কিশোরগঞ্জের ভৈরব থেকে প্রবাসীর স্ত্রীসহ সাড়ে ৩ বছর বয়সী শিশু সন্তানের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করছে পুলিশ। সোমবার (১৫ মে) উপজেলার শিবপুর ইউনিয়নের শম্ভুপুর পাক্কার মাথা এলাকায় বেলা ১১টার দিকে ঘটনা ঘটেছে।
নিহত জোনাকি আক্তার (৩৫) একই এলাকার ইটালি প্রবাসী ফরহাদ মিয়ার স্ত্রী শিশু আলিফ তাদের একমাত্র পুত্র সন্তান।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, সকালে ঘরের দরজা না খোলায় সন্দেহ হয় প্রতিবেশীদের। পরে দরজা ভেঙ্গে দেখে এক রশিতে শিশু সন্তান ও অন্য রশিতে তার মা ঝুলছে। এসময় স্বজনরা তাদেরকে ভৈরব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেের জরুরি বিভাগের নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক দু’জনকে মৃত ঘোষণা করে। খবর পেয়ে পুলিশ দু’জনের মরদেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য কিশোরগঞ্জ ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠান।
জানা যায়, প্রায় ৬ বছর আগে পারিবারিকভাবে উপজেলার কালিকাপ্রসাদ গ্রামের রইছ বাবুর্চির মেয়ে জোনাকি আক্তারকে শিবপুর ইউনিয়নের শম্ভুপুর পাক্কার মাথা এলাকার ইতালি প্রবাসী ফারুক মিয়া ছেলে ফরহাদ মিয়ার সঙ্গে বিয়ে হয়। বিয়ের প্রথম প্রথম ভালো চললেও কিছুদিন পর থেকেই সংসারে কলহ শুরু হয়।
জোনাকির স্বজনদের দাবি, শাশুড়ি বেবী বেগম বিভিন্ন সময় জোনাকি আক্তারকে গরিব পরিবারের মেয়ে বলে উপহাস করতো। এছাড়া বাবার বাড়ি থেকে যৌতুক আনতে শারীরিক-মানুষিক নির্যাতন করে আসছিল।
জোনাকির স্বজনরা জানায়, প্রথম দিকে স্বামী ফরহাদ মিয়া স্ত্রী জোনাকি আক্তারের কথা শুনলেও পরে মায়ের কথায় বেশি সায় দেন। ফলে জোনাকিকে বাবার বাড়ি থেকে যৌতুক আনতে শারিরিক ও মানুষিক নির্যাতন করে আসছিল তারা। এ কারণে দুঃশ্চিন্তায় ও যন্ত্রণায় ভুগছিল জোনাকি। এছাড়াও বিয়ের পর জোনাকির পরিবারের লোকজন জানতে পারে ফরহাদ আগেও একটি বিয়ে করেছিল। শাশুড়ির অত্যাচারে সেই স্ত্রীও সংসার ছেড়ে চলে যায়।
স্বজনরা আরও জানায়, গতকাল রাতেও মোবাইলে ফোনে শাশুড়ির নির্যাতনের বিষয়টি জানিয়েছিল জোনাকি। এমনকি সন্তানসহ তাকে মেরে ফেলার হুমকি দেয় বলেও জানায় সে। তাদের ধারণা শাশুড়ি ও তার পরিবারের সদস্যরা তাদেরকে মেরে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে পালিয়ে গেছে।
ভৈরব থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. শাহ আলম মোল্লা ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, প্রাথমিক তদন্তে ঘটনাটি আত্মহত্যার ঘটনা বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে ঘটনার পর থেকে শাশুড়ি ও তার পরিবারের সদস্যরা পলাতক রয়েছে। লিখিত অভিযোগে ভিত্তিতে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।