বাংলাদেশে আগামী জানুয়ারিতে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে বিরোধীদলীয় নেতা ও বিক্ষোভকারীদের ওপর দমনপীড়ন ভিন্নমত দমনের পূর্ণ প্রচেষ্টার ইঙ্গিত দেয় বলে মন্তব্য করেছে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল। তারা বলছে, বাংলাদেশি কর্তৃপক্ষের মনে রাখা উচিত যে, ভিন্নমত প্রকাশ কখনোই অপরাধ নয়।
সোমবার ৩১ অক্টোবর আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের ক্যাম্পেইনার ইয়াসাসমিন কবিরত্নে এক বিবৃতিতে এসব কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ বেলজিয়ামের রাজধানী ব্রাসেলসে তার সাম্প্রতিক তিন দিনের সরকারি সফরের ফলাফল সম্পর্কে গণমাধ্যমকে অবহিত করতে গণভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির সাম্প্রতিক সহিংসতার বিষয়ে মানবাধিকার সংস্থাগুলোর চুপ থাকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন। এরপর অ্যামনেস্টির এমন বিবৃতি সামনে আসলো।
বিবৃতিতে ইয়াসাসমিন কাভিরত্নে বলেন, বাংলাদেশে নির্বাচনের আগে, নির্বাচনের সময়ে এবং পরে বারবার হত্যাকাণ্ড, গ্রেপ্তার ও দমন-পীড়ন মানবাধিকার পরিস্থিতিকে হতাশাজনক করে তুলেছে। অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল প্রতিবাদকারীদের ওপর দমন-পীড়ন বন্ধ করতে এবং শান্তিপূর্ণ সমাবেশের সুযোগ তৈরি করে দিতে বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছে।
বিবৃতিতে ইয়াসাসমিন আরও বলেন, এটা গুরুত্বপূর্ণ যে পুলিশ যেকোন মৃত্যুর ঘটনা স্বাধীন, নিরপেক্ষ ও স্বচ্ছভাবে তদন্ত করবে, যাতে দায়ী ব্যক্তিদের বিচারের আওতায় আনা যায়। তবে এক্ষেত্রে মৃত্যুদণ্ড কাম্য নয়। এ বিষয়টিই সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে দেখতে হবে।
বিবৃতিতে তিনি আরও বলেন, গণমাধ্যমের তথ্যানুসারে বিক্ষোভকারীদের মধ্যে কতিপয় ব্যক্তি সহিংসতাকে হাতিয়ার করেছিলেন। পুলিশকে অবশ্যই বিক্ষোভকারীদের শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভের বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে এবং অল্প কয়েকজনের সহিংসতার কারণে অন্যদের অধিকার সীমিত করা থেকে বিরত থাকতে হবে।
অ্যামনেস্টির বিবৃতে বলা হয়, নির্বাচনের আগে এমন সহিংসতা উত্তেজনা উস্কে দেবে। বাংলাদেশের সরকারকে অবশ্যই এ ধরনের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে উপযুক্ত পদক্ষেপ নিতে হবে। কর্তৃপক্ষকে অবশ্যই এ বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে যে, জনগণের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিতে এবং সম্ভাব্য উত্তেজনা নিয়ন্ত্রণে সব আইনশৃঙ্খলা বাহিনী যখন শক্তি প্রয়োগ করতে তখন তারা অবশ্যই আন্তর্জাতিক মানদণ্ড মেনে চলবে।