২০২২ সালের সেপ্টেম্বরেও পেশাদার ক্রিকেটার হিসেবে কোথাও চুক্তিবদ্ধ ছিলেন না স্পেন্সার জনসন। বাঁহাতি ফাস্ট বোলার বাগানের মালি হিসেবে কর্মরত ছিলেন। তবে বিগ ব্যাশ লিগ পাল্টে দেয় তার জীবন। বল হাতে পারফর্ম করায় সাউথ অস্ট্রেলিয়ার হয়ে খেলেন প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট। যুক্তরাজ্যের ১০০ বলের টুর্নামেন্ট দ্য হান্ড্রেডেও অংশ নেন। গত বছরের আগস্টে অজিদের জার্সিতে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে হয় অভিষেক।
সাউথ আফ্রিকা সফরে টি-টুয়েন্টি সিরিজে ২০২৩ সালের আগস্টে ডারবানে প্রথম আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলতে নামেন স্পেন্সার। চারদিন পর খেলেন নিজের দ্বিতীয় টি-টুয়েন্টি ম্যাচ। একই বছরের সেপ্টেম্বরে ইন্দোরে ভারতের বিপক্ষে হয় ওয়ানডে অভিষেক।
ভারতের মাটিতে হওয়া ওয়ানডে বিশ্বকাপের স্কোয়াডে অবধারিতভাবেই ছিলেন না মাত্র তিন আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলার অভিজ্ঞতা থাকা এ ক্রিকেটার। তবে প্রায় দুই মাস আগে হওয়া আইপিএলের নিলামে ১০ কোটি রুপিতে কিনে নেয় গুজরাট টাইটান্স। বিশ্বের সবচেয়ে মর্যাদাসম্পন্ন ও ব্যয়বহুল ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেট লিগের আসন্ন আসরে স্পেন্সার নিলামে সর্বোচ্চ দাম পাওয়া ক্রিকেটারদের তালিকার ষষ্ঠ স্থানে থাকেন।
স্বপ্ন পূরণ হলেও দেশের মাটিতে এখনো আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলার সৌভাগ্য অ্যাডিলেডে জন্ম নেয়া এ অজি পেসারের এখনো হয়নি। সেজন্য অবশ্য তাকে আর হয়তো খুব বেশি অপেক্ষা করতে হচ্ছে না। রোববার ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় টি-টুয়েন্টির আগে স্কোয়াডে পেয়েছেন ডাক। ঘরের মাঠ অ্যাডিলেডেই তিনি খেলতে নামতে পারেন।
পাঁচ মাস পর আবারো আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলার সুযোগ পাওয়া নিয়ে শনিবার সাংবাদিকদের স্পেন্সার বলেন, ‘এটা রোমাঞ্চকর। আরেকটি সুযোগ পাওয়া অবশ্যই এমন কিছু যা আমি ধরে রাখতে চাই। গত বছর সেপ্টেম্বরে যখন খেলেছিলাম, তখনকার চেয়ে এখন আমি ভিন্ন একজন খেলোয়াড় বলে মনে করি। বিগ ব্যাশে আমার কিছুটা বেশি সাফল্য রয়েছে। তাই আমি অবশ্যই এগিয়ে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত।’
সিডনি ক্রিকেট গ্রাউন্ডে ২৪ জানুয়ারি হওয়া বিগ ব্যাশ লিগের ফাইনালে স্পেন্সার ব্রিসবেন হিটসের জয়ের নায়ক ছিলেন। বল হাতে ২৬ রানের বিনিময়ে পেয়েছিলেন ৪ উইকেট।
বাগানের মালি থেকে ক্রিকেটার হওয়া প্রসঙ্গে ২৮ বর্ষী পেসারের ভাষ্য, ‘আমি সামনে অগ্রসর হচ্ছি। আপনি যখন অতীত সম্পর্কে চিন্তা করেন, তাহলে ব্যাপারটা বেশ হাস্যকর। কিন্তু আমি বর্তমানে যে অবস্থায় আছি, তা ধরে রাখতে কাজ চালিয়ে যাচ্ছি।’
হোম ভেন্যু অ্যাডিলেডে অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে আন্তর্জাতিক অভিষেকের সম্ভাবনায় উদ্বেলিত স্পেন্সার আরও বলেন, ‘অবশ্যই এটা আমার পরিবারের জন্য একটি গর্বের মুহূর্ত হতে চলেছে। দর্শকদের মাঝে আমার বন্ধুরাও থাকবে। অস্ট্রেলিয়ার হয়ে খেলা আপনি বাড়ির উঠোনে স্বপ্ন দেখার মতো বিষয়। এটা হওয়ার আগে বেশ শান্ত থাকতে হবে।
ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও যুক্তরাষ্ট্রে চলতি বছর বসতে যাচ্ছে টি-টুয়েন্টি বিশ্বকাপের আসর। এর আগে অস্ট্রেলিয়া কেবল পাঁচটি টি-টুয়েন্টি ম্যাচ খেলার সুযোগ পাবে। তাই সুযোগের সৎ ব্যবহার করে বিশ্বকাপ স্কোয়াডে জায়গা করে নেয়ার আশাই করছেন স্পেন্সার।
‘এখন অস্ট্রেলিয়ার হয়ে এখানে কয়েকটি পারফরম্যান্স করতে পারলে ভালো লাগবে। তবে বিশ্বকাপ এখনো অনেক দূরে। আমার যদি আইপিএলে ভালো পারফরম্যান্স থাকে, তাহলে বিশ্বকাপ দলে আমার থাকার সম্ভাবনা আছে।’