ে বলেন তার একাডেমিতে যেতে, প্র্যাকটিস করতে। তখন তাকে বলি, স্যার আমার বাবা যদি প্র্যাকটিসে যেতে বলে তাহলে যাব। এরপর বাবা আমাকে অনুমতি দেয়।’
‘আসলে ওনাকে(কোচকে) আমি স্যার বা কোচ কিছুই বলি না। আমার ভাই নেই, তাই ওনাকে আমি ভাই বলি। উনি আমার যাতায়াত খরচ দিতেন। তার মাধ্যমেই আমার আজকে এখানে উঠে আসা।’
মা’র প্রসঙ্গ তুলতেই স্বাভাবিক কৃতজ্ঞতা ঝরল ইয়ারজানের কণ্ঠে। অনুভূতি প্রকাশ করলেন এভাবে, ‘আসলে উনি(মা) অনেক কষ্ট করে আজকে আমাকে এখানে এনেছেন। মাকে ধন্যবাদ দিলে ছোট হয়ে যাবে। মা তো মা-ই হয়।’
টাইব্রেকার শেষে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার মুহূর্তে কেমন বোধ করছিলেন ইয়ারজান, যে টাইব্রেকারে তিন শট ঠেকিয়েছেন তিনি। জানালেন, ‘‘মুহূর্তটা অনেক ভালো ছিল। অনেক আনন্দ লাগছিল যে আমরা চ্যাম্পিয়ন হতে পেরেছি। আমাদের লক্ষ্য ছিল চ্যাম্পিয়ন হওয়া, সেটা পূরণ হয়েছে। কোচ দৌড়ে এসে আমাকে বলেছিল, ‘আমার বিশ্বাস ছিল যে তুমি টাইব্রেকারে ঠেকিয়ে দিবা।’’
চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর ঈদে প্রথম বাড়িতে যাওয়ার কথাও ইয়ারজানের সাথে আলাপে উঠে এলো, ‘আসলে এখনও নিশ্চিত না, আমরা ছুটি পাব কিনা। যদি ছুটি দেয় তাহলে বাড়িতে অনেক ভালো লাগবে। প্রথমবার এসেই যদি ছুটি পাই, তাহলে অনেক ভালো লাগবে। ভালো লাগাগুলো বাবা-মার সাথে ভাগাভাগি করতে পারব, আনন্দ করতে পারব। পরিবারের সাথে সময় কাটাতে পারলে সেটা অনেক খুশির হবে।’