তীব্র গরমে বিপর্যস্ত যুক্তরাষ্ট্র, পুরো ইউরোপ ও জাপান। চলতি বছর এই অঞ্চল সমূহ স্মরণকালের ভয়াবহ তাপমাত্রার সম্মুখীন হয়েছে। তাপজনিত কারণে মারা গেছে অনেকেই। প্রতিনিয়তই আগের রেকর্ড ভেঙ্গে চলেছে তাপমাত্রা।
বিশ্বজুড়ে রেকর্ড তাপমাত্রার পূর্বাভাস দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। দেশটির কয়েক কোটি মানুষ এখন তীব্র তাপপ্রবাহের সঙ্গে লড়াই করছে। গত শনিবার যুক্তরাষ্ট্রে কয়েক লক্ষ মানুষ উচ্চ তাপমাত্রার শিকার হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া থেকে টেক্সাস পর্যন্ত অঞ্চলে তাপপ্রবাহ আরও চরম হয়ে উঠতে পারে বলে জানিয়েছে মার্কিন জাতীয় আবহাওয়া পরিষেবা দপ্তর। চলতি সপ্তাহে অত্যন্ত গরম এবং বিপজ্জনক পরিস্থিতি সম্পর্কেও সতর্ক করা হয়েছে। অ্যারিজোনার ফিনিক্সে টানা ১৬ দিন ৪৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে।
একই পরিস্থিতি ইউরোপ ও জাপানের। বিজ্ঞানীরা বলছেন, জলবায়ু পরিবর্তন ও আবহাওয়ার বিশেষ রূপ ‘এল নিনো’র কারণে বিশ্বজুড়ে তাপমাত্রা এমন ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে।
ইটালিতে চলতি সপ্তাহে সর্বোচ্চ তাপমাত্রার রেকর্ড হয়েছে। দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় রোম, বোলোগনা এবং ফ্লোরেন্সসহ ১৬ টি শহরে সতর্কতা জারি করা হয়েছে। কর্তৃপক্ষ নাগরিকদের ‘গ্রীষ্মের সবচেয়ে তীব্র তাপপ্রবাহ এবং সর্বকালের অন্যতম তাপপ্রবাহ’ এর জন্য প্রস্তুত থাকতে বলেছে।
গ্রিসের অন্যতম শীর্ষ পর্যটন আকর্ষন অ্যাথেন্স অ্যাক্রোপলিস উচ্চ তাপমাত্রার কারণে টানা তৃতীয় দিনের মতো বন্ধ রয়েছে। ফ্রান্সে উচ্চ তাপমাত্রা ও খরা কৃষি শিল্পের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। গত মঙ্গলবার থেকে দেশটির বেশ কয়েকটি অঞ্চলে তাপপ্রবাহের সতর্কতা জারি করা হয়েছে।
স্পেনের পরিস্থিতিও আগের মতই। দেশটির আবহাওয়া সংস্থা শনিবার সতর্ক করেছে, সোমবার থেকে বুধবার ক্যানারি দ্বীপপুঞ্জ এবং দক্ষিণ আন্দালুসিয়া অঞ্চলের তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস অতিক্রম করবে।
জাপানের পূর্বাঞ্চলে তাপমাত্রা রোববার এবং সোমবার ৩৮ থেকে ৩৯ ডিগ্রি সেলসিয়াসে পৌঁছবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। আবহাওয়া সংস্থা সতর্ক করেছে, তাপমাত্রা আগের রেকর্ডগুলো ছাড়িয়ে যেতে পারে।
আফ্রিকার দেশ মরক্কোর কিছু অঞ্চলে তাপমাত্রা ৪৭ ডিগ্রি সেলসিয়াসে দাঁড়িয়েছে। তাপদাহের কারণে জর্ডানে দাবানল সৃষ্টি হয়েছে, দেশটির সেনাবাহিনী দাবানল নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছে। অতিরিক্ত গরমে ইরাকের টাইগ্রিস নদীর পানি শুকিয়ে গিয়েছে।
যদিও জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য একটি নির্দিষ্ট ঘটনাকে দায়ী করা কঠিন, তবে বিজ্ঞানীরা বলছেন, গ্লোবাল ওয়ার্মিং, কার্বন নিঃসরণ, জীবাশ্ম জ্বালানির ওপর নির্ভরতা এই তাপপ্রবাহের অন্যতম কারণ।