প্রেম ধীরে মুছে যায়, নক্ষত্রেরও একদিন মরে যেতে হয়। জার্মান আকাশে দীর্ঘদিন আলো ছড়ানো এক নক্ষত্রের নাম ছিল উয়ে সিলার। ছিল বলতে হচ্ছে, বার্ধক্যজনিত কারণে ৮৫ বছর বয়সে শুক্রবার চিরবিদায় নিয়েছেন এ কিংবদন্তি ফুটবলার।
১৯৬৬ বিশ্বকাপ। সিলারের নেতৃত্বে একের পর এক ম্যাচ জিততে থাকে তখনকার পশ্চিম জার্মানি, টানা সাফল্যে দলকে বিশ্বকাপের ফাইনালে নিয়ে যান হামবুর্গ তারকা। শেষটা সুখকর হয়নি। শিরোপার খুব কাছে গিয়ে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ৪-২ গোলে হারতে হয় সিলারের দলকে।
ক্যারিয়ারজুড়েই দুর্ভাগ্য তাড়া করে বেড়িয়েছে সিলারকে। ক্যারিয়ারে কখনোই জেতা হয়নি ইউরোপিয়ান কাপ কিংবা ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপ। তারপরও সমর্থকরা তাকে বসিয়েছেন জার্মান ফুটবলের মসনদে। ক্যারিয়ারে কেবল একবার জার্মান লিগ ও জার্মান কাপ শিরোপা জিতেছিলেন তিনি। প্রাপ্তি বলতে এতটুকুই। জার্মানিতে যে ভালোবাসা পেয়েছেন, সেটা অবশ্য অসংখ্য শিরোপা অর্জনে নাম লেখাতে না পারার তুলনায় অনেক মূল্যবানই।
১৯৫২ থেকে ১৯৭৩ পর্যন্ত হামবুর্গের হয়ে ২১ বছর মাঠ মাতিয়েছেন। হামবুর্গ জার্সিকে আপন করে খেলেছেন ৫১৯ ম্যাচ। যেখানে ৪৪৫ গোল করে ক্লাবটির ইতিহাসের সেরা গোল সংগ্রাহক তিনি। জার্মান জার্সিতেও আলো ছড়িয়েছেন। ৭২ ম্যাচে নেমে ৪৩ বার তার পা খুঁজে পেয়েছে জালের দেখা।
জার্মানদের সহ-অধিনায়ক হিসেবে খেলেছেন ৪টি বিশ্বকাপ। বুন্দেসলিগায় হামবুর্গের সর্বকালের সর্বোচ্চ স্কোরার তিনি, নামের পাশে ১৩৭টি গোল। ক্লাবটির সদস্য জোনাস বোল্ডট বিদায়বেলায় সিলারকে আবেগঘন শ্রদ্ধা জানিয়েছেন।
‘আমরা তাকে কখনোই ভুলব না। সর্বদা তাকে ধারণ করব। সিলার এমন সব কিছুর জন্য দাঁড়াতেন, যা একজন ভালো ব্যক্তির বৈশিষ্ট্য, আনুগত্য ও সর্বদা যোগাযোগ যোগ্যতা ছিল তার প্রতীক।’
জার্মান জায়ান্ট বায়ার্ন মিউনিখের সিইও অলিভার কান সিলারের মৃত্যুকে ফুটবল বিশ্বের জন্য বেদনাদায়ক উল্লেখ্য করেছেন, ‘সিলারের মৃত্যু পুরো ফুটবল পরিবারের জন্য বেদনাদায়ক ও বিশাল ক্ষতি। যখন জার্মান ফুটবল এবং সর্বশ্রেষ্ঠ খেলোয়াড়দের কথা ভাববেন, তখন মাথায় সিলারের কথা আসবেই।’