শেরপুরের শ্রীবরদীতে শ্বশুর বাড়ীতে বোরকা পরে হামলা চালিয়ে স্ত্রী-শাশুড়ি, চাচা শ্বশুরসহ ৩ জনকে হত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে। ওই ঘটনায় শ্বশুর, শ্যালক ও চাচী শাশুড়িও গুরুতর আহত হয়েছেন।
শ্রীবরদী উপজেলার কাকিলাকুড়া ইউনিয়নের খোশালপুর পুটল গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন- ওই গ্রামের মনু মিয়ার মেয়ে মনিরা বেগম, স্ত্রী শেফালী বেগম ও মনু মিয়ার বড় ভাই মাহমুদ হাজী। ঘটনার পরপরই হামলাকারী পাশ্ববর্তী গেরামারা গ্রামের মিন্টু মিয়া ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়। মুমূর্ষ অবস্থায় আহত মনু মিয়া, তার ছেলে শাহাদাৎ হোসেন ও বাচ্চুনী বেগমকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, পারিবারিক দ্বন্দ্বের জের ধরে এ ঘটনা ঘটেছে। প্রায় ১৬ বছর আগে শ্রীবরদর খোশালপুর পুটল গ্রামের মনু মিয়ার মেয়ে মনিরা বেগমের সাথে পাশ্ববর্তী গেরামারা গ্রামের হাই উদ্দিনের ছেলে মিন্টু মিয়ার সাথে বিয়ে হয়। তাদের সংসারে এক ছেলে, এক মেয়ে রয়েছে। দাম্পত্য কলহের জের ধরে গত রমজান মাসে মনিরা বেগম বাবার বাড়ী আসার পর আর স্বামীর বাড়ী ফিরে যায়নি। এ নিয়ে দুই পরিবারের মাঝে দ্বন্দ্ব দেখা দেয়। বৃহস্পতিবার সন্ধ্য ৭টার দিকে বোরকা পরে শ্বশুরবাড়ীতে হাজির হয়ে মিন্টু মিয়া দেশীয় ধারালো অস্ত্র নিয়ে অতর্কিত হামলা চালিয়ে স্ত্রী, শ্বশুর, শাশুড়ি, শ্যালক, চাচাশ্বশুর, চাচী শাশুড়িসহ ৬ জনকে গুরুতর জখম করে পালিয়ে যায়। স্থানীয় লোকজন আহতদের উদ্ধার করে বকশীগঞ্জ উপজেলা হাসপাতালে নেওয়ার পথে মনিরা বেগম মারা যায়। পরে হাসপাতালে নেওয়া হলে মনিরার মা শেফালী বেগম ও মনু জ্যাঠা মাহমুদ হাজী মারা যায়। অপর ৩ জনের অবস্থা মুমূর্ষ হওয়ায় তাদের ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। হতাহতদের মধ্যে ৩ জনকে গলাকাটা অবস্থায় উদ্ধার করা হয়।
এমন সংবাদ পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে ছুটে যান পুলিশ সুপারসহ শ্রীবরদী থানা ও জেলা পুলিশের কর্মকর্তারা।
পুলিশ সুপার হাসান নাহিদ চৌধুরী ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, নিহত ৩ জনের লাশ উদ্ধার করে শ্রীবরদী থানায় রাখা হয়েছে। লাশের সুরতহাল প্রতিবেদন প্রস্তুত করা হয়েছে। ঘটনাটির তদন্ত ও আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে।
শ্রীবরদী থানার ওসি বিপ্লব কুমার বিশ্বাস জানিয়েছেন, পলাতক মিন্টু মিয়াকে গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে। শীঘ্রই তাকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হবে।