‘ককবরক’ বাংলাদেশের অন্যতম ক্ষুদ্র জাতিসত্তা ত্রিপুরা জনগোষ্ঠীর নিজস্ব ভাষা। ককবরক ভাষায় বঙ্গবন্ধুর আলোচিত জীবনালেখ্য ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ অনুবাদ করেছেন কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১২-১৩ শিক্ষাবর্ষের নৃবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী যুবরাজ দেববর্মা।
‘পাইথাকয়া লাংমা’ এ দুটি ককবরক শব্দ দিয়ে বইটির নামকরণ করা হয়েছে। শব্দ দুটির অর্থ: অসমাপ্ত আত্মজীবনী।
যুবরাজ দেববর্মা বলেন, অনুবাদের কাজটা আমি শুরু করেছি ২০২০ সালের অক্টোবর মাসে। এরপর দেড় থেকে দুই বছরের মত কাজ করেছি আমি এটা নিয়ে। কিন্তু প্রকাশনের সময়টাতে আমি অনেক হতাশ হয়ে পড়ি। বিভিন্ন প্রকাশনীর সাথে যোগাযোগ করেও প্রকাশনের জন্য তেমন কোনো সাড়া পাইনি।
এরপর সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় এবং মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটের মত প্রতিষ্ঠানের সাথেও যোগাযোগ করেছি। এখনও কাজ বাকি আছে। তবে আশা করি খুব শীঘ্রই কাজটা হবে এবং নভেম্বরের মধ্যে মোড়ক উন্মোচনের কাজটাও শেষ করতে পারব।
ত্রিপুরাদের মাতৃভাষা ককবরককে সকলের কাছে পরিচিত করতে অনুবাদের কাজটি করেছেন বলে জানান তিনি। যুবরাজ বলেন, বাংলাদেশে প্রায় আড়াই তিন লাখের মত ককবরক ভাষাভাষী আছে। আমাদের মাতৃভাষা বাংলাদেশে প্রায় বিপন্ন একটা ভাষা। তাই আমাদের এই বিপন্ন মাতৃভাষা নিয়ে কাজ করার ইচ্ছা অনেক আগে থেকেই আমার ছিল। ভার্সিটিতে পড়ার সময়ও আমি বিভিন্ন অনুবাদের কাজ করেছি। ২০১২ সালে অসমাপ্ত আত্মজীবনী প্রকাশের পর থেকেই এটা নিয়ে কাজ করার চিন্তাভাবনা ছিল। এরপর ২০২০ সালে আমি মূল কাজটা করা আরম্ভ করেছি।
যুবরাজের কাজটি সম্পর্কে এখন সবাই জানার পর তিনি আনন্দ প্রকাশ করে বলেন, অনেক শ্রম দিয়েছি এই কাজের পেছনে। এখন আমার কাজটার কথা সবাই জানছে। এটা অবশ্যই আমার কাছে আনন্দের বিষয়। আমাদের মাতৃভাষার মতো বিপন্ন একটা ভাষার জন্য ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ অনেকটা মহাকাব্যের মতো। প্রায় এক লক্ষাধিক শব্দ এখানে। তাই আমাদের মাতৃভাষার জন্য এটা একটা দলিলের মতো থাকবে পরবর্তী প্রজন্মের জন্য।