সাফ অনূর্ধ্ব-১৬ নারী চ্যাম্পিয়নশিপ জয়ী দলের অন্যতম আলোচিত তারকা এখন মারিয়াম বিনতে হান্না। ফাইনালে ভারতের বিপক্ষে গোলের পর এ স্টপার বেশ আনন্দে ভাসছেন। সচরাচরের চেয়ে জীবন একটু ভিন্ন হলেও কঠিন ছিল না তার। ফুটবলে আসতে বাবা, ভাই, বোনের ভূমিকা অনেক। তাদের জন্যেই এপর্যন্ত আসা, জানালেন হান্না।
চ্যাম্পিয়ন ট্রফি নিয়ে সোমবার দেশে ফিরেছে বাংলাদেশ। চ্যাম্পিয়নদের সংবর্ধনা দিয়েছে চ্যানেল আই। বুধবার সকাল ১১টায় বাফুফের বাসে চড়ে চ্যানেল আই প্রাঙ্গণে আসেন শিরোপাজয়ী বীরকন্যারা, ফুলেল শুভেচ্ছায় বরণ করে নেয়া হয় তাদের।
লেফট স্টপার হান্না উঠে আসার কাহিনী শোনান চ্যানেল আই অনলাইনকে। বললেন এভাবে, ‘বাড়ি টাঙ্গাইলের সন্তোসে। পরিবারে আমরা পাঁচ বোন, এক ভাই, বাবা-মা। বাবা ঢাকার সাভারে প্রাইভেট কার ড্রাইভিং করে। সংসার চলে বাবার টাকায়, আর বোন সুপারশপে চাকরি করে।’
‘‘আমার চার নাম্বার বোন খেলাধুলা করত, প্রথমে প্রাইমারিতে বঙ্গমাতা ফুটবল খেলত, তখন দেখতে যাইতাম। সেখানে আমাদের কোচ ছিল মুন্নি ম্যাডাম, তিনি আমার বোনকে বলেন- ‘তোমার ছোট বোনকেও খেলতে দাও। শুধু তুমি একা খেলবা নাকি।’ এরপর থেকে প্রথমে ওনার (মুন্নি ম্যাডামের) ওখানে প্র্যাকটিস করার পর বিকেএসপিতে ট্রায়াল দিয়ে চান্স পেয়ে ডিসেম্বরে জাতীয় পর্যায়ে ট্রায়াল দিয়ে এখানে আসা।’’
মেয়েদের খেলাধুলার ক্ষেত্রে সামাজিক নানা বাধা-বিপত্তি থাকে। হান্নাকে তেমন কোনো বাধা পেরিয়ে এপর্যন্ত আসতে হয়েছে কিনা সেটিও জানালেন, ‘না, আমি তেমন কোনো বাধার সম্মুখীন হইনি। এলাকায় অনেক মেয়ে আছে যারা পড়াশোনা করতে পারে না। তবে আমার বাবা-মা তেমন ছিল না। আমাদের সবাইকে লেখাপড়া করতে দিয়েছে। এজন্য এলাকার কেউ কিছু বলতে পারেনি। সামাজিক কোনো বাধা ছিল না আমার ক্ষেত্রে।’
ক্লাস নাইনে পড়া হান্না লেখাপড়া নিয়ে মোটামুটি সিরিয়াস। বিকেএসপিতে ভালো পড়াশোনা হয় বলে জানালেন। জাতীয় দলের ডিফেন্ডার আঁখি খাতুনের সাথে চেহারার অনেক মিল আছে তার, এজন্য সবাই তাকে জিজ্ঞেস করে আঁখি খাতুনের বোন কিনা!