চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

টি-টুয়েন্টিতে সোহানদের আরেকটি ব্যর্থতা

বিবর্ণ ফিল্ডিংয়ের পর ব্যাটিংয়ে প্রত্যাশিত পারফরম্যান্স মিলল না। ছিল পেসার মোস্তাফিজুর রহমানের সঙ্গে হাসান মাহমুদের ধারহীন বোলিং। সবমিলিয়ে ২০ ওভারের ক্রিকেটে পরাজয়ের বৃত্তেই থাকল বাংলাদেশ।

ক্রাইস্টচার্চে ত্রিদেশীয় টি-টুয়েন্টি সিরিজের উদ্বোধনী ম্যাচে পাকিস্তানের বিপক্ষে ২১ রানে হেরে আসর শুরু করেছে নুরুল হাসান সোহানের দল।

ফিট থাকতে সবার আগে চিনি বাদ দিন, প্রাকৃতিক ও নিরাপদ জিরোক্যাল-এর মিষ্টি স্বাদ নিন।

শুক্রবার আগে ব্যাট করা পাকিস্তান ৫ উইকেটে ১৬৭ রান তোলে। জবাবে বাংলাদেশ ৮ উইকেটে ১৪৬ রান পর্যন্ত যেতে পারে।

বড় লক্ষ্যে নেমে ২৫ রানে প্রথম উইকেট হারায় টাইগার দল। ওয়াসিমের বলে পুল করতে গিয়ে ডিপ স্কয়ার লেগে আসিফের হাতে ধরা পড়েন মেহেদী হাসান মিরাজ। ১০ বলে এক ছক্কায় তার পাশে তখন ১১ রান।

আবারও ব্যর্থ সাব্বির রহমান। ১৮ বল খেলে এক চারে করে যান সবে ১৪ রান। রউফের লাফিয়ে ওঠা লেন্থ বল সামলাতে পারেননি, ব্যাটের উপরের অংশে লেগে বাতাসে উঠে যায়। সহজ ক্যাচ নেন রউফ। পাওয়ার প্লেতে বাংলাদেশ তুলতে পারে ২ উইকেটে ৩৮ রান।

তৃতীয় উইকেটে লিটন দাস ও আফিফ হোসেন ৫০ রানের জুটি গড়েন। হাতখুলে খেলতে থাকেন লিটন। আফিফ ছিলেন রক্ষণাত্মক। জুটিটি ভাঙার পরপরই হুড়মুড়িয়ে উইকেট পড়তে থাকে।

২ উইকেটে ৮৭ থেকে ৬ উইকেটে ১০১ হয়ে যায়। ১৪ রান যোগ করতে ৪ উইকেট নেই। রানের গতিও সচল থাকেনি। নেওয়াজের বলে স্লগ সুইপে ডিপ ব্যাকওয়ার্ড স্কয়ারে হায়দারের হাতে জমা পড়েন লিটন। ২৬ বলে ৪ চার ও এক ছক্কায় ৩৫ রান তার। পরের বলেই মোসাদ্দেক হোসেনকে লেগ বিফোরের ফাঁদে ফেলে নেওয়াজ। তার হ্যাটট্রিকের সম্ভাবনা যদিও পূর্ণতা পায়নি।

শাহনেওয়াজ দাহানির করা ১৪তম ওভারের শেষ বলে মিড উইকেটে ওয়াসিমের তালুবন্দি হন ২৩ বলে এক চার ও এক ছক্কায় ২৫ করা আফিফ। পরের ওভারে শাদাবের বলে ৮ রান থাকা সোহান উইকেট দেন। স্লগ সুইপের খেসারতে ওয়াইড লং অনে ইফতিখারের ক্যাচ হন।

২ রান করে ওয়াসিমের বলে এলবিডব্লিউ হন তাসকিন আহমেদ। পরের বলে নাসুম আহমেদকে বোল্ড করে ওয়াসিমও হ্যাটট্রিকের আশা জাগান।

শেষদিকে আগ্রাসী ব্যাটিং করেন ইয়াসির আলী রাব্বি। তাতে অবশ্য কেবল পরাজয়ের ব্যবধানই কমেছে। ২১ বলে ৫ চার ও ২ ছক্কায় ৪২ রানে অপরাজিত থাকেন তিনি। এক রানে অপরাজিত থাকা হাসানকে নিয়ে মাঠ ছাড়েন।

পাকিস্তানে ওয়াসিম ২৪ রানে নেন ৩ উইকেট। ২৫ রানে ২ উইকেট নেওয়াজের। একটি করে উইকেট নেন দাহানি, রউফ ও শাদাব।

শুরুতে টসে জিতে আগে ফিল্ডিং নেন অধিনায়ক সোহান। ছিলেন না নিয়মিত অধিনায়ক সাকিব আল হাসান।

প্রথম ওভারে তাসকিন এক রানের বেশি খরচ করেননি। দ্বিতীয় ওভারে নির্বিষ বোলিং করা মোস্তাফিজ দেন ১০ রান। হাসানের করা তৃতীয় ওভার থেকেও ১০ রান আসে।

চতুর্থ ওভারে নাসুমকে আক্রমণে আনেন সোহান। ওভারের দ্বিতীয় বলে ডাউন দ্য উইকেটে মিড অফের উপর দিয়ে টুর্নামেন্টের প্রথম ছক্কাটি মারেন রিজওয়ান। একই ওভারের পঞ্চম বলে একেবারে সহজ রান আউট হওয়া থেকে বেঁচে যান।

অধিনায়ক বাবর আজম মিড উইকেটে বল ঠেলে দিতেই রানের জন্য ছুট দেন রিজওয়ান। রান নেয়া সম্ভব নয় বুঝে তাকে ফিরিয়ে দেন বাবর। বল ধরার সময় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেন সাব্বির। ১০ রানে থাকা রিজওয়ান পিছলে পড়ে গেলেও ক্রিজ পৌঁছে যান। পাকিস্তানের রান তখন ২৭।

পাওয়ার প্লেতে উইকেট আদায়ে ব্যর্থ হন বাংলাদেশ। ৬ ওভারে পাকিস্তান তোলে ৪৩ রান। ওপেনিং জুটিতে ৫২ রান যোগ করেন বাবর-রিজওয়ান।

মিরাজ অষ্টম ওভারে বল হাতে পান। প্রথম বলেই উইকেট তুলে নেন। ২৫ বলে ৪ চারে ২২ রানে বাবর আউট। সুইপ করতে গিয়ে ব্যাটের কানায় লেগে বল শর্ট ফাইন লেগে উঠে যায়। ফিল্ডার মোস্তাফিজ তালুবন্দি করেন।

পরে আবারও রান আউটের সুযোগ হাতছাড়া করে বাংলাদেশ। মিরাজের করা বল মিডঅফে ঠেলে দিয়েই রানের জন্য ছোটেন শান মাসুদ। লিটন বল হাতেই নিতে পারেননি। ১২ রানে আউট থেকে বেঁচে যান মাসুদ।

১৩তম ওভারে বিদায় নেন মাসুদ। ২২ বলে ৪ চার ও এক ছক্কায় ৩১ রানে ফেরেন। নাসুমের বলে লং অনে শট নিয়েছিলেন। থার্ডম্যানে দ্বিতীয় প্রচেষ্টায় ক্যাচ নেন হাসান। ৬ রান করা হায়দারকে সাজঘরে ফেরান তাসকিন। পুল শটে হায়দার বল সীমানা ছাড়া করতে পারেননি, ইয়াসির ক্যাচ নেন।

পরে নাসুমের করা ওভারের প্রথম বলে এক রান নিয়ে ফিফটি পূর্ণ করেন রিজওয়ান। আন্তর্জাতিক টি-টুয়েন্টিতে সবশেষ ৮ ইনিংসের ৬টিতেই ফিফটি পেলেন।

৮ বলে ২ চারে ১৩ রান করা ইফতিখার পুল করতে গিয়ে ডিপ মিড উইকেটে হাসানের বলে আফিফের ক্যাচে হন। তাসকিনের করা ১৯তম ওভারের পঞ্চম বলে উড়িয়ে মারতে গিয়ে ফিরতি ক্যাচ দেন আসিফ আলী। নেওয়াজ ৫ বলে এক ছক্কায় ৮ রানে অপরাজিত থাকেন।

শেষদিকে আক্রমণাত্মক ব্যাটিং করে রান বাড়ান রিজওয়ান। শেষ ৪ ওভারে পাকিস্তান ৫১ রান তোলে। ওপেনার রিজওয়ান ৫০ বলে ৭ চার ও ২ ছক্কায় ৭৮ রানের অপরাজিত থেকে মাঠ ছাড়েন।

৪ ওভারে ২৫ রানে ২ উইকেট নেন তাসকিন। নাসুম ২২ রানে নেন এক উইকেট। মিরাজ ১২ রানে এক উইকেট পেলেও তাকে দুই ওভারের বেশি করাননি সোহান। এক উইকেট নিয়ে খরুচে থাকেন হাসান, দেন ৪২ রান। ধারহীন মোস্তাফিজ বিলিয়ে দেন ৪৮ রান, পাননি উইকেটের দেখা।