পরিবারে বাড়ছে নারীর কর্তৃত্ব। অন্যদিকে কমছে পুরুষ প্রধান পরিবারের সংখ্যা। শুধু পরিবারই নয় সব ক্ষেত্রেই এগিয়ে যাচ্ছেন নারীরা। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) ‘বাংলাদেশ স্যাম্পল ভাইটাল স্ট্যাটিসটিকস-২০২২’ শীর্ষক প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বর্তমানে নারীদের পরিবার পরিচালনায় সক্ষমতা বেড়েছে। ফলে পরিবারে নারীর গুরুত্বও বেড়েছে। তাদের পরামর্শ গ্রহণ করছেন পুরুষরা।
সম্প্রতি চূড়ান্ত এ প্রতিবেদনটি প্রকাশ করে বিবিএস জানিয়েছে, ২০২২ সালের হিসাব অনুযায়ী দেশে ১৭ দশমিক ৪ শতাংশ পরিবারের প্রধান হচ্ছেন নারীরা। ২০২১ সালের হিসাবে এটি ছিল ১৬ শতাংশ, ২০২০ সালের প্রতিবেদনে ১৫ শতাংশ, ২০১৯ সালে ১৪ দশমিক ৬ শতাংশ এবং ২০১৮ সালে ছিল ১৪ দশমিক ২ শতাংশ। এভাবে প্রতিবছরই নারী প্রধান পরিবার বেড়েছে।
স্যাম্পল ভাইটাল রেজিস্ট্রেশন সিস্টেম (এসভিআরএস) ইন ডিজিটাল প্ল্যাটফরম প্রকল্পের পরিচালক মো. আলমগীর হোসেন বলেন, এখন প্রচুর পুরুষ বিদেশে যাচ্ছেন। কর্মসংস্থানের উদ্দেশ্যে গিয়ে তারা দীর্ঘ সময় অবস্থান করেন। ফলে দেশে থাকা তার পরিবারের দায়িত্ব পালন করেন স্ত্রীরা। কোনো কোনো ক্ষেত্রে মায়েরাও করেন। হঠাৎ করেই নারীপ্রধান পরিবার বেড়ে যাওয়ার এটি একটি প্রধান কারণ বলে আমাদের মনে হয়েছে। সেই সঙ্গে বর্তমানে নারীদের পরিবার পরিচালনায় সক্ষমতাও বেড়েছে। সেটি না থাকলে তো পরিবার প্রধান হয়তো অন্য কেউ হতো।
তিনি আরও বলেন, প্রতিবেদনে দেখা যায়, বিদেশ যাওয়া মানুষের সংখ্যাও ২০২২ সালের হিসাবে অনেক বেড়েছে।
এদিকে ভিন্ন চিত্র উঠে এসেছে পুরুষের ক্ষেত্রে। ২০২২ সালের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দেশে পুরুষ প্রধান পরিবার হচ্ছে ৮২ দশমিক ৬ শতাংশ। ২০২১ সালের হিসাবে এটি ছিল ৮৪ শতাংশ। ২০২০ সালে ৮৫ শতাংশ, ২০১৯ সালে ৮৪ দশমিক ৪ শতাংশ এবং ২০১৮ সালের প্রতিবেদনে ছিল ৮৫ দশমিক ৮ শতাংশ। এক্ষেত্রে ধারাবাহিকভাবে পুরুষ প্রধান পরিবারের সংখ্যা কমছে।
সাবেক পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম বলেন, সরকারের পরিকল্পিত অর্থনৈতিক উন্নয়নের ফলে গত এক দশকে দেশের আর্থ-সামাজিক ক্ষেত্রে ব্যাপক পরিবর্তন এসেছে। আর্থ-সামাজিক উন্নতির সঙ্গে নারীর ক্ষমতায়ন ঘটছে। পাশাপাশি শিক্ষার হার বৃদ্ধি, কর্মসংস্থানে অংশগ্রহণ, সচেতনতা বৃদ্ধিসহ নানা কারণে নারীরা এখন অনেক বেশি তৎপর। ফলে পরিবারে নারীর গুরুত্বও বেড়েছে। তাদের পরামর্শ গ্রহণ করছেন পুরুষরা। এছাড়া সন্তান লালন-পালন করা এবং নিয়মিত বাজার করাসহ পরিবারের বিভিন্ন দায়িত্ব এখন নারীরাই পালন করছেন।