রাকিবুল হাসান সেখ। পিরোজপুর সদর উপজেলার চালনা নামাজপুর গ্রামের আ. মালেক সেখের ছেলে। ৩০ বছরের এই যুবক নিজ এবং পরিবারের ভাগ্য উন্নয়নের জন্য প্রায় এক বছর আগে পাড়ি জমান ওমানে। সেখানে একটি চাকরিও শুরু করেন। গত ৬ এপ্রিল ওমানে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হন রাকিবুল।
তবে রাকিবুলের নাম করে লাশ বাংলাদেশে এলেও সেটি রাকিবুলের নয় বলে দাবি করছেন তার স্বজনরা। পরে অবশ্য লাশের খোঁজ পাওয়া যায়। দুটি লাশের কফিন একসঙ্গে আসায় লাশের কফিনে লেখা নাম পাল্টে যাওয়ায় পিরোজপুরের রাকিবুলের লাশটি কুমিল্লায় চলে গিয়েছিল এবং কুমিল্লার মো. জুয়েল নামের অন্য একজনের লাশের কফিন পিরোজপুরে আসে।
জানা গেছে, ওমানে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হওয়ার পর সেখানকার কর্তৃপক্ষ বাংলাদেশের দূতাবাসের মাধ্যমে দুটি লাশ বাংলাদেশে পাঠায়। লাশের কফিনে একটিতে পিরোজপুরের রাবিকুল হাসান এবং তার পাসপোর্ট নাম্বার লেখা ছিল। অন্য কফিনে কুমিল্লা জেলার মেঘনা উপজেলার মো. জুয়েল নামের অন্য একজনের নাম ও পাসপোর্ট নাম্বার লেখা ছিল। মো. জুয়েলও সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যান রাকিবুলের সাথে। মঙ্গলবার (১৮ এপ্রিল) রাতে ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে একটি ফ্লাইটে রাকিবুল ও জুয়েলের লাশ দুটির কফিন বাংলাদেশে পৌঁছে। মঙ্গলবার রাতে বিমান বন্দর থেকে রাকিবুলের লাশের কফিন গ্রহণ করেন তার ভাই ইমরুল হাসান এবং মো. জুয়েলের লাশ গ্রহণ করে তার স্বজনরা। এসময় বিমানবন্দরে জুয়েলের এক স্বজনের সাথে রাকিবুলের ভাই ইমরুলের পরিচয় হয়। তখন জুয়েলের ওই স্বজনের মোবাইল নম্বর নিয়ে নেন ইমরুল।
আজ বুধবার সকালে রাকিবুলের লাশ নিয়ে পিরোজপুরের বাড়িতে পৌঁছান ইমরুল। রাকিবুলের লাশ বাড়িতে নেওয়ার পরে বুধবার সকাল ৯টার দিকে জানাজার আগে কফিন খুলে দেখেন কফিনে থাকা লাশ রাকিবুলের নয়। রাকিবুল লাশের বদলে অন্য এক ব্যক্তির লাশ এসেছে। এসময় মৃত রাকিবুলের ভাই ইমরুল হাসান কুমিল্লায় যাওয়া জুয়েলের স্বজনের সাথে মোবাইলে যোগাযোগ করেন। তখন মৃত জুয়েলের স্বজন জানান, কফিনে তারাও জুয়েলের লাশের বদলে অন্য লাশ পেয়েছেন। এরপর দুই পরিবারের সদস্যরা লাশ নিয়ে রওনা দেন। বুধবার দুপুর ২টার দিকে ফরিদপুরের ভাঙ্গা এলাকায় লাশ দুটি বদল করেন তারা এবং রকিবুলের লাশ নিয়ে পিরোজপুরে ফিরে আসেন তার স্বজনরা।
রাকিবুলের ভাই ইমরুল হাসান জানান, লাশের কফিনে নাম ও পাসপোর্ট নাম্বারের স্টিকার বদল হয়ে যাওয়াতেই এমন ঘটনা ঘটেছে। তবে নিহত জুয়েলের স্বজনের ফোন নাম্বার রেখে দেওয়ায় সহজেই সমস্যার সমাধান হয়েছে এবং ভাইয়ের লাশটি পাওয়া গেছে।
তিনি আরও জানান, বুধবার সন্ধ্যার আগে রাকিবুলের জানাজা সম্পন্ন হয়েছে এবং পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়েছে।