ব্যাংক অফ ইংল্যান্ডের শীর্ষ অর্থনীতিবিদ হু পিল বলেছেন, যুক্তরাজ্যের জনগণকে মেনে নিতে হবে যে, তারা আরও দরিদ্র। অন্যথায় পণ্যের দাম বাড়তেই থাকবে।
বিবিসির এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
হু পিল ‘কলম্বিয়া ল স্কুলে’ দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, এটি মেনে নেওয়া কষ্টকর। তবে আমাদের তাই করতে হবে।
তিনি বলেছেন, উচ্চ বিল এবং অন্যান্য খরচ বৃদ্ধির জন্য শ্রমিকরা তাদের মজুরি বৃদ্ধির আবেদন জানিয়েছিল। যুক্তরাজ্যের মুদ্রাস্ফীতির হার চলতি মার্চ পর্যন্ত ছিল ১০ দশমিক ১ শতাংশ । গত মাসে মুদ্রাস্ফীতির হার যদিও কিছুটা কমেছে তবে এর মানে এই নয় যে দাম কমছে। এর মানে হলো এটি একটু ধীর গতিতে বাড়ছে। এর সাথে মিল না রেখে যদি বেতন বাড়তে থাকে তবে তা মানুষের জন্য আরও খারাপ হবে। লোকেরা বেতন বৃদ্ধির দাবি করে এবং ব্যবসায়িরা দাম বাড়িয়ে চলেছে। এতে করে মুদ্রাস্ফীতি আরও বেড়ে যায়।
![](https://i0.wp.com/www.channelionline.com/wp-content/uploads/2024/02/Channeliadds-Reneta-16-04-2024.gif?fit=300%2C250&ssl=1)
পিল বলেন, যুক্তরাজ্যে যেকোনভাবে কাউকে মেনে নিতে হবে যে তাদের অবস্থা খারাপ হয়ে গেছে এবং দাম বাড়ানোর কারণে তাদের খরচ কমাতে হবে। আমরা এখন যে বিষয়টির মুখোমুখি হচ্ছি তা হল, এই বাস্তবতা মেনে নেওয়ার অনীহা। হ্যাঁ, আমরা সবাই একই অবস্থায় আছি এবং আমাদের সকলকে এতে অংশ নিতে হবে।
এই বিষয়ে ‘আবর্ডন’ এর সিনিয়র ইনভেস্টমেন্ট ডিরেক্টর থমাস মুর বলেন, পিল মুদ্রাস্ফীতি বাড়ানোর ক্ষেত্রে একটি মাত্র দিকে ইঙ্গিত করেছেন, আর তা হলো মজুরি।
মুর বলেন, সমস্যাটি হল মুদ্রাবাদী অর্থনীতিবিদরা বিশ্বাস করেন যে, অর্থ সরবরাহ হলো মুদ্রাস্ফীতির মূল কারণ। তাই এই মুহূর্তে এক বিতর্ক চলছে যে এটিই কি আসলেই একমাত্র কারণ কিনা?
পিল ব্যাংক অফ ইংল্যান্ডের প্রথম কর্মকর্তা নন যিনি মুদ্রাস্ফীতির জন্য মজুরি বৃদ্ধির বিষয়ে সতর্ক করেছিলেন। গত বছর, ব্যাংকের গভর্নর অ্যান্ড্রু বেইলি জনগণকে বেতন বৃদ্ধির জন্য অনুরোধ না করতে এবং ব্যবসায়ীদের পণ্যর দাম না বাড়াতে অনুরোধ করেছিলেন। তবে তার এই মন্তব্যর কারণে বেশ সমালোচনা হয়।
মুর জানান, ব্যাংকের লক্ষ্য ছিল লোকেদের তাদের মজুরির বাড়ানোর দাবিতে লাগাম টেনে ধরা কারণ তারা মনে করছে মুদ্রাস্ফীতির প্রধান কারণ হলো মজুরি।
যুক্তরাজ্যে মুদ্রাস্ফীতি কিছু সময়ের জন্য ব্যাংক অফ ইংল্যান্ডের ২ শতাংশের লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও বেশি হয়ে গিয়েছিল। ব্যাংকের কাজের অংশ হলো মুদ্রাস্ফীতিকে তার লক্ষ্যমাত্রার হারে রাখা। মূল্যবৃদ্ধির কারণে ব্যাংক তাদের সুদের হারও বাড়িয়ে দেয়।
এই পদক্ষেপটি লোকেদের খরচ কমাতে উৎসাহী করে তুলে যাতে করে পণ্যের চাহিদা কমে যায় এবং দাম বৃদ্ধির হারও কমে যায়। ক্রমবর্ধমান জ্বালানি বিল এবং খাদ্যর দাম বাড়ার কারণে পরিবারগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। অনেক শ্রমিক এই খরচের সাথে তাল মেলাতে বেতন বৃদ্ধির জন্য অনুরোধ করছেন।