শনিবার (৪ ফেব্রুয়ারি) চেন্নাইয়ের ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার হয়েছে ভারতীয় বর্ষীয়ান সংগীতশিল্পী বাণী জয়রামের মরদেহ। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭৮ বছর।
তবে কীভাবে তার মৃত্যু হয়েছে তা এখনও স্পষ্ট নয়। তবে ইতিমধ্যেই ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে চেন্নাই পুলিশের থাউসেন্ড লাইটস থানার আধিকারিকরা।
গত মাসেই ভারত সরকার পদ্মভূষণ সম্মানে ভূষিত করেছিলেন ‘আধুনিক ভারতের মীরা’ হিসাবে পরিচিত এই গায়িকাকে। প্রজাতন্ত্র দিবসের দিন পদ্ম সম্মান ঝুলিতে আসে তার। সম্মান পেয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছিলেন বাণী জয়রাম। কিন্তু কে জানতো সশরীরে এই সম্মান গ্রহণ করতে পারবেন না তিনি!
তামিল নাড়ুর ভেলোরে এক তামিল পরিবারে জন্ম বাণী জয়রামের। ১৯৪৫ সালের ৩০ নভেম্বর জন্মগ্রহণ করেছিলেন এই শিল্পী, জন্মসূত্রে তার নাম ছিল কলাইবাণী। সংগীত তার রক্তে, ছোট থেকেই শাস্ত্রীয় সংগীতের তালিম নিয়েছেন। মায়ের অনুপ্রেরণা নিয়েই গুরু রঙ্গ রামানুজ আয়েঙ্গারের কাছে গানের সাধনা শুরু করেন ‘আধুনিক ভারতের মীরা’।

পরবর্তীতে কাদালুর শ্রীনিবাস আয়েঙ্গার, টি আর বালাসুব্রহ্মণিয়ান এবং আর এস মণির মতো গুরুদের কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে কর্ণাটক সংগীতের প্রশিক্ষণ নেন। নিজের জীবদ্দশায় দশ হাজারেরও বেশি গান রেকর্ড করেছেন এই গায়িকা।
১৯৬০ এর দশকের শেষে বিয়ের পর স্বামী জয়রামের হাত ধরে মুম্বাইতে হাজির হন বাণী। এরপর শুরু তার নতুন সফর। বসন্ত দেশাইয়ের প্রিয় পাত্রী ছিলেন গায়িকা। সেই সুবাদেই হৃষিকেশ মুখোপাধ্যায়ের ‘গুড্ডি’ ছবিতে গানের সুযোগ পান, সেটা ছিল তার বলিউড প্লে-ব্যাকে ডেবিউ। জয়া বচ্চনের ঠোঁটে বাণী কণ্ঠের ‘বোল রে পাপিহরা’ গান আজও জনপ্রিয়।
এছাড়াও হেমা মালিনী অভিনীত গুলজারের ‘মীরা’ ছবির সব গানে কণ্ঠ দিয়েছিলেন তিনি। সুর ছিল রবি শঙ্করের। লতার জমানায় বলিউডে প্লে-ব্যাকের দুনিয়ায় অনেকটাই কোণঠাসা ছিলেন। তবে দক্ষিণের ইন্ডাস্ট্রিতে দাপটের সঙ্গে গান করে গিয়েছেন বাণী জয়রাম। গেয়েছেন বাংলা গানও।
বাণী জয়রাম আধুনিক বাংলা গান রেকর্ড করেছিলেন, গেয়েছিলেন ‘আমার রাধা হওয়া আর হল না…’। তামিল, তেলেগু, হিন্দি, কন্নড়, গুজরাটি সহ মোট ১৯টি ভাষায় গান গেয়েছেন বাণী জয়রাম।