জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) আইন বিভাগের শিক্ষার্থী ফাইরুজ সাদাফ অবন্তিকার আত্মহত্যার ঘটনার প্রতিবাদে মশাল মিছিল, মোমবাতি প্রজ্বলন ও পারফর্মিং আর্টস করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা। সেই সাথে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে ৬দফা দাবি জানান তারা।
রোববার ১৭ মার্চ রাত সাড়ে আটটার দিকে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যানারে মশাল মিছিল করেন আন্দোলনকারীরা। মিছিলটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতি ও একাত্তরের গণহত্যা’ ভাস্কর্য চত্বর থেকে শুরু করে ক্যাম্পাসের সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদ, কাঁঠালতলা এবং ক্যাম্পাসের বাইরে ভিক্টোরিয়া পার্ক প্রদক্ষিণ করে মূল ফটকে এসে শেষ হয়।
এসময় শিক্ষার্থীরা এই আত্মহত্যায় অভিযুক্তদের বিচারের দাবিতে বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন। পরবর্তীতে মশাল মিছিল শেষে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক অবরোধ করে বিক্ষোভ করতে থাকেন এবং তাদের দাবি উত্থাপন করেন।
শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো হলো: অবিলম্বে তদন্ত করে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অভিযুক্তদের স্থায়ী বহিষ্কার করতে হবে। অভিযুক্তদের সাথে তৎকালীন প্রক্টরিয়াল বডিকে তদন্ত সাপেক্ষে জবাবদিহিতার আওতায় আনতে হবে। পূর্বে ঘটে যাওয়া সব নিপীড়নের বিচার দ্রুততম সময়ের মধ্যে নিশ্চিত করতে হবে। অতি দ্রুততম সময়ে নিরপেক্ষ যৌন নিপীড়ন দমন সেল গঠন করতে হবে এবং প্রতিটি বিভাগে অভিযোগ বক্স স্থাপন করতে হবে। স্পেশালিষ্ট মনরোগ বিশেষজ্ঞ নিয়োগ দিতে হবে। আগামী সাত কার্যদিবসের মধ্যে উপস্থাপিত দাবি বাস্তবায়ন করতে হবে।
মশাল মিছিলের নেতৃত্ব দেয়া তৌফিকুল ইসলাম হৃদয় বলেন, আমরা আমাদের আন্দোলন শনিবারের মতো সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যানারে করছি। আমাদের দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে।
পারফর্মিং আর্টস ও মোমবাতি প্রজ্বলনে অংশ নেয়া আন্দোলনরত শিক্ষার্থী সুমাইয়া সোমা বলেন, আমাদের বিগত দাবিগুলো কিছুটা সফল হয়েছে। আমরা এখন ধারাবাহিক আন্দোলন চালিয়ে যাব।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, শিক্ষার্থীরা শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন করলে আমাদের সমস্যা নেই। তবে অভিযুক্তদের তো আইনশৃংখলা বাহিনী আটক করেছে। আর স্থায়ী বহিষ্কারের ক্ষেত্রে তো একটা প্রক্রিয়া আছে।
এর আগে শুক্রবার রাত ১০টার দিকে জবির আইন বিভাগের ১৩তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ফাইরুজ অবন্তিকা ফেসবুকে শিক্ষক ও সহপাঠীকে দায়ী করে পোস্ট দেন। এর কিছুক্ষণ পরই কুমিল্লার নিজ বাড়িতে গলায় ফাঁস নেন ওই ছাত্রী। আত্মীয় ও পরিবারের সদস্যরা তাকে উদ্ধার করে কুমিল্লা সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। ওই শিক্ষার্থীর পোস্ট করা সুইসাইড নোটে সহপাঠী আম্মান সিদ্দিকীর বিরুদ্ধে হয়রানি, হুমকিসহ নানা অভিযোগ তুলেছেন। আর সহকারী প্রক্টর দ্বীন ইসলামের বিরুদ্ধে অফিসে ডেকে নিয়ে হয়রানি ও মানহানির অভিযোগ তুলেছেন। তাছাড়া যৌন হয়রানিমূলক কমেন্ট’ করারও অভিযোগ তুলেছেন ওই ছাত্রী।