কোভিড পরবর্তী বিশ্ব ব্যবস্থা যে টালমাটাল অবস্থায় ছিল সেখানে রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধ আগুনে ঘি ঢেলেছে। সারা পৃথিবীতে অর্থনৈতিক অবস্থা অত্যন্ত নাজুক অবস্থায় আছে। বিশেষ করে জ্বালালি তেল ও গ্যাসের প্রধান উৎস রাশিয়ার ওপর নানা নিষেধাজ্ঞা জারির কারণে দুনিয়াব্যাপী গ্যাস তেলের সংকট প্রকট হয়েছে। এই ধাক্কা লেগেছে আমাদের দেশেও। নানা রকম অর্থনৈতিক সংকটে থাকা বাংলাদেশে এখন দ্রব্যমূল্যের চাপে চরম সংকটে পড়েছে। সরকারকে বাধ্য হয়ে জ্বালানি তেল ও গ্যাসের দাম বাড়াতে হচ্ছে আবার তার প্রতিক্রিয়া অন্যান্য নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের দামও বাড়ছে। এতে করে জনজীবন ক্রমশ দুর্বিষহ হয়ে উঠছে। সাধারণ মানুষের এখন নাভিশ্বাস অবস্থা। সর্বশেষ বাড়ল এলপিজি গ্যাসের দাম।
এখন ১২ কেজির সিলিন্ডারের এলপিজি কিনতে ১ হাজার ২৩৫ টাকা লাগবে। এতদিন ছিল ১ হাজার ২১৯ টাকা। সে হিসাবে ১২ কেজি এলপিজির দাম বাড়ল ১৬ টাকা। আজ বুধবার বেলা ১টা থেকে এ দাম কার্যকর হয়। এর আগের মাসে ১২ কেজিতে ৩৫ টাকা কমেছিল। বুধবার সকালে এলপিজির নতুন দাম ঘোষণা করেছেন বিইআরসির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আ ব ম ফারুক। গত বছরের ১২ এপ্রিল দেশে প্রথমবারের মতো এলপিজির দাম নির্ধারণ করে বিইআরসি। এরপর থেকে প্রতি মাসে দাম সমন্বয় করা হচ্ছে। আ ব ম ফারুক বলেন: সরকারের বিভিন্ন প্রশাসনিক কাঠামোর মাধ্যমে কমিশন নিয়মিত বাজার তদারকি করছে। ভোক্তারা সহনীয় দামে এলপিজি পাচ্ছেন বলেই কমিশন মনে করে। আমদানির ক্ষেত্রে ডলারের বিনিময় হার ১০৪ টাকা ধরে মূল্য সমন্বয় করা হয়েছে বলেও জানান তিনি। এলপিজি তৈরির মূল উপাদান প্রোপেন ও বিউটেন বিভিন্ন দেশ থেকে আমদানি করা হয়। প্রতি মাসে এলপিজির এ দুই উপাদানের মূল্য প্রকাশ করে সৌদি আরবের প্রতিষ্ঠান আরামকো।
আমরা আশা করি সহসা বৈশ্বিক এই সংকট কেটে যাবে। আর যদি বিশ্বব্যাপী এই চরম সংকট অব্যাহত থাকে তবে সরকারকে সতর্কতার সাথে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। জনগণের ওপর মূল্যের বোঝা যতটা কমানো যায় সেই ব্যবস্থা করতে হবে। তার সাথে জনগণের আয় বৃদ্ধির ব্যবস্থা করতে হবে। সরকারি বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের উচিৎ দ্রব্যমূল্যের সাথে তাদের ন্যায্য পারিশ্রমিক সমন্বয় করা। নতুবা আমরা একটি মারাত্মক অর্থনৈতিক সামাজিক ধ্বসের মুখোমুখি হতে পারি।