টেস্ট ও টি-টুয়েন্টি সিরিজে খেললেও ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে ওয়ানডে খেলেননি অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান। হজ পালনের জন্য পুরো সফরেই ছুটিতে ছিলেন মি. ডিপেন্ডেবল মুশফিকুর রহিম। তাদের জায়গার সুযোগ পাওয়া ক্রিকেটারদের নিজেদের প্রমাণের সুযোগটা বেশ ভালোভাবেই এসেছিল।
প্রথম দুই ম্যাচে ব্যাট করারই সুযোগ পাননি মোসাদ্দেক হোসেন। তৃতীয় ম্যাচে ইনিংসটাকে টেনে নিতে পারেননি। ১৪ রানেই থামে তার ইনিংস। বলহাতে কার্যকারিতা প্রমাণ করতে পারলেও ব্যাট হাতে কেবল একবার সুযোগ পেলেও মোসাদ্দেক তা কাজে লাগাতে ব্যর্থ।
ওয়ানডে দলে নিয়মিত হয়ে ওঠা আফিফ হোসেনও এবার করেছেন হতাশ। প্রথম ম্যাচে করেন ৯ রান। শেষ ওয়ানডেতে রানের খাতাই খুলতে পারেননি।
মোসাদ্দেক ও আফিফ ব্যাটিংয়ে ভালো করার সুযোগ হাতছাড়া করেছেন। বিষয়টি নিয়ে তামিম ইকবাল তাই এই দুই ক্রিকেটারকে উদ্দেশ্য করে স্পষ্ট বার্তাই দিলেন। শেষ ম্যাচে তাদের ফিনিশিং করতে না পারাতেও টাইগারদের ওয়ানডে অধিনায়কের কণ্ঠে ঝরেছে হতাশা।
‘আমি অবশ্যই অনেক আনন্দিত হতাম যদি মোসাদ্দেক বা আফিফ খেলাটা শেষ করে আসতো। প্রেস কনফারেন্সে আমি একটা কথা বলেছিলাম, সাকিব-মুশফিক এরা কিন্তু ফিরবে। এবার না হোক পরেরটায় না হোক তারপরের সিরিজে আসবে। যখন ওরা ফিরবে, তখন কিন্তু এখান থেকে দুইজনকে বের হয়ে যেতে হবে।’
‘সবসময় একটা কথা বলি, কিছু খেলোয়াড় হয়তো ৫-৬টা সুযোগ পাবে। কিছু খেলোয়াড় হয়তো দুইটা সুযোগ পাবে। সবাইকে হয়তো সমান সুযোগ দিতে পারবেন না। দুই-তিনটা সুযোগ যখন কেউ পায়, তার সেটা কাজে লাগানো উচিৎ। সাকিব-মুশফিক আমাদের বড় খেলোয়াড়। তারা ফিরলেই নিজেদের জায়গা বুঝে নেবে। এটা তাদের জন্য সুযোগ ছিল। তবে আমি যেটা বলবো, তারা আরও বেশি হতাশ। মোসাদ্দেক-আফিফ কঠোর পরিশ্রম করেছে।’
তবে সুযোগটা ভালোভাবেই কাজে লাগাতে পেরেছেন উইকেটরক্ষক ব্যাটার নুরুল হাসান সোহান। প্রথম ওয়ানডে ম্যাচে ২০ রানে অপরাজিত থেকে প্রয়োজনের সময়ে ফিনিশিং দিয়েই মাঠ ছাড়েন। শেষ খেলায় তো চাপের মুখে মাথা ঠাণ্ডা রেখে ৩২ রান করে অপরাজিত থেকেই ম্যাচ বের করায় অগ্রণী ভূমিকা রেখেছেন। সিরিজে গ্লাভস হাতে তার রয়েছে চারটি ডিসমিসাল। সোহানের পারফরম্যান্স মোটেও নজর এড়ায়নি।
‘আপনারা যদি সোহানের উদাহরণ দেখেন, সে কিন্তু নিজের জায়গা প্রায় পোক্ত করেছে। এরকম সুযোগ যখনই আসে , যতটা কাজে লাগানো সম্ভব হয় নিজের সেরাটা দিয়ে চেষ্টা করা উচিৎ। এরকম সুযোগ সবসময় আসে না।’
সুযোগ কাজে লাগানোর সবচেয়ে বড় বিজ্ঞাপন অবশ্যই তাইজুল ইসলাম। প্রায় ২৮ মাস পর ওয়ানডে খেলতে নামা বাঁহাতি স্পিনার ১০ ওভারে ২ মেইডেন দিয়ে ২৮ রান খরচ করে ৫ উইকেট দেন। ক্যারিয়ারসেরা বোলিংয়ে করে হয়েছেন ম্যাচ সেরা। নাটোরের এই ক্রিকেটারের প্রশংসা তামিম তাই আলাদাভাবেই করলেন।
‘আজকে তাইজুল বড় উদাহরণ। পুরো সফরে সে দলের সঙ্গে থাকলেও একটি ম্যাচও খেলেনি। সে অনুশীলনের সব সেশনেই এসেছিল। অবশেষে যখন সুযোগ পেয়েছে, নিজেকে প্রমাণ করেছে।’
৩ ম্যাচে ৫৮.৫০ গড়ে এক ফিফটিতে ১১৭ রান করে সিরিজ সেরা হয়েছেন তামিম। যদিও তিন ওয়ানডের সবকটিতেই ম্যাচ সেরা হয়েছেন স্পিনাররা। বলা চলে স্পিনাররাই ক্যারিবীয়দের হোয়াইটওয়াশে অনেক বড় ভূমিকা রেখেছেন। তামিমের সেটি স্বীকার করতে বিন্দুমাত্র দ্বিধা ছিল না।
‘হ্যাঁ অবশ্যই। এই সিরিজটাই পুরো স্পিনারদের ছিল। আমরা অবশ্যই তাদের (ওয়েস্ট ইন্ডিজ) চেয়ে ভালো বল করেছি। যার কারণে আজ আমরা এই অবস্থানে আছি। আমরা যাকেই সুযোগ দিয়েছি, তারাই সেরাটা দিয়েছে।’