‘পতাকা নিবেন গো, পতাকা, বুকের রক্তে কেনা লাল সবুজের পতাকা?’ মহান স্বাধীনতার চেতনাকে নতুন প্রজন্মের কাছে ছড়িয়ে দিতে লাল সবুজ পতাকা ফেরি করার এমন উদ্যেগ একদল যুবকের। অফিস -আদালত, আবাসিক-বাণিজ্যিক ভবন, স্কুল-কলেজ ও বিভিন্ন সামাজিক প্রতিষ্ঠানে উড়ানোর উপযোগী এমনকি শিশু-কিশোর-যুবকদের হাতে বহন করা এবং মাথায় মোড়ানোর মতো পতাকা ফেরি করেন তারা।
মহান বিজয় দিবসকে সামনে রেখে গত এক সপ্তাহ ধরে কিশোরগঞ্জ শহর ও শহরতলীর বিভিন্ন এলাকায় বিভিন্ন সাইজের লাল সবুজের জাতীয় পতাকা ফেরি করছেন তারা। ‘পতাকা নিবেন গো, পতাকা, বুকের রক্তে কেনা লাল সবুজের পতাকা?’ কাক ঢাকা ভোর থেকে মধ্য রাত পর্যন্ত শোনা যাচ্ছে, লাল সবুজের পতাকা ফেরি করা দলের এমন হাঁক-ডাক। এ যেনো মহান মুক্তিযুদ্ধ এবং স্বাধীনতার অম্লান চেতনা ফেরির ভ্রাম্যমাণ এক হাট। যেখানে ১০ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ২০০ টাকায় মিলছে পতাকা।
লাল সবুজের এ পতাকা ফেরি করতে মাদারীপুর জেলার শিবচর উপজেলার মীর্জারচর থেকে আসা ৩০ জনের পতাকা ফেরি দলের সদস্য ইস্কান্দার আলী মোল্লার ছেলে সোহেল মিয়া। কিশোরগঞ্জ শহরের নরসুন্দা নদী লেকসিটি পাড়ে পতাকা ফেরির সময় কথা হয় তার সঙ্গে। এ সময় তিনি জানান, তারা ৩০ জনের একটি দল প্রত্যেকে ছোট-বড় অসংখ্য পতাকা, স্টিকার ও ভেন্ড নিয়ে কিশোরগঞ্জ শহরে ফেরি করতে এসেছেন। উঠেছেন শহরের ঐতিহাসিক শহীদী মসজিদের আবাসিক হোটেল মোবারকে। কাক ঢাকা ভোর থেকে তারা এসব নিয়ে বেরিয়ে পড়েন শহর ও শহরতলীর পথে -প্রান্তরে। মধ্য রাতে আবার হোটেলে ফিরে আসেন।
এক প্রশ্নের জবাবে সোহেল জানান, সারা বছর তারা একেকজন একেক রকম ব্যবসা বাণিজ্য করে থাকেন। তবে, বিজয়ের মাসে তারা পতাকা ফেরি করতে ছুটে যান কিশোরগঞ্জসহ বিভিন্ন জেলায়। গত কয়েক বছর ধরে তারা কিশোরগঞ্জে আসছেন। ব্যবসার চেয়ে এসব পতাকা ফেরি করে নতুন প্রজন্মসহ বিভিন্ন বয়সের নারী-পুরুষের মধ্যে মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা জাগ্রত রাখতে তাদের এমন উদ্যেগ। অনেকটা উৎসবের আমেজে পতাকা ফেরি করে তারা মানসিক প্রশান্তি লাভ করে থাকেন বলেও দাবি তার।
এবছর বড় পতাকার চেয়ে শিশুদের মধ্যে ছোট পতাকা বেশি বিক্রি হচ্ছে বলে জানালেন সোহেল। প্রতিদিন ১২০০ থেকে ১৫০০ টাকার পতাকা বিক্রি হয় বলেও জানান তিনি।