মুক্তিপণের দাবিতে কক্সবাজার টেকনাফে দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্র মোহাম্মদ হোছাইন সূর্য (৮) নামের এক স্কুলছাত্রকে দুর্বৃত্তরা অপহরণ করেছে বলে অভিযোগ স্বজনদের। তাদের অভিযোগ অপহরণকারীরা মোবাইল ফোনে ওই স্কুলছাত্রকে ছেড়ে দিতে ৩০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করেছে।
রোববার ৪ জুন দুপুরে টেকনাফ উপজেলার হ্নীলা ইউনিয়নের লেদা এলাকায় এ ঘটনা ঘটেছে।
অপহৃত মোহাম্মদ হোছাইন সূর্য টেকনাফ উপজেলার হ্নীলা ইউনিয়নের লেদা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্র। সে টেকনাফের লেদা এলাকার সোলতান আহমেদের ছেলে।
সোলতান আহমেদ বলেন, রোববার সকালে বাড়ি থেকে অন্য সহপাঠিদের সঙ্গে স্কুলে যায় মোহাম্মদ হোছাইন। দুপুরে স্কুল ছুটির পর অন্য সহপাঠিরা বাড়ি ফিরলেও সে ফিরেনি। পরে স্বজনরা বিভিন্ন জায়গায় খোঁজ নিয়েও তার সন্ধান পাননি। রাতে সূর্যকে সন্ধানের এক পর্যায়ে অজ্ঞাত দুর্বৃত্তরা মোবাইল ফোনে আমাকে জানায়, তাকে অপহরণ করা হয়েছে। তাকে ছেড়ে দিতে দুর্বৃত্তরা ৩০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। মুক্তিপণ না দিলে আমার ছেলেকে জ্যান্ত পুড়িয়ে মারার হুমকিও দেওয়া হয়।’
পরে এ বিষয়টি পুলিশসহ আইন শৃংখলা বাহিনীর সংশ্লিষ্টদের কাছে অবহিত করা হয়েছে বলে জানান সোলতান আহমেদ।
টেকনাফ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আব্দুল হালিম বলেন, রোববার রাতে ভূক্তভোগী স্কুলছাত্রের বাবা তার ছেলে নিখোঁজ দাবি করে সাধারণ ডায়েরি করেন। এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। তবে অপহৃতকে ছেড়ে দিতে মুক্তিপণ দাবির ব্যাপারে স্বজনদের কাছ থেকে আজ সোমবার বিকাল ৩ টা পর্যন্ত কোন ধরণের অভিযোগ পাইনি।
গত আট মাসে টেকনাফে ৭০ জন ব্যক্তি অপহরণের ঘটনা ঘটে। যেখানে গত ২৮ এপ্রিল পাত্রী দেখতে গিয়ে অপহরণের শিকার হন কক্সবাজার চৌফলদন্ডী উত্তরপাড়ার মোহাম্মদ আলমের ছেলে জমির হোসেন রুবেল, তার দুই বন্ধু ঈদগাঁও উপজেলার জালালাবাদ সওদাগর পাড়া এলাকার মোহাম্মদ ইউছুপ ও কক্সবাজার শহরের নুনিয়াছড়া এলাকার ইমরান অপহরণ হন। গত ২৪ মে টেকনাফ পাহাড়ি এলাকায় অভিযান চালিয়ে গলিত মরদেহ ৩ টি উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় দায়ের করা মামলায় ৪ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, যারা এখন পুলিশ রিমান্ডে রয়েছে। এর মধ্যে গত শুক্রবার লেদা রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে পাঁচজনকে অপহরণ করা হয়। গত শনিবার রাতে এক যুবকের হাতের কব্জি কেটে বিচ্ছিন্ন করে ফেলে ওই হাতসহ তাকে ফেরত পাঠায়। অপর ৪ জনের কাছে ২০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে আসছে অপহরণকারীরা।