তিনদিন শান্ত থাকার পর কক্সবাজারে টেকনাফ উপজেলার হ্নীলা ও হোয়াইক্যং সীমান্তের ওপারে আবারও বিস্ফারণের বিকট শব্দের পাশাপাশি বিমান থেকে গোলাবর্ষণের শব্দ শোনা যাচ্ছে। এতে সীমান্তের বাসিন্দাদের মাঝে আবারও সৃষ্টি হয়েছে উদ্বেগ।
বৃহস্পতিবার ২৯ ফেব্রুয়ারি ভোর থেকে দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত বিস্ফোরণের বিকট শব্দ শুনেছেন বলে জানান জনপ্রতিনিধিসহ স্থানীয়রা।
স্থানীয়রা বলেন, মিয়ানমারের অভ্যন্তরে চলমান সংঘাতের জের ধরে সোমবার বিকেল ৪টার পর থেকে আর কোন বিকট বিস্ফোরণ ও গোলাগুলির শব্দ শোনা যায়নি। কিন্তু তিন দিন আজ আবারও শব্দ শোনা যাচ্ছে।
হোয়াইক্যং ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী উনচিপ্রাং, কাঞ্জরপাড়া এবং হ্নীলা ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী ফুলেরডেইল এলাকার বাসিন্দারা জানান, নাফ নদীর ওপারে অন্তত ২ থেকে ৩ কিলোমিটার ভিতরে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের বলিবাজার ও নাকপুরা এলাকা ঘিরে সরকারি বাহিনীর সাথে আরাকান আর্মির মধ্যে সংঘাত চলছে। এতে গোলাগুলি ও মর্টার শেল বিস্ফোরণের বিকট শব্দ ভেসে আসে এপারেও।
এসময় আকাশের অনেক উঁচু থেকে চক্কর দিতে দিতে বিমানযোগে মর্টার শেল বা বোমা বর্ষণেরও ঘটনা দেখা গেছে। মিয়ানমারের জান্তা বাহিনীর সদস্যরা আরাকান আর্মির নিয়ন্ত্রণ নেওয়া বলিবাজার এলাকায় এই হামলা চালিয়েছে বলে ধারণা করছেন স্থানীয়রা। বৃহস্পতিবার ভোর ৩ টা থেকে দুপুর পর্যন্ত থেমে থেমে বিস্ফোরণের শব্দ শোনেন তারা।
টেকনাফের হ্নীলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রাশেদ মাহমুদ আলী বলেন, তিনদিন পর সীমান্তের ওপারে গোলাগুলি ও বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যাচ্ছে। ভোর থেকে থেমে থেমে শুরু হয় গোলাবর্ষণের বিকট শব্দ। সকাল ৯টার পর তা থেমে যায়।
তিনি বলেন, পরে সকাল ১০ টা থেকে দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত টানা বিকট শব্দ ভেসে এসেছে। ওই সময় মিয়ানমারের বলিবাজার ও নাকপুরা পাড়ার দিকে আকাশে বিমানের চক্কর দিতে দেখা গেছে। বিমান থেকে গুলি ও মর্টার শেল নিক্ষেপের ঘটনাও ঘটেছে। তবে দুপুরের পর থেকে শব্দ কমলেও এখনো থেমে থেমে গুলির শব্দ শোনা যাচ্ছ।
হোয়াইক্যং ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যান ও ৫ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মোহাম্মদ শাহজালাল বলেন, তিন দিন পর আবারও গোলাগুলি শব্দ শোনা গেছে। সীমান্তের লোকজন আতংকিত।
টেকনাফের উনচিপ্রাং এলাকার বাসিন্দা ও স্থানীয় সাংবাদিক তাহের নঈম জানান, সীমান্ত পরিস্থিতি ৩ দিন ধরে একটু স্বাভাবিক ছিল। তিনদিন পর আবারও বিস্ফোরণের শব্দে নতুন আতঙ্ক তৈরি হয়েছে।
টেকনাফ ব্যাটালিয়নের (২ বিজিবি) অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. মহিউদ্দীন আহমেদ জানান, মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ ও অনুপ্রবেশ ঠেকাতে বিজিবি সদস্যদের তৎপর রাখা হয়েছে।