নেশা ও উচ্ছৃঙ্খল জীবনে অভ্যস্ত হয়ে পড়েছেন গায়ক মাইনুল আহসান নোবেল। প্রতিদিন মদ্যপানসহ উচ্ছৃঙ্খল জীবনে অভ্যস্ত হওয়া স্ত্রীকেও বেশ কয়েকবার মারধর করে নোবেল বাসা থেকে বের করে দিয়েছেন বলে জানিয়েছে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।
তিনি বলেন: ৩-৪ টি ঘুমের ওষুধ খেয়ে তিনি দীর্ঘক্ষণ ঘুমান। এই ঘুমের কারণে সে টাকা নিয়েও প্রোগ্রামে যেতে পারে না।
শনিবার ২০ মে দুপুরে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।
হারুন অর রশীদ বলেন, নোবেল বিভিন্ন জায়গায় প্রোগ্রাম করতে গিয়ে অতিরিক্ত মদ্যপান করে মাতাল অবস্থায় মঞ্চ ভেঙে ফেলে এমন অভিযোগ আমাদের কাছে এসেছে। তার স্ত্রীকে সে নিজে প্রচণ্ড পরিমানে মারপিট করে বাসা থেকে বের করে দিয়েছে। তার স্ত্রীও আমাদের কাছে অনেক অভিযোগ করেছে।
এছাড়া, বিভিন্ন জায়গা থেকে আমাদের কাছে অভিযোগ আসে যে, সে টাকা নিয়ে প্রোগ্রাম করে এসব টাকা আত্মসাৎ করে ফেলেছে। এসব অভিযোগের ভিত্তিতে তাকে আমরা নিয়ে এসেছি। যেহেতু তার বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে, সেই মামলার পরিপ্রেক্ষিতে তাকে আমরা আদালতে পাঠাব।
এক প্রশ্নের জবাবে ডিবি প্রধান বলেন, সে অনেক সময় টাকা নিয়ে প্রোগ্রাম করতে যায় না। আর যদি যায়ও সেখানে গিতে অতিরিক্ত মদ্যপান করে প্রোগ্রামের মঞ্চে ভাংচুর করে। এর পরিপ্রেক্ষিতে তাকে আমরা বিভিন্ন সময় বুঝানোর চেষ্টা করেছি। তার স্ত্রী আমাদের কাছে তিন থেকে চার দিন এসেছে।
সে স্ত্রীকে বিভিন্ন সময় মারধর করতো, মারধর করার পর তাকে চিকিৎসাও করাতো৷ তার স্ত্রী এসব বিষয়ে আমাদের কাছে মৌখিক অভিযোগ করেছেন।
হারুন অর রশীদ বলেন: নোবেলের সঙ্গে কথা বলে আমরা জানতে পেরেছি, তার জীবনে অধঃপতন নেমে এসেছে। তাকে প্রতিদিন মদ পান করতে হয় এবং প্রতিদিন ৩-৪ টি ঘুমের ওষুধ খেয়ে তাকে ঘুমাতে হয়।
‘সে আমাদের কাছে স্বীকার করেছে, অন্য শিল্পীদের কাছ থেকে মদ্যপান, গাজাঁ ও ইয়াবা সেবন শিখেছে। আমরা তার কথায় বুঝতে পারি সে এসব কারণে সারা দিন ঘুমায় এবং সে ঘুমের কারণে টাকা নিয়ে প্রোগ্রাম করতে যেতে পারে না। অতিরিক্ত ঘুমের ওষুধ খাওয়ার কারণে প্রোগ্রামের তারিখ দিলেও সে যেতে পারে না।’
নোবেলের স্ত্রী বিভিন্ন সময় অভিযোগ করেছে যে তার স্বামী প্রতিদিন লাখ লাখ টাকার মদ্যপান করে। তার পেছনে চক্রের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন: এ বিষয়ে উনার স্ত্রী বিস্তারিত বলতে পারবেন। তবে এসব অভিযোগ আমরা খতিয়ে দেখছি। তাকে রিমান্ডে এনে আমরা এসব বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করব।
শনিবার ২০ মে ভোরে রাজধানীর ডেমরার বাসা থেকে গায়ক নোবেলকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
এর আগে গায়ক মাইনুল আহসান নোবেলের বিরুদ্ধে রাজধানীর মতিঝিল থানায় প্রতারণার মামলা হয়। মামলায় তার বিরুদ্ধে অনুষ্ঠানে না গিয়েও এক লাখ ৭২ হাজার টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ করা হয়। তার বিরুদ্ধে স্ত্রীর অভিযোগ ও একটি প্রতারণার মামলা রয়েছে।
গত ১৬ মে শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জ হেডকোয়ার্টার পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের ‘এসএসসি ব্যাচ ২০১৬’-এর প্রতিনিধি মো. সাফায়েত ইসলাম বাদী হয়ে এ মামলা করেন। ১৭ মে আদালত মামলা আকারে এজাহার গ্রহণ করেছেন।
২০১৯ সালে জি বাংলা সারেগামাপা-য় তৃতীয় স্থান দখল করেছিলেন নোবেল। তবে ‘ভিউয়ার্স চয়েজ’-এ সেরার পুরস্কার উঠেছিল তার হাতে।