ওয়ানডে ক্রিকেটের দিন ফুরিয়ে আসছে—কদিন যাবৎ এমন কিছু কথা আওড়াচ্ছেন সাবেক-বর্তমান হয়ে ক্রিকেট বোদ্ধারা। মারমার কাটকাট টি-টুয়েন্টি ফরম্যাটের অর্থের ঝনঝনানিতে বুদ হয়ে ট্রেন্ট বোল্টের মতো বোলার হারাচ্ছে টেস্ট ক্রিকেটও। ২০ ওভারের খেলাটির দাপটে অন্য দুই ফরম্যাটের যখন এমন অবস্থা, তখন সাদা পোশাকের আভিজাত্যের খেলা বাঁচাতে নেমে গেছেন বেন স্টোকস।
ইংলিশদের টেস্ট অধিনায়ক সম্প্রতি লাল বলের ক্রিকেটে মনোনিবেশ করার জন্য ওয়ানডে থেকে অবসর নিয়েছেন। ওয়ার্ক লোড বিবেচনায় টি-টুয়েন্টি ক্রিকেটেও খেলবেন তিনি। বর্তমান সময়ে টি-টুয়েন্টি ক্রিকেটকে ব্যবসা হিসেবে দেখলেও অভিজ্ঞ ইংলিশ এই অলরাউন্ডার মনে করছেন, এমন হওয়াই প্রয়োজন। তবে স্টোকসের চোখে, সর্বোচ্চ চূড়ায় টেস্ট ক্রিকেটকেই।
ভারতের সাবেক প্রধান কোচ রবি শাস্ত্রী সম্প্রতি টেস্ট ক্রিকেটের ভবিষৎ নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন। ক্ষুদ্র ফরম্যাটের দাপটে সাদা পোশাকের ক্রিকেট থেকেও দলগুলো আগ্রহ হারাবে বলে মনে করছেন তিনি। শাস্ত্রীর মতে, লংগার ভার্সনের এই ফর্ম্যাটে আগামীতে ৫-৬ থেকে ছয়টি দল খেলবে। কথাটির সঙ্গে কিছুটা একমত হলেও টেস্ট ক্রিকেটকে তখনও শীর্ষ অবস্থানেই বসাবেন স্টোকস।
ইংলিশদের সাদা পোশাকের অধিনায়ক বলেছেন, ‘নির্দিষ্ট কিছু সময়ের জন্য (শাস্ত্রীর কথা) মানছি, কিন্তু সব সময়ের জন্য না। ফ্রাঞ্চাইজি ক্রিকেট কিভাবে দাপট দেখাচ্ছে দেখছেন। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে অনেক ফ্রাঞ্চাইজির একাধিক দলও আছে। ভারত, সিপিএল এবং বর্তমানে সাউথ আফ্রিকায়ও একজন লোকের একের অধিক দলও আছে। বলতে পারেন, টি-টুয়েন্টি ক্রিকেট কিছু নির্দিষ্ট লোকের ব্যবস্যার ক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে। কিন্তু খেলাটির জন্য অবশ্যই এটা দারুণ।’
স্টোকসের মতে, ১৫-২০ বছর আগে বর্তমানে ক্রিকেটারদের আর্থিক অবস্থার উন্নতি, পারফর্ম, সুযোগ-সুবিধা সহ অনেক ক্ষেত্রে সাপোর্ট হিসেবে কাজ করছে টি-টুয়েন্টি ক্রিকেটের এই আসরগুলো। তবুও বিশ্বজুড়ে ফ্রাঞ্চাইজি ক্রিকেটে দাপট চললেও যদি কখনও কোনো ফরম্যাটের ক্রিকেট থেমে যায় তাহলে সেটি টেস্ট হবে না বলেও আশাবাদী স্টোকস।
লাল বলের ক্রিকেটকে যে অন্য দুই ফরম্যাটের চেয়ে বেশি পছন্দ করেন স্টোকস, তার উদাহরণ ইতিমধ্যে দিয়ে দিয়েছেন। ৩১ বর্ষী ইংলিশ তারকা এবার নিজেকে দূত হিসেবে পরিচয় করিয়ে দিয়েছেন, ‘এই ফরম্যাটের বড় একজন দূত, ক্রিকেটের চূড়ায় আছে টেস্ট। সবচেয়ে খাঁটি এই সংস্করণ। টি-টুয়েন্টি ক্রিকেটের চেহারা বদলে দিতে থাকলেও টেস্ট ক্রিকেট হারিয়ে যাবে বলে দেখছি না। টেস্ট ক্রিকেট এখন খেলাটির শীর্ষে আছে। আমি জানি, বিশ্বের বড় তারকারাও আমার মতো করেই ভাবছে। আমি মনে করি, সবার দায়িত্ব হচ্ছে এ বার্তা দিয়ে রাখা, টেস্ট ক্রিকেট এখনও মরে যায়নি।’