কাগিসো রাবাদা ও নান্দ্রে বার্গারের বোলিং তোপে সেঞ্চুরিয়নে প্রথম ইনিংসে ২৪৫ রানে গুটিয়ে যায় ভারত। স্রোতের বিপরীতে দাঁড়িয়ে সফরকারীদের হয়ে লড়েছেন লোকেশ রাহুল। উইকেটরক্ষক-ব্যাটার উপহার দিয়েছেন আলো ছড়ানো এক সেঞ্চুরি। যাকে ভারতীয় টেস্ট ইতিহাসে অন্যতম সেরা বলে দিয়েছেন সাবেক অধিনায়ক সুনীল গাভাস্কার। অনলাইনে কয়েকমাস আগেও এই রাহুলই হেনস্তার শিকার হয়েছিলেন।
বক্সিং ডে টেস্টের প্রথমদিনে ৭০ রানে অপরাজিত থাকা রাহুল দ্বিতীয় সকালে নেমে সেঞ্চুরি করতে খেলেন আরও ২৮ বল। জেরাল্ড কোয়েটজিকে ছক্কা হাঁকিয়ে তিন অঙ্কের ম্যাজিক ফিগারে পৌঁছান। ৩১ বর্ষী ক্রিকেটার ১৩৭ বলে ১৪ চার ও ৪ ছক্কায় ১০১ রানের নান্দনিক ইনিংস খেলেন।
অসাধারণ সেঞ্চুরির পর অতীতের তিক্ত অভিজ্ঞতা নিয়ে মুখ খুলেছেন রাহুল। অনলাইনে তাকে হেনস্তার সঙ্গে সংগ্রাম করে নিজেকে বদলে ফেলার বিষয়টি সবিস্তারে জানিয়েছেন।
‘এমন ঘটনার মুখোমুখি হওয়া স্পষ্টতই কঠিন। আপনার নিজস্ব ব্যক্তিত্ব ও বৈশিষ্ট্য রয়েছে। যখন আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলেন, সবসময়ই চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হন। একজন ব্যক্তি এবং ক্রিকেটার হিসেবে প্রতিদিন প্রতি মুহূর্তে চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হন।’
‘সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম একটি চাপ তৈরি করে। আজ শতক হাঁকিয়েছি, তাই লোকে গুণগান গাইছে। তিন-চার মাস আগে সবাই আমাকে গালি দিচ্ছিল। এটা খেলারই অংশ।’
‘তবে মোটেও বলবো না যে, বিষয়টা প্রভাবিত করে না। প্রভাবিত করে থাকে। যত তাড়াতাড়ি ব্যাপারটা বুঝতে পারবেন, ততই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম থেকে দূরে থাকা খেলার জন্য এবং মানসিকতার জন্য ভালো হবে।’
রাহুলের মতে, হেনস্তাকারীদের উপর প্রতিশোধ নেয়ার কোনো অর্থ ছিল না। কারণ যারা ট্রল করতে চায় তারা নির্বিশেষে কাজটি চালিয়ে যায়। সেক্ষেত্রে পেশাদার হিসেবে পারফর্ম করেই নেতিবাচক মন্তব্যগুলো থেকে দূরে থাকার একমাত্র উপায় ছিল।
‘পারফর্ম করতে কিংবা আরও ভালো মানসিকতায় থাকতে পারেন। যদিও কেউই এতটা দক্ষ নয় যে, সমালোচনাগুলো সম্পূর্ণরূপে এড়াতে পারে। বাজে সমালোচনা প্রতিটি ব্যক্তিকে প্রভাবিত করে। কেউ যদি বলে যে এটা তাদের মোটেও প্রভাবিত করে না, আমি নিশ্চিত তিনি মিথ্যা বলছেন। প্রত্যেক ব্যক্তিকে তাদের এসব থেকে বের হওয়ার পথ খুঁজে বের করতে হবে।’
‘যখন বাজে মন্তব্যে বিদ্ধ হয়েছিলাম এবং লম্বা সময় খেলা থেকে দূরে ছিলাম, তখন নিজেকে নিয়ে কাজ করেছি। নিজস্ব সত্ত্বায় ফেরার চেষ্টা করেছি। সমালোচনায় নিজেকে পরিবর্তন না করা নিয়ে কাজ করেছি। এতকিছু ঘটলে নিজের ব্যক্তিত্বের প্রতি অটল থাকা সবচেয়ে কঠিন কাজ। তবে জীবনের অন্য যেকোনো কিছুর মতো ক্রিকেটেও এটি নিয়ে কাজ করার উপায় আছে। এমন কিছু লোক আছে যারা আপনাকে সাহায্য করতে পারেন, যদি আপনার মনের দুয়ার খোলা থাকে। যখন খেলার বাইরে ছিলাম, তখন সেটাই করেছি। নিজেকে নিয়ে কাজ করেছি এবং তারপর শান্ত থাকার জন্য মাথা ঠিক রাখার কাজ করেছি।’