দেখতে সোনা না হলেও দাম সোনার কাছাকাছি। ভারতে দেড় লাখ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে বিশ্ব বিখ্যাত মশলা জাফরান।
এই জাফরানকে ‘লাল সোনা’ বলা হয়ে থাকে। কেউ কেউ একে ‘সোনার মশলা’ বলেও উল্লেখ করেন। ভারতের দুর্গম পাহাড়ি অঞ্চল জাফরানের উৎপাদন ভূমি। কাশ্মীরের প্যামপোর শহরকে ‘জাফরানের শহর’ বলা হয়ে থাকে। মূলত সেখানেই জাফরান উৎপাদনকারী গাছের চাষ হয়।
এক কেজি জাফরান পেতে দুই থেকে তিন লক্ষটি ক্রোকাস ফুল লাগে। উৎপাদন প্রক্রিয়াও বেশ জটিল। সারা বছর ফুল মেলে না। তাই নানা কারণে জাফরানের দাম বেড়ে গিয়েছে। ক্রোকাস গাছ থেকে জাফরান পাওয়া যায়। এই গাছে বেগুনি রঙের যে ফুল ফোটে, তার গর্ভদণ্ডগুলোই জাফরান।
জাফরানে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে যা স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। এ ছাড়া জাফরানের ক্রোসিন আর ক্রোসেটিন নামক দুই অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট ওজন কমাতে সাহায্য করে, মানসিক অবসাদও কমায় এবং নিয়ন্ত্রণে রাখে রক্তে শর্করার পরিমাণ।
সম্প্রতি কাশ্মীরে জাফরানের উৎপাদন কমে এসেছে। ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, আগে একটি মৌসুমে তিন থেকে পাঁচ বার গাছে ফুল ধরত, তখন তা থেকে অনেক জাফরান পাওয়া যেত। কিন্তু এখন মৌসুমে মাত্র দুই থেকে তিন বার ফুল ফোটে। আবহাওয়ার পরিবর্তনকেই উৎপাদন কমে যাওয়ার জন্য দায়ী করছেন ব্যবসায়ীরা। অনিয়ন্ত্রিত বৃষ্টি, অসময়ে বৃষ্টি এবং অত্যধিক গরম এই উৎপাদনের পথে প্রধান প্রতিবন্ধক হয়ে দাঁড়িয়েছে।
পরিবেশ বিজ্ঞানীদের মতে, কাশ্মীরে বৃষ্টি এবং তুষারপাতের ধরন বদলেছে। গত ১০ বছরে যে পরিমাণে তুষারপাত বা বৃষ্টি হত, এখন তা হয় না যা জাফরান ব্যবসাকে প্রভাবিত করেছে। নাগরিক সভ্যতার বিকাশও জাফরান উৎপাদন হ্রাসের জন্য দায়ী।