সাবেক সংসদ সদস্য, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী মেজর (অব.) আখতারুজ্জামান বলেছেন, তারেক রহমানের কাছ থেকে বিএনপিকে বাঁচাতে চাই। আমাদের লক্ষ্য হবে কারাবন্দী খালেদা জিয়ার মুক্তি। আমরা নির্বাচন করার মাধ্যমে তাকে মুক্ত করবো।
শুক্রবার (২৪ নভেম্বর) বিকালে তার নিজ নির্বাচনী এলাকা কিশোরগঞ্জ-২ (কটিয়াদী-পাকুন্দিয়া) আসনের কটিয়াদী উপজেলার গচিহাটা কলেজ মাঠে আয়োজিত এক মতবিনিময় তিনি এসব কথা বলেন।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনী প্রচারনায় এসে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন তারেক রহমানের বিরুদ্ধে কথা বলেও বক্তব্যের শেষে তারেক জিয়া জিন্দাবাদ বলে স্লোগান দিলেন বহুল আলোচিত-সমালোচিত বহিষ্কৃত বিএনপির এ নেতা।
আখতারুজ্জামান রঞ্জন বলেন, বিএনপি একটি নির্বাচনমূখী দল। বিএনপি নির্বাচন বয়কট করতে পারে না। সব পরিস্থিতিতে বিএনপিকে নির্বাচনে আসা উচিৎ। আজকে বিএনপির নেতৃত্বে যারা আছেন তারা বিএনপির গঠনতন্ত্রকে অস্বীকার করছেন। এই অস্বীকার করছেন বলেই আজকে আমাকে দাঁড়াতে হলো। প্রতিবাদী হিসেবে তারেক রহমান যে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন সেটি ভুল। আগামী দিনে যদি কেউ বলে ভুল ছিল তাহলে আমি যেন বলতে পারি সেটি আমি আগেই বলেছিলাম। এই ভুলটি সময় থাকতেই বলেছিলাম।
তিনি বলেন, ২৮ অক্টোবর সরকারের কাছে হেরে গিয়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর মঞ্চ ছেড়ে চলে গেলেন। তিনিই বলেছিলেন, ২৮ তারিখ ফাইনাল খেলা। খেলা হলো না। আমরা এ যুদ্ধে হেরে গেলাম। এ খেলায় হেরে গেলেন। এখন আমাদেরকে এ সরকারের অধীনেই নির্বাচন করতে হবে। এটিই হবে প্রতিবাদ।
সরকার পতনের এক দফা আন্দোলনে আমরা হেরে গেছি। আমাদের হাজার হাজার নেতাকর্মী ও সমর্থকরা এখন জেল-জুলুম নির্যাতনের শিকার হচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে আমি স্বতন্ত্র হলেও নির্বাচন করে প্রতিবাদ জানাবো। নির্বাচন সুষ্ঠু হয় কি-না তা প্রমাণ করবো।
আমার দলের (বিএনপির) নেতাকর্মীদের একের পর এক জেল জরিমানা হচ্ছে। আন্দোলনের রাস্তায় নেতাকর্মীরা রাস্তায় নেমে দাঁড়াতে পারছে না। কয়েক জন মিলে ঝটিকা মিছিল ও টায়ারে আগুন জ্বালিয়ে পালিয়ে যায়। পরে তা ফেসবুকে পোস্ট করে।
মেজর (অব.) আখতারুজ্জামান রঞ্জন বলেন, আমার পরিচয় আমি সাবেক বা বহিষ্কৃত বিএনপি নেতা। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত বিএনপিই আমার পরিচয়। আমি এবার স্বতন্ত্র হিসেবে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আজ থেকে আমার নির্বাচনী যাত্রা শুরু হলো। আমার নির্বাচনী এলাকার আমার কোনো সমর্থকদের আটক-গ্রেপ্তার করতে পারবে না। করলে তার জবাব দেয়া হবে। আমার নির্বাচনী প্রচারণায় বাধা দিলে ছবি তুলে আমেরিকান এম্বাসিতে পাঠাবো।
এ সময় তিনি আরও বলেন, যারা বিএনপির কমিটিতে রয়েছেন তাদের কাছে আমরা ভোট চাইবেন না। আপনারা রাজপথে আসেন আন্দোলন-সংগ্রাম করেন।
তিনি জানান, এসব বিষয় নিয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপার্সন তারেক রহমানের সঙ্গেও কথা বলে কোনো ফল পাননি। তারেক রহমানের কাছ থেকে বিএনপিকে বাঁচাতে চাই। আমাদের লক্ষ্য হবে কারাবন্দী খালেদা জিয়ার মুক্তি। আমরা নির্বাচন করার মাধ্যমে তাকে মুক্ত করবো।
শহীদ জিয়া, খালেদা জিয়া, তারেক জিয়া জিন্দাবাদ ও বিএনপি’র নামে স্লোগান দিয়ে তিনি তার বক্তব্য শেষ করেন তিনি।
গচিহাটা কলেজ মাঠে আয়োজিত এ মতবিনিময় সভায় গ্রামের কয়েশত মানুষ অংশগ্রহণ করেন।