চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় দায়ের করা মামলায় ১২ ছাত্রলীগ নেতাকর্মীর নাম থাকায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনিক ভবনের সামনে প্রতিবাদ মিছিল করেছে চবি শাখা ছাত্রলীগের বগিভিত্তিক গ্রুপ সিক্সটিনাইনের সদস্যরা। সোমবার (১১ সেপ্টেম্বর) দুপুরে আয়োজিত প্রতিবাদ মিছিল থেকে মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানায় তারা।
মিছিলে অংশগ্রহণকারীদের দাবি —সংগঠনকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে উদ্দেশ্যমূলকভাবে এই মামলা করা হয়েছে। ছাত্রলীগ সেদিন ভাঙচুর রুখতে চেষ্টা করেছে।
তবে এক মামলার বাদী চবির ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার ও নিরাপত্তা অধিদপ্তরের প্রধান জানিয়েছেন, মামলায় কারা আসামি, তারা তা জানেন না। পুলিশ আসামিদের নাম দিয়েছে। পুলিশই ভিডিও ফুটেজ দেখে আসামি শনাক্ত করে এজাহার দায়ের করেছেন।
জানা যায়, গত ৮ সেপ্টেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বাসভবনসহ বিভিন্ন স্থানে ভাঙচুর ও লুটপাট এবং এর আগে চবির পরিবহন বিভাগে গিয়ে চাঁদা চাওয়ার অভিযোগের ঘটনায় দু’টি মামলা করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। প্রতি মামলায় ৭ জনের নাম উল্লেখ করে এবং প্রায় ৫শ’ শিক্ষার্থীকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে। শনিবার (৯ সেপ্টেম্বর) রাতে করা দু’টি মামলার একটির বাদী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার কে এম নূর আহমদ। আরেকটির বাদী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত নিরাপত্তা কর্মকর্তা শেখ মোহাম্মদ আবদুর রাজ্জাক। দুই মামলার আসামিদের মধ্যে শাখা ছাত্রলীগের উপগ্রুপ সিএফসি-এর ৫ জন, সিক্সটিনাইনের ৬ জন ও বিজয় ১ গ্রুপের সদস্য ও ২ জন সাধারণ শিক্ষার্থী রয়েছে।
একটি মামলায় ৪ সেপ্টেম্বর উপাচার্যের বাসভবনে গিয়ে ১০ লাখ টাকা চাঁদা দাবির অভিযোগ করা হয়। অন্যটিতে ৫ সেপ্টেম্বর পরিবহন বিভাগে গিয়ে ৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবির অভিযোগ রয়েছে।
শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন টিপু বলেন, ‘ওই দুই চাঁদা দাবির ঘটনা যদি ঘটেই থাকে তাহলে অবশ্যই তার সিসিটিভি ফুটেজ থাকবে। আমরা ফুটেজ দেখতে চাই। সেরকম কিছু হলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়নি কেন?
মামলার এক আসামি ও চবি শাখা ছাত্রলীগের সদস্য চ্যানেল আই অনলাইনকে বলেন, ‘সিসিটিভি ফুটেজ দেখলেই তো প্রমাণ হয় প্রকৃত দোষী কে। এভাবে নির্দোষ ছাত্রদের সামাজিক ও মানসিকভাবে বিপর্যস্ত করার নিন্দা জানাই।’
চবি শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন টিপু চ্যানেল আই অনলাইনকে বলেন, ‘ছাত্রলীগের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করতে এই পক্ষপাতদুষ্ট মামলা করা হয়েছে। ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের পেছনে প্রকৃত আসামীদের বিচার আমরাও চাই।’
টিপু আরও বলেন, ‘সাজ্জাদ নামে একজন ছাত্রদল নেতাকে আসামি করতে গিয়ে অন্য এক সাজ্জাদকে আসামি করা হয়েছে। যিনি এখন ক্যাম্পাসেই নেই। এরকম অনেক অসামজ্ঞস্য রয়েছে মামলায়।’
শাখা ছাত্রলীগের সহসভাপতি ও সিএফসির সদস্য সাদাফ খান চ্যানেল আই অনলাইনকে বলেন, ‘সিসিটিভি ফুটেজ দেখে প্রকৃত আসামীদের চিহ্নিত করা হোক। অভিযুক্তরা সবাই ১৮-১৯, ১৯-২০, ২০-২১-এর শিক্ষার্থীরা চাঁদা দাবি করছে এটা সম্ভব নয়। যদি হয়েই থাকে, তাহলে সিসিটিভি ফুটেজ কোথায়?’
প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন, ঘটনার দিন ক্যাম্পাসে মুখে কাপড় বাঁধা রড হাতে বহিরাগতদের উপস্থিতি ছিল।