সাহস থাকলে তারেক রহমানকে দেশে আসার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রী বলেন, চোরাগোপ্তা হামলা চালিয়ে সরকার হটানো যায় না। বিএনপি অবরোধের নাম করে বিভিন্ন জায়গায় হামলা চালিয়ে মানুষকে আহত করছে। পুলিশ ও সাংবাদিকের ওপর হামলা করছে। বিএনপির এমন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড আমরা যুগ যুগ ধরে দেখে আসছি।
প্রধানমন্ত্রী আজ রোববার ১২ নভেম্বর বিকেলে নরসিংদীর মোসলেহ উদ্দিন ভূঁইয়া স্টেডিয়ামে জেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত এক মহাসমাবেশে প্রধান অতিথির ভাষণে একথা বলেন। সমাবেশ শুরুর আগে নরসিংদীবাসীর জন্য উপহার উল্লেখ করে ১০টি উন্নয়ন প্রকল্পেরও উদ্বোধন করেন তিনি।
শেখ হাসিনা বলেছেন, ছেলে-মেয়েদের পরীক্ষা বন্ধ করা ছাড়া বিএনপি-জামায়াত এই অবরোধ করে আর কী করতে পারবে? সরকার হটাবে! কীভাবে হটাবে? এই চোরাগুপ্তা হামলা করে সরকার হটানো যায় না। মানুষ সাথে না থাকলে আন্দোলন হয় না।
তিনি বলেন, তার সরকার সাক্ষরতার হার ৪৪ ভাগ থেকে ৭৬ দশমিক ৬ ভাগে উন্নীত করেছে। খালেদা জিয়াসহ জিয়া পরিবারের ব্যক্তিগত শিক্ষা-দীক্ষার ইতিবৃত্ত তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ওরা চায় না যে মানুষ শিক্ষিত হোক। ওরা চায় না আমাদের ছেলে-মেযেরা লেখাপড়া শিখুক। তাই আজকে এই নভেম্বর মাস, সামনে ইলেকশন। আগেভাগে শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা সম্পন্ন হবে। সে ব্যবস্থা যখন নেওয়া হচ্ছে তখন বিএনপি দিচ্ছে অবরোধ, হরতাল আর পুড়িয়ে মানুষ হত্যা করছে। সামনে আসার সাহস নাই। অলি-গলি থেকে বের হয়ে বাসের ভেতর, স্কুটারে, অ্যাম্বুলেন্সে আগুন দিচ্ছে। রোগীবাহী অ্যাম্বুলেন্সে হামলা করছে।
পুলিশের ওপর হামলা ও পিটিয়ে পুলিশ হত্যা, সাংবাদিকদের ওপর হামলা ও নির্যাতন, প্রধান বিচারপতির বাসভবনে হামলা এবং পুলিশ হাসপাতালে হামলা ও অগ্নিসংযোগকে তিনি মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন বলে উল্লেখ করেন।
তিনি বলেন, এই বিএনপি’র সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড আপনারা যুগ যুগ ধরে দেখেছেন, কীভাবে মানুষের ওপর তারা অত্যাচার করে। ২০১৩ ও ১৪ সালে করেছে নির্বাচন বানচালের জন্য। এখন আবার একই উদ্দেশ্য নিয়ে মাঠে নেমেছে। মানুষজন, হাট-বাজার, দোকানপাট, যানবাহন, ব্যক্তিগত সম্পত্তি কোনকিছুই রেহাই পাচ্ছে না। তিনি অগ্নিসন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধ গড়ার আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করে বলেন, এ অগ্নিসন্ত্রাসী যাকে যেখানে পাবেন তাকে আগে ধরেন। কেউ যদি অগ্নিসন্ত্রাস করতে যায়, বাসে আগুন দিতে যায় ঐগুলোকে ধরে ঐ আগুনেই ফেলে দেবেন। তাহলে যদি ওদের শিক্ষা হয়, তাছাড়া ওদের শিক্ষা হবে না।
তিনি আরও বলেন, বিএনপি হচ্ছে একটি সন্ত্রাসী দল আর জামায়াত হচ্ছে যুদ্ধাপরাদীদের দল। তাদের কথা এদেশের মানুষ শোনে না। তিনি বলেন, দলের চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া এতিমের অর্থ আত্মসাতের মামলায় সাজাপ্রাপ্ত হয়ে জেলে। যাকে তিনি পরিবারের অনুরোধের প্রেক্ষিতে দয়া করে নিজস্ব ক্ষমতাবলে বাড়িতে থেকে চিকিৎসার অনুমতি দিয়েছেন। আর ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপার্সন তারেক জিয়া ১০ ট্রাক অস্ত্র মামলা, ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলা মামলা এবং মানি লন্ডারিং মামলায় সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামী। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় আর রাজনীতি করবে না বলে মুচলেকা দিয়ে দেশ ছেড়ে পালিয়েছে।
সভায় আরও বক্তব্য রাখেন কৃষিমন্ত্রী ড. মুহাম্মদ আবদুর রাজ্জাক, শিল্পমন্ত্রী নুরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুন, আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ড. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, জাহাঙ্গীর কবির নানক ও আবদুর রহমান প্রমুখ। নরসিংদী জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জিএম তালেব হোসেনের সভাপতিত্বে সভা সঞ্চালনা করেন সাধারণ সম্পাদক পীরজাদা কাজী মোহাম্মদ আলী।