সাউথ কোরিয়ার বিজ্ঞানীরা পরিবেশের ওপর ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার প্রভাব মোকাবেলার একটি নতুন উপায় খুঁজে পেয়েছেন। বিপুল জনসংখ্যার খাদ্যের চাহিদা পূরণের জন্য প্রচুর চাষের জমি প্রয়োজন। তবে সেই চাহিদা পূরণে বিজ্ঞানীরা একটি নতুন হাইব্রিড খাদ্য উদ্ভাবন করেছেন যা ধানের ভেতরে গরুর মাংসের সমন্বয়ে গঠিত।
এনডিটিভি জানিয়েছে, ইয়নসেই বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়োমোলিকুলার ইঞ্জিনিয়ার সোহেয়ন পার্কের নেতৃত্বে এক গবেষণায় সম্পূর্ণ নতুন ধরনের খাবারটি আবিষ্কার করা হয়। সম্প্রতি ম্যাটার জার্নালে প্রকাশিত হয় গবেষণাটি। গবেষণায় বলা হয়েছে, ল্যাব-কালচারড খাবারটি দেখতে মাংসের কিমা এবং ভাতের এক অদ্ভুত সংমিশ্রণের মতো, তবে পুষ্টিতে সমৃদ্ধ। বিজ্ঞানীরা গোলাপি রঙের এই খাবারটিকে বলছেন, মাংসযুক্ত চাল।
সোহেয়ন পার্ক বলেছেন, কোষ-কালচারড প্রোটিন চাল থেকে মানুষের প্রয়োজনীয় পুষ্টি পাওয়ার কথা ভাবুন। ভাতে ইতিমধ্যেই উচ্চমাত্রায় পুষ্টি উপাদান আছে। কিন্তু প্রাণিসম্পদ থেকে কোষ যুক্ত করে এই পুষ্টি উপাদানকে আরও বাড়িয়ে তোলা যায়। যদিও এর উৎপাদন একটু শ্রমসাধ্য, তবে এটি একদিন খাবারের চাপ কমাতে পারে।
গবেষণা দলটির ভাতকে বেছে নেওয়ার কারণ হলো, এটি মানুষের খাদ্যতালিকার অন্যতম প্রধান একটি খাদ্য। এতে ৮০ শতাংশ স্টার্চ, ২০ শতাংশ প্রোটিনসহ অন্যান্য পুষ্টি উপাদান রয়েছে।
হাইব্রিড ধান কীভাবে তৈরি হলো?
গবেষণার জন্য, বিজ্ঞানীরা প্রথমে ধানের দানার ওপর মাছের জেলটিন এবং এনজাইমের একটি প্রলেপ দেন যাতে কোষগুলো সেলুলার উপাদানের পরিমাণ বাড়াতে পারে এবং চালের ভেতরে থাকতে পারে। তারপরে তারা গরুর পেশী এবং চর্বিযুক্ত স্টেম সেল যুক্ত ধানের বীজ ১১ দিনের জন্য একটি পেট্রি ডিশের ভেতরে বড় হওয়ার জন্য রেখে দেন।
এরপর দলটি ধানের গঠন এবং পুষ্টি উপাদান নিয়ে পরীক্ষা করে। তারা দেখতে পান, গরুর মাংস এবং চালের মিশ্রণে তৈরি হাইব্রিড খাবারটি নিয়মিত চালের চেয়ে শক্ত। তারা আরও দেখতে পান, নতুন চালে উল্লেখযোগ্যভাবে নিয়মিত চালের তুলনায় ৮ শতাংশ বেশি প্রোটিন এবং ৭ শতাংশ বেশি চর্বি রয়েছে।