বৈরি সম্পর্কের জন্য আলোচিত মধ্যপ্রাচ্যের দুই প্রতিদ্বন্দ্বী দেশ সৌদি আরব ও ইরান তাদের কূটনৈতিক সম্পর্ক পুনঃপ্রতিষ্ঠা করতে সম্মত হয়েছে। চীনের মধ্যস্থতায় সৌদি আরব এবং ইরানের মাঝে সম্পর্ক পুনঃস্থাপনের ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষমতা কমে যাচ্ছে বলে মনে করছেন অনেকে।
সৌদি আরব ও ইরান বলেছে, তারা সাত বছর পর দুইদেশে একটি নিরাপত্তা সহযোগিতা চুক্তি করবে এবং আগামী দুই মাসের মধ্যে উভয় দেশ দূতাবাস চালু করবে। তবে দুই দেশের মধ্যবর্তী সম্পর্ক কোন পর্যায়ে দাঁড়াবে তা এখনও অনিশ্চিত।
প্রতিদ্বন্দ্বী দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনে চীনের সম্পৃক্ততা বিশ্বব্যাপী চীনকে একটি দীর্ঘস্থায়ী জোট এবং প্রতিদ্বন্দ্বিতা পরিবর্তনের মাধ্যম হিসেবে প্রকাশ করতে চাচ্ছেন চীনের রাষ্ট্রনায়ক শি জিনপিংয়।
নিউইয়র্ক টাইমসের প্রধান হোয়াইট হাউস সংবাদদাতা পিটার বেকার লিখেছেন, ‘এটি এমন এক বিষয়, যা কেউ কখনো কল্পনাও করতে পারেনি, তবে দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক উন্নয়নের মধ্যে সবচেয়ে উর্ধ্বগামী এবং সবচেয়ে উত্তেজনাপূর্ণ।’
কিছু উপসাগরীয় আরব কর্মকর্তারা বলছেন, তারা তাদের নিরাপত্তার নিশ্চয়তা জন্য আর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের উপর আর নির্ভর করতে পারে না। যেখানে চীন অস্ত্র, প্রযুক্তি এবং বিনিয়োগের প্রস্তাব দিতে প্রস্তুত। সৌদি আরবের প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমান প্রমাণ করার চেষ্টা করছেন যে, তারা কেবল একটি আমেরিকান “ক্লায়েন্ট স্টেট” নয়।
তবে অন্যান্য বিশ্লেষকরা বলছেন, ইরানের সাথে সম্পর্কের কারণে ওয়াশিংটন চুক্তিতে মধ্যস্থতা করতে পারত না। সেই সুযোগই চীন নিয়েছে।
সৌদি আরবের লাভ: চুক্তিটি সৌদি আরবের আঞ্চলিক সমস্যাগুলো সমাধান করতে সাহায্য করতে পারে। যা ইয়েমেনের মতো ব্যয়বহুল যুদ্ধগুলোকে নিরুৎসাহিত করেছে।
ইরানের লাভ: ইরানের জন্য এই চুক্তি একটি স্বস্তির কারণ হতে পারে, অভ্যন্তরীণ অস্থিরতা এবং কঠোর নিষেধাজ্ঞায় পরিচালিত ইরানের অর্থনীতিতে পরিবর্তন আসতে পারে।
ইসরায়েলের আশঙ্কা: সৌদি আরবের সঙ্গে ইরান বিরোধী জোটের আশা ভেস্তে যেতে পারে।
সৌদি পরমাণু আতঙ্ক: কর্মকর্তারা বারবার ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেছেন, কোনো হামলার জন্য তারাই হবে প্রথম লক্ষ্য। ইসরায়েলের সাথে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার বিনিময়ে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে নিরাপত্তা আশ্বাস প্রত্যাশা করে এবং একটি বেসামরিক পারমাণবিক কর্মসূচির উন্নয়নে সহায়তাও প্রত্যাশা করে।