রোববার প্রথম রাউন্ডের খেলা দিয়ে বসতে চলেছে টি-টুয়েন্টি বিশ্বকাপের অষ্টম আসর। বাছাই শেষে মাঠে গড়াবে ‘সুপার টুয়েলভ’ তথা মূল আসর। আয়োজনে কোথাও ঘাটতি রাখছে না স্বাগতিক অস্ট্রেলিয়া। চার-ছক্কার ফুলঝুরি দেখতে দেশটিতে ভ্রমণ করছে লাখো ক্রিকেটপ্রেমী। তাদের বরণ করে নিতে প্রস্তুত সাত ভেন্যুর শহরগুলো।
কোথায় কোথায় গড়াবে ব্যাট-বলের ঠুক-ঠাক, কোথায় উন্মাদনা সবুজ গালিচা পেরিয়ে আছড়ে পড়বে গ্যালারিতে? সেসবের পরিচিতিতে এপর্বে থাকছে এবারের ছোট ফরম্যাটের বিশ্ব আসরে ভেন্যু জিলংয়ের কার্ডিনিয়া পার্কের গল্প।
সাউথ গিলংয়ের ট্রেন স্টেশন থেকে মাত্র দুই কিলোমিটার দূরে কার্ডিনিয়া পার্ক। যেখানে প্রথমবারের মতো বসতে চলেছে মহাযজ্ঞ। হবে এবারের টি-টুয়েন্টি বিশ্বকাপের গ্রুপপর্বের ছয়টি ম্যাচ। বৈশ্বিক আসরটির প্রথম রাউন্ডের এ-গ্রুপের সবগুলো ম্যাচ আয়োজন করবে অস্ট্রেলিয়ার ভিক্টোরিয়া প্রদেশের অন্যতম স্টেডিয়ামটি।
ক্রিকেটে ইতিহাসের সাক্ষী হতে চলা জিলংয়ের মাঠটিতে লড়বে টেস্ট খেলুড়ে শ্রীলঙ্কা। খেলবে নামিবিয়া, নেদারল্যান্ডস ও সংযুক্ত আরব আমিরাত।
জিলং ফুটবলের হোম ভেন্যু হিসেবেই পরিচিত জিএমএইচবিএ স্টেডিয়াম বা কার্ডিনিয়া পার্ক। যদিও শুধু ফুটবলই নয়, ভিক্টোরিয়ার অন্যতম আকর্ষণীয় ও সুবিশাল স্টেডিয়ামটিতে একাধারে রাগবি, ঘরোয়া প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট, সকার লিগ ও বিগ ব্যাশের খেলা আয়োজন করা হয়। জিলং ক্যাটসের (এএফএল, এএফএলডব্লিউ ও ভিএফএল) হোম ভেন্যু এটি। এবার প্রথমবারের মতো অংশ হতে চলেছে টি-টুয়েন্টি বিশ্বকাপের মত মহাযজ্ঞের।
১৯৪১ সালে ফুটবলের জন্য উন্মুক্ত করা ভেন্যুটিতে একবিংশ শতাব্দীর শুরুর দিকে ব্যাপক পরিবর্তন আসে। ২০০৩ সালে স্টেডিয়ামটিকে আরও বেশি আকর্ষণীয়, সুযোগ-সুবিধা সম্বলিত করতে ৩১৯ মিলিয়ন অস্ট্রেলিয়ান ডলার খরচ করে কর্তৃপক্ষ। ২০২৩ সাল পর্যন্ত অবকাঠামো নির্মাণের আওতায় ছিল।
স্টেডিয়ামটিতে আছে ছয়টি গ্র্যান্ড স্ট্যান্ড, ধারণক্ষমতা ২৩ হাজার থেকে বাড়িয়ে নেয়া হয়েছে প্রায় ৪০ হাজারে। কার্ডিনিয়া পার্কে রয়েছে নেটবল এবং সুইমিংপুলের সুবিধাও। আছে সুবিশাল পার্কিং এবং শহরের প্রাণকেন্দ্রে হওয়ার কারণে আবাসনের বাড়তি সুবিধা।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় কোরিও ওভাল সামরিক বাহিনীর আওতায় চলে গেলে জিলং ফুটবল ক্লাব তাদের হোম ভেন্যু হিসেবে কার্ডিনিয়া পার্ককে বেছে নেয়। ১৯৪১ সালের পর এটি হয়ে ওঠে ক্রীড়ার প্রাণকেন্দ্র। নিয়মিত ঘরোয়া ক্রিকেট আয়োজন করা জিলংয়ের স্টেডিয়ামটির আরেকটি নাম আছে— অস্ট্রেলিয়ান কিংবদন্তি অ্যান্ড্রু সাইমন্ডসের নামানুসারে সাইমন্ডস স্টেডিয়াম বলেও এটির ব্যাপক পরিচিতি।
প্রদেশীয় ফুটবলের অন্যতম ভেন্যুটি ২০১৬ সালে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ম্যাচ আয়োজনের অনুমতি পায়। ২০১৭ সালে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে প্রথম খেলা টি-টুয়েন্টি ম্যাচটি অবশ্য জিততে পারেনি স্বাগতিক অস্ট্রেলিয়া। প্রথম ক্রিকেট ম্যাচের সাক্ষী হতে আসা ভিক্টোরিয়াবাসী দেখেছে ২ উইকেটের হার, অজিদের ১৭৩ রান ম্যাচের শেষ বলে পার করে ফেলে লঙ্কানরা।
২০১৮ সাল থেকে নিয়মিত বিগ ব্যাশের খেলা হয় ভেন্যুটিতে। মেয়েদের ২০১৮ বিগ ব্যাশের আসরও কার্ডিনিয়া পার্কে বসেছিল। এবার বিশ্বকাপের সাক্ষী হতে চলছে জিলংয়ের অনিন্দ্য সুন্দর স্টেডিয়ামটি।