মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পেনসিলভানিয়া রাজ্যে এক নারীর বিরুদ্ধে তার প্রেমিকের বাচ্চাকে ব্যাটারি, স্ক্রু এবং নেইলপলিশ রিমুভার খাইয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে।
ভারতীয় সংবাদ মাধ্যম এনডিটিভি জানিয়েছে, গত সপ্তাহে অভিযুক্ত ২০ বছর বয়সী অ্যালেসিয়া ওয়েনসকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ আছে, তিনি গত বছরের জুনে তার প্রেমিকের ১৮ মাস বয়সী মেয়ে আইরিস রিটা আলফেরারকে হত্যা করেছিলেন। ময়নাতদন্তে শিশুটির রক্তে অ্যাসিটোনের অতিরিক্ত মাত্রার উপস্থিতি পাওয়া গিয়েছিল।
অ্যাটর্নি জেনারেল হেনরি বলেছেন, এই মামলার বিবরণ খুবই হৃদয়বিদারক। অভিযুক্ত একটি সম্পূর্ণ অসহায় শিশুর ক্ষতি করার জন্য বেশ কিছু কৌশল অবলম্বন করেছেন এবং হত্যার পর তদন্তকারীদের নানানভাবে বিভ্রান্ত করেছেন। অ্যালেসিয়া ওয়েনস হত্যার আগে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত জিনিসগুলো শিশুর ওপর কী ক্ষতিকর প্রভাব ফেলতে পারে তা নিয়ে গবেষণাও করেছিলেন।
২০২৩ সালে ২৫ জুন আইরিসের বাবা বেইলি জ্যাকবি দোকানে যাওয়ার জন্য বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন। কিছুক্ষণ পর তিনি অ্যালেসিয়ার কাছ থেকে একটি ফোন পান। ফোন অ্যালেসিয়া জ্যাকবকে জানান যে, আইরিস অসুস্থ হয়ে পড়েছে। জ্যাকব সাথে সাথে তার বাসায় ফিরে যান এবং দেখতে পান যে, আইরিস সম্পূর্ণ অচেতন হয়ে পড়ে আছে। তিনি দেরি না করে সাথে সাথেই ৯১১-এ কল করেন। এরপর শিশুটিকে চিকিৎসার জন্য নিউ ক্যাসেলের ইউপিএমসি জেমসন হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। এর প্রায় এক ঘণ্টা পর তাকে পিটসবার্গের ইউপিএমসি চিলড্রেন হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। ভর্তির ৪ দিন পর দেহের কয়েকটি অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ বিকল হয়ে গেলে মারা যান আইরিস।
আইরিস তার মা এমিলি আলফেরা এবং তার দাদা-দাদীর সাথে থাকতেন। ঘটনার সময় আইরিস তার বাবার সাথে দেখা করতে এসেছিল। অ্যালিসিয়া পুলিশকে জানিয়েছিল, আইরিস বিছানা থেকে পড়ে মাথায় আঘাত পেয়েছিল। কিন্তু ময়নাতদন্তের রিপোর্টে দেখা যায়, শিশুটিকে মৃত্যুর আগে বোতাম-আকৃতির ব্যাটারি এবং একটি ধাতব স্ক্রু, নেইলপলিশ রিমুভারসহ অসংখ্য জল পুঁতি (ম্যাজিক বল) খাওয়ানো হয়েছিল।
পুলিশ অ্যালিসিয়ার ফোন অনুসন্ধান করে দেখতে পায়, ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে জুনের মধ্যে, তিনি এই উপাদানগুলো সম্পর্কে গুগলে অনুসন্ধান করেছিলেন যে জলের পুঁতি, ব্যাটারি, স্ক্রু এবং নেইলপলিশ রিমুভার কীভাবে একটি শিশুর গুরুত্বর ক্ষতি করতে পারে বা মৃত্যুর কারণ হতে পারে।
ময়নাতদন্তের ফলাফল এবং তদন্তকারীদের রিপোর্ট হাতে পাওয়ার পরই অ্যালিসিয়াকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।