চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

ঘাম দিয়ে জ্বর ছাড়া জয়ে হাসল বাংলাদেশ

সোহান স্টাম্প ভাঙার সঙ্গে সঙ্গেই জয়ের আনন্দে মেতেছিল বাংলাদেশ। কিন্তু দ্রুতই সংকেত আসে আউট নয়। বল ধরার আগেই গ্লাভস স্টাম্পের সামনে নিয়ে সোহান করেছেন ভুল। বাড়তি বিপদ, টিভি আম্পায়ার জানিয়ে দেন এটি নো বল। মাঠ ছাড়া সব ক্রিকেটার আবারও মাঠে ফেরে তাতে। শেষ বলটি আবারও করতে হয় মোসাদ্দেককে। ফ্রি-হিটে অবশ্য ব্যাটেই বল লাগাতে পারেননি মুজারাবানি। সোহানের গ্লাভসে হয় জমা। নাটকীয়তায় ভরা ম্যাচে ঘাম দিয়ে জ্বর ছাড়া ৩ রানের জয়ে হাসে বাংলাদেশ।

রোববার ব্রিসবেনের গ্যাবায় টি-টুয়েন্টি বিশ্বকাপে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টসে জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে ৭ উইকেটে ১৫০ রান তুলেছিল বাংলাদেশ। জবাবে জিম্বাবুয়ে ৮ উইকেটে ১৪৭ রানে থেমেছে শেষ বল পর্যন্ত লড়ে।

রোমাঞ্চকর জয়ে গ্রুপ ২-এর পয়েন্ট টেবিলে দুইয়ে উঠে এসেছে বাংলাদেশ। ৩ ম্যাচে পয়েন্ট ৪ নিয়ে। এক ম্যাচ কম খেলে ৪ পয়েন্ট পাওয়া ভারত রানরেটে বড় ব্যবধানে এগিয়ে টেবিলের শীর্ষে।

১৫১ রানের লক্ষ্যে নামা জিম্বাবুয়ে প্রথম ওভারেই ৪ রান করা মাধেভেরের উইকেট হারায়, সাফল্য আনেন তাসকিন আহমেদ। ডিপ থার্ডম্যানে ক্যাচ নেন মোস্তাফিজ। পরের ওভারে আরভিনের উইকেট তোলেন তাসকিন। ৮ রান করে জিম্বাবুয়ে অধিনায়ক সোহানের গ্লাভসে ধরা পড়েন।

মোস্তাফিজ ষষ্ঠ ওভারে এসে জোড়া আঘাত হানে। মিল্টন শুম্বা ৮ রান করে মিডঅফে সাকিবের হাতে ধরা পড়েন। দুই বল পরে ইনফর্ম সিকান্দার রাজা রানের খাতা না খুলেই স্কয়ার লেগে আফিফের তালুবন্দি হন। জিম্বাবুয়ে ৩৫ রানে হারায় চতুর্থ উইকেট।

উইকেটরক্ষক-ব্যাটার চাকাভা ১৫ রান করে তাসকিনের বলে সোহানের গ্লাভসবন্দি হন। দলীয় ৬৯ রানে পঞ্চম উইকেট হারায় জিম্বাবুয়ে। সেখান থেকে জয়ের আশা বুনতে থাকা টিম টাইগার্সের চিন্তার কারণ হয়ে ওঠে ফিল্ডিং। শন উইলিয়ামসের সঙ্গে রায়ান বুর্লের ষষ্ঠ উইকেট জুটি দুশ্চিন্তায় ফেলে দেয়।

হাসান মাহমুদের করা ১৮তম ওভারে ১৪ রান তোলে জিম্বাবুয়ে। ওই ওভারে উইলিয়ামস তুলে নেন ফিফটি। জিম্বাবুয়ের সামনে জয়ের সমীকরণ দাঁড়ায় ১২ বলে ২৬ রান।

সাকিব ১৯তম ওভারে বল হাতে নেন। প্রথম তিন বলে ৭ রান খরচ করেন। চতুর্থ বলে অধিনায়ক নিজেই বল কুড়িয়ে সরাসরি থ্রোয়ে উইলিয়ামসকে রান আউট করেন। ভাঙে ৬৩ রানের জুটি। উইলিয়ামস ৪২ বলে ৮ চারে খেলেন ৬৪ রানের ইনিংস।

শেষ ওভারে জিম্বাবুয়ের দরকার ছিল ৬ বলে ১৬ রান। মোসাদ্দেকের হাতে শেষ ওভার ছাড়েন সাকিব। প্রথম বলে লেগবাই থেকে আসে এক রান। দ্বিতীয় বলে উড়িয়ে মারতে গিয়ে ডিপ মিডউইকেটে আফিফের হাতে ধরা পড়েন ইভান্স।

তৃতীয় বলে লেগবাই থেকে চার রান হলে সমীকরণ দাঁড়ায় ৩ বলে ১১ রান। মোসাদ্দেক চতুর্থ বলেটি শর্ট করে বসলে ছক্কায় ঝাল মেটান এনগারাভা। হারের শঙ্কায় পড়ে যায় টাইগাররা।

পঞ্চম বলে এগিয়ে এসে মারতে গিয়ে এনগারাভা স্টাম্পিংয়ের ফাঁদে পড়েন। শেষ বলের সমীকরণ দাঁড়ায় ১ বলে ৫ রান। শেষ বলে মুজারাবানিও এগিয়ে এসে মারতে যান। বল তার ব্যাটে আসেনি। সোহান স্টাম্প ভেঙে দিলে সবাই ভেবেছিল খেলা শেষ। নাটক ছিল বাকি তখনও। টিভি রিপ্লেতে দেখা যায় সোহান বল ধরার আগেই গ্লাভস স্টাম্পের সামনে বাড়িয়ে ফেলেছেন। টিভি আম্পায়ার নো ডাকেন। ফ্রি-হিটে মুজারাবানি পারেননি কিছু করে দেখাতে। আসরে দ্বিতীয় জয়ের দেখা পায় সাকিবের দল।

ম্যাচসেরা তাসকিন ৪ ওভারে ১৯ রানে নিয়েছেন ৩ উইকেট। দারুণ বোলিং করা মোস্তাফিজুর রহমান ৪ ওভারে ১৫ রানে ২ উইকেট তুলেছেন। মোসাদ্দেক ৩ ওভারে ৩৪ রানে শেষ ওভারে এসে নেন ২টি উইকেট।

এর আগে নাজমুল হোসেন শান্তর ৭১ ও আফিফ হোসেন ধ্রুবর ২৯ রানে লড়াইয়ের পুঁজি পায় বাংলাদেশ।