পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন বলেছেন: রোহিঙ্গা ক্যাম্পে স্বাভাবিক আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখতে পুলিশ কাজ করছে। আগামীতে রোহিঙ্গা ক্যাম্পের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি আরও উন্নত হবে।
কক্সবাজারে দুই দিনের সরকারি সফরের শেষ দিনে বুধবার সকালে উখিয়ায় রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন শেষে বিকালে কক্সবাজারে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
আইজিপি বলেন: রোহিঙ্গা ক্যাম্পে স্বাভাবিক আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখতে পুলিশ কাজ করছে। আমরা আত্মতুষ্টিতে ভুগছি না। আজ আমরা অফিসারদের সাথে বসেছি, তাদেরকে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দিয়েছি এবং আমাদের কর্মকৌশল নির্ধারণ করেছি।
তিনি আশা প্রকাশ করে বলেন: আগামীতে রোহিঙ্গা ক্যাম্পের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি আরও উন্নত হবে। যে কোন ঘটনা সংগঠিত হলে কাউকে ছাড় দেয়া হচ্ছে না। অপরাধী যেই হোক তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। তিনি বলেন, কেউ আইনশৃঙ্খলার স্বাভাবিক গতি ভঙ্গ করার চেষ্টা করলে তার বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
কক্সবাজার ট্রলারে ১০ জেলের প্রাণহানির ঘটনায় আইজিপি বলেন, এ ঘটনা জানার সাথে সাথে আমি রেঞ্জ ডিআইজিকে ঘটনাস্থল পরিদর্শনের নির্দেশ দিয়েছি। সিআইডি এবং পিবিআইর টিম পাঠানো হয়েছে। ইতোমধ্যে আসামি ধরা পড়েছে এবং তারা ১৬৪ ধারায় জবানবন্দী দিয়েছে। এ ঘটনায় তদন্ত কার্যক্রম চলমান রয়েছে।
অপহরণের ঘটনা প্রসঙ্গে আইজিপি বলেন, অপহরণের প্রতিটি ঘটনা আমরা তদন্ত করছি। তদন্তে আমাদের সফলতা রয়েছে। যারা অপহরণের ঘটনার সাথে জড়িত তাদেরকে আমরা চিহ্নিত করেছি, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছি। কাউকে ছাড় দেয়া হচ্ছে না।
তিনি যেকোনো ঘটনা ঘটার সাথে সাথে দ্রুততম সময়ে পুলিশকে জানানোর জন্য সকলের প্রতি আহবান জানান। তিনি বলেন, এক্ষেত্রে নিকটস্থ পুলিশ ইউনিট অথবা জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ এ কল করুন, আমরা দ্রুত ব্যবস্থা নিব।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত জঙ্গিবাদ-সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতিতে আমরা কাজ করছি। তিনি বলেন, র্যাব সুন্দরবনকে জলদস্যমুক্ত করার জন্য কাজ করেছে। প্রধানমন্ত্রী সুন্দরবনকে জলদস্যমুক্ত ঘোষণা করেছেন। তিনি বলেন, আত্মসমর্পণকারী জলদস্যুদের মধ্যে যারা স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে চেয়েছে তাদেরকে সুযোগ দেয়া হয়েছে।
আইজিপি বলেন, মাদকের বিরুদ্ধে আমরা সারা দেশে অভিযান পরিচালনা করছি এবং আমাদের যথেষ্ট সফলতা রয়েছে। তিনি বলেন, ইন্টারন্যাশনাল গ্লোবাল টেররিজম ইনডেক্সে পূর্বের অবস্থানের চেয়ে বর্তমানে বাংলাদেশের অবস্থা ভালো হয়েছে। তিনি বলেন, আমরা সবাই মিলে কাজ করার ফলেই এ সফলতা এসেছে। তিনি সন্তান কোথায় যায়, কি করে, কার সাথে মিশে সে ব্যাপারে খোঁজখবর রাখার জন্য অভিভাবকদের প্রতি আহবান জানান।
এর আগে আইজিপি কক্সবাজারে এপিবিএন’এ কর্মরত অফিসারদের সাথে মতবিনিময় করেন। তিনি ঘোনারপাড়া পুলিশ ক্যাম্প পরিদর্শন এবং সেখানে একটি গাছের চারা রোপন করেন।
পরে তিনি কক্সবাজার জেলা পুলিশ সুপারের সম্মেলন কক্ষে কক্সবাজারে কর্মরত অফিসারদের সাথে মতবিনিময় করেন। আইজিপি গতকাল সন্ধ্যায় ইউএনডিপি এবং ইউএনএইচসিআর প্রতিনিধিদলের সাথে বৈঠক করেন।
এপিবিএন’র অতিরিক্ত আইজিপি ড. হাসান উল হায়দার, অতিরিক্ত আইজিপি (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশন্স) মো. আতিকুল ইসলাম, চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি মো. আনোয়ার হোসেন, কক্সবাজার জেলার পুলিশ সুপার মো. মাহফুজুল ইসলাম এবং অন্যান্য কর্মকর্তাগণ আইজিপির সাথে ছিলেন।