জিতলেই প্রথম দল হিসেবে সেমিফাইনালের টিকিট কেটে ফেলত নিউজিল্যান্ড। তবে জমজমাট বিশ্বকাপের শেষ চারের নিষ্পত্তি এতো সহজে হচ্ছে না। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ২০ রানে হারায় আরও জটিল হয়ে উঠেছে সমীকরণ। কেন উইলিয়ামসনের দলের সেমিতে যেতে শেষ ম্যাচে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে জয়ের বিকল্প নেই।
মঙ্গলবার ব্রিসবেনে গ্রুপ ১-এর খেলায় টসে জিতে আগে ব্যাট করা ইংল্যান্ড ৬ উইকেটে ১৭৯ রান তোলে। জবাবে নিউজিল্যান্ড ৬ উইকেটে ১৫৯ রানের বেশি করতে পারেনি। তাতে সেমির দৌড়ে ভালোভাবেই টিকে থাকল জশ বাটলারের দল।
হারলেও ৪ ম্যাচে ৫ পয়েন্ট নিয়ে রানরেটে এগিয়ে থাকায় এখনো টেবিলের শীর্ষেই নিউজিল্যান্ড। সমান ম্যাচে ৫ পয়েন্ট করে পাওয়া ইংল্যান্ড দুই ও অস্ট্রেলিয়া তিনে আছে রানরেটের কারণে।
চারে শ্রীলঙ্কা, এখনো দেখছে শেষ চারে খেলার আশা। ৪ ম্যাচে তাদের পয়েন্ট ৪। শেষ ম্যাচে ইংল্যান্ডকে হারালেও লঙ্কানরা নিশ্চিন্ত হতে পারবে না। অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ড নিজেদের শেষ ম্যাচে কেমন ফল করে, সেদিকে তাকিয়ে থাকতে হবে দাশুন শানাকার দলকে।
১৮০ রানের লক্ষ্য তাড়ায় দ্রুতই ওপেনার ডেভন কনওয়ের উইকেট হারায় কিউইরা। ক্রিস ওকসের বলে তিনি লেগ সাইডে ফ্লিক করতে গিয়ে ৩ রানে বাটলারের গ্লাভসবন্দি হন।
২৮ রানে ফিন অ্যালেনের উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে নিউজিল্যান্ড। স্যাম কারেনের বলে ২০ গজ দৌড়ে বাউন্ডারি লাইনের কাছে ক্যাচ নেন বেন স্টোকস। অ্যালেনের ইনিংস ১১ বলে এক ছক্কায় ১৬ রানে থামে।
তৃতীয় উইকেটে প্রতিরোধ গড়েন ব্ল্যাক ক্যাপস অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসন ও গ্লেন ফিলিপস। আদিল রশিদের করা দশম ওভারে ব্যক্তিগত ১৫ রানে থাকা ফিলিপসের ক্যাচ ফেলেন মঈন আলী।
১০ ওভার শেষে কিউইদের রান ছিল ২ উইকেটে ৬৬ । এরপর থেকে ক্রিজে ঝড় তোলেন জীবন পাওয়া ফিলিপস। ২৫ বলে করেন ফিফটি। আরেক প্রান্ত আগলে তাকে সঙ্গ দিতে থাকেন কেন উইলিয়ামসন।
৯১ রানের জুটি ভাঙেন স্টোকস। তার বলে উইলিয়ামসন ৪০ বলে ৩ চারে ৪০ রান করে শর্ট থার্ডম্যানে রশিদের ক্যাচ হন।
নেমেই প্রথম বলে চার মারেন জিমি নিশাম। ইনিংস যদিও বড় হয়নি তার। ৩ বলে ৬ রানে সোজা শটে ডিপ মিড উইকেটে কারেনের হাতে ধরা পড়েন। জয়ের জন্য নিউজিল্যান্ডের দরকার ২৬ বলে ৫৪ রান। পরে ওকসের করা ১৭তম ওভারে মাত্র ৩ রান করে মিচেল ড্রেসিংরুমে ফেরেন।
শেষ ৩ ওভারে কিউইরা জয়ের জন্য ৪৯ রানের কঠিন সমীকরণ সামনে দাঁড়ায়।
কারেন ১৮তম ওভারে বল হাতে নিয়ে ফিলিপসের মহামূল্যবান উইকেট তোলেন। জয় থেকে অনেকটাই দূরে সরে যায় নিউজিল্যান্ড। ৩৬ বলে ৪টি চার ও ৩ ছক্কায় ফিলিপস ৬২ রান করে বাউন্ডারি লাইনের কাছে ক্রিস জর্ডানের তালুবন্দি হন।
শেষ ১২ বলে নিউজিল্যান্ডের যখন ৪০ রান দরকার, বোলিংয়ে আসেন ওকস। ওভারটিতে ১৪ রান এলে শেষ ওভারে জয়ের জন্য উইলিয়ামসনদের দরকার পড়ে ২৬ রান। স্যাম কারেন শেষ ওভারে ৫ রানের বেশি খরচ করেননি। ২০ রানে জিতে সেমির সম্ভাবনা টিকিয়ে রাখে ইংল্যান্ড।
নিউজিল্যান্ডের পক্ষে দুটি করে উইকেট নেন ওকস ও কারেন। একটি করে নেন স্টোকস এবং উড।
আগে ব্যাটিংয়ে নেমে ইংল্যান্ড পাওয়ার প্লেতে বিনা উইকেটে তোলে ৪৮ রান। ৮ রানে জীবন পান বাটলার। পরে সাবলীল ব্যাটিং করে দলের রান বাড়িয়ে নেন অ্যালেক্স হেলস ও বাটলার। দশ ওভার পর্যন্ত তাদের জুটি অবিচ্ছিন্ন ছিল। ৮১ রানের মাথায় ভাঙে ওপেনিং জুটি। ৪০ বলে ৭ চার ও এক ছক্কায় ৫২ রানের ইনিংস খেলে মাঠ ছাড়েন হেলস।
ত্রয়োদশ ওভারে ৪০ রানে থাকা বাটলার আবারও জীবন পান। শেষ ৬ ওভারে ইংল্যান্ড ৬৯ রান জমা করে। রান আউট হওয়ার আগে ৪৭ বলে ৭ চার ও ২ ছক্কায় ৭৩ রানের ইনিংস খেলেন বাটলার।
কিউইদের পক্ষে ফার্গুসন ২ উইকেট পেলেও ৪ ওভারে ৪৫ রান দিয়ে ছিলেন খরুচে। একটি করে উইকেট নেন সাউদি, স্যান্টনার ও সোধি।