
এজবাস্টন সাক্ষী হল রেকর্ডের। বদলে যাওয়া এক ইংল্যান্ড টেস্ট দলকে দেখল গুটা বিশ্ব। যারা ম্যাককালাম-বেন স্টোকসের অধীনে নির্ভয়, লক্ষ্যে অবিচল, অপ্রতিরোধ্য এক দল। ভারতের বিপক্ষে নিজেদের ইতিহাসে রেকর্ড ৩৭৮ রান তারা করে ৭ উইকেটে জয় তুলেছে। এভাবেও যে টেস্ট ক্রিকেট খেলা যায় সবশেষ চার ম্যাচে দেখিয়েছে দলটি। দারুণ জয়ের পর টেস্ট ক্রিকেটকে নতুন করে লেখার কথা জানিয়েছেন ইংলিশ অধিনায়ক।
টানা ১৭ ম্যাচ জয়ের মুখ না দেখা জো রুটের দলটি হঠাৎই বদলে যায় বেন স্টোকসের অধীনে এসে। যেই দলের মূল কাণ্ডারি জনি বেয়ারস্টো। মাঠে নেমেই রানের ফোয়ারা ছুটাচ্ছেন। লিখছেন মহাকাব্য। শিখাচ্ছেন টেস্টে এভাবেও ব্যাট চালানো যায়। তার ব্যাটে চেপেই সবশেষ চার ম্যাচেই চতুর্থ ইনিংসে ২৫০ বেশি রান তারা করে জিতেছে দলটি। ভারতের বিশাল সংগ্রহেও তাই ভয় পায় না বেয়ারস্টো। অকপটে বলতে পারে ভারত যতই টার্গেট দিক আমরা সেটা চেজ করব।
ইতিহাস গড়ে ম্যাচ জয়ের পর বদলে যাওয়া ইংল্যান্ড দলের গল্প শুনিয়েছেন দলপতি স্টোকস।
‘এই মুহূর্তে বাকি দলগুলো আমাদের নিয়ে ভাববে। তৃতীয় ইনিংসটি এখন চতুর্থ ইনিংসে পরিণত হয়েছে, কারণ তাদের মনোযোগ দিতে হবে আমরা কীভাবে খেলব এবং তারা এটা নিয়ে চিন্তিত। দল হিসাবে সেই অবস্থানে থাকা, ইনিংস শেষ করার আগেই বাকি দলগুলোর ভয় পাওয়া একটি অবিশ্বাস্য অর্জন। দলগুলো জানে না কিভাবে তৃতীয় ইনিংস খেলতে হয়, বিশেষ করে যখন তারা লিড পায়।’

রুটের অধীনে ১৭ ম্যাচে জয়হীন ইংল্যান্ড আইসিসি বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপে সবার নীচে নেমে গিয়েছিল। সেই ইংল্যান্ড সবশেষ চার ম্যাচেই জয় তুলেছে রান তারা করে। ওঠে এসেছে টেবিলের সপ্তম স্থানে। স্টোকস জানিয়েছেন নতুন করে টেস্ট ক্রিকেট লিখতে চান তারা।
‘বিশেষ করে ইংল্যান্ডে টেস্ট ক্রিকেট কীভাবে খেলা হচ্ছে তা আমরা নতুন করে লেখার চেষ্টা করছি। গত চার-পাঁচ সপ্তাহ ধরে বিভিন্ন পরিকল্পনা করেছি, ভিন্ন পরিস্থিতিতেও আমরা এগিয়ে যেতে চাই। আমরা কীভাবে উইকেট নিতে যাচ্ছি? বোলিং আপনাকে অবশ্যই ১০ উইকেট নিতে হবে।’
ভারত ও সাউথ আফ্রিকার বিপক্ষে তিনটি টি-টুয়েন্টি এবং তিনটি ওয়ানডে ম্যাচ শেষে প্রোটিয়াদের বিপক্ষে তিনটি টেস্ট ম্যাচ খেলবে বেন স্টোকসের দল। সেখানেও এই ধারা বজায় রেখে আগামী প্রজন্মের ক্রিকেটারদের নতুন টেস্ট ক্রিকেটের সাথে পরিচয় করিয়ে দিতে চান স্টোকস।
‘টেস্ট ক্রিকেটকে আমরা নতুন জীবন দিতে চাই, আমরা যেভাবে এগিয়ে যাচ্ছি এবং গত পাঁচ সপ্তাহে যেই সমর্থন পেয়েছি তা অবিশ্বাস্য। এটা আশ্চর্যজনক, এত অল্প সময়ের মধ্যে আমরা খেলাটিতে নতুন সমর্থকদের আগ্রহ সৃষ্টি করতে পেরেছি। পরবর্তী প্রজন্মকে অনুপ্রাণিত করতে চাই আমরা। এই মুহূর্তে ফলাফলের চেয়ে বড়, আগামীর ইংল্যান্ড প্রতিনিধিদের নতুন এই টেস্ট ক্রিকেটের সাথে পরিচয় করিয়ে দেওয়া। যারা ভবিষ্যতে এই ড্রেসিংরুমে আসবে আমরা তাদের জন্য টেস্ট ক্রিকেটের আধুনিক এই ছাপ রেখে যেতে চাই।’