বৈধপথে রেমিট্যান্স পাঠাতে সৌদি প্রবাসীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন রাষ্ট্রদূত ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী।
গতকাল সৌদি প্রবাসীদের উদ্দেশে এক ভিডিওবার্তায় তিনি বলেন, করোনা উত্তর পরিস্থিতিতে যখন আমাদের অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়াচ্ছিল সেসময় রাশিয়া–ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেল, গ্যাস, সারসহ বিভিন্ন প্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য বৃদ্ধিতে সারা বিশ্বের ন্যায় আমরাও আজ এক চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মত ইউরোপের বিভিন্ন দেশ, যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রেও মূল্যস্ফীতি প্রায় ৮ থেকে ১০ শতাংশে পৌঁছেছে। দেশের চাহিদা মেটাতে আমদানি ব্যয় মেটানোর জন প্রয়োজন হচ্ছে আগের তুলনায় অনেক বেশি পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা। বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে রপ্তানি আয়ের পাশাপাশি উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখছে প্রবাসীদের প্রেরিত রেমিট্যান্স। চলতি অর্থবছরের মে মাস পর্যন্ত প্রবাসীদের পাঠানো প্রায় ১৯,২০ কোটি ডলার রেমিট্যান্সের মধ্যে শুধুমাত্র সৌদি আরব প্রবাসীরা দেশে পাঠিয়েছেন ৪২০ কোটি ডলার।
দেশের অর্থনীতিতে আপনাদের এই গুরুত্বপূর্ণ অবদানের জন্য তিনি আন্তরিক ধন্যবাদ ও অভিনন্দন জানান।
প্রবাসীদের দেশে বৈধপথে রেমিট্যান্স পাঠাতে উৎসাহ দিতে সরকার ইতিপূর্বে রেমিট্যান্স এর ওপর ২ শতাংশ প্রণোদনা দিয়েছে, যা বর্তমানে ২ দশমিক ৫ শতাংশ করা হয়েছে। প্রবাসী যে কেউ এখন থেকে এক লক্ষ টাকা দেশে পাঠালে সাথে আরও দুই হাজার পাঁচশত টাকা প্রণোদনা হিসেবে পাবেন। ইতিপূর্বে ৫ লক্ষের অধিক টাকা প্রেরণ করলে প্রণোদনার টাকা পেতে হলে কিছু প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ব্যাংকে জমা দেয়ার বাধ্যবাধকতা ছিল, কিন্তু বর্তমানে যেকোন অংকের টাকা পাঠানো হোক না কেন, কোন কাগজপত্র জমা দেয়া ছাড়াই প্রণোদনার টাকা ব্যাংকে জমা হয়ে যাবে।
বৈধপথে ব্যংকিং চ্যানেলে রেমিট্যান্স পাঠালে তা দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ তথা ডলার রিজার্ভে জমা হয়। যা দিয়ে দেশের আমদানি ব্যয় ও অন্যান্য প্রয়োজন মেটানো হয়। দেশের অর্থনীতি গতিশীল হয়, শক্তিশালী হয়।
তিনি বলেন, বৈধপথে রেমিট্যান্স পাঠালে আপনার পরিবারের প্রয়োজন মেটানোর পাশাপাশি দেশের উন্নয়নে আপনার অবদান নিশ্চিত হয়। এছাড়া দেশে আপনার আয় বৈধ বলে বিবেচিত হয়। বর্তমান পরিস্থিতিতে দেশের আমদানি ব্যয় মেটানো ও দেশের অর্থনীতি গতিশীল রাখার লক্ষ্যে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বৃদ্ধি অত্যন্ত জরুরী। তাই দেশের এ প্রয়োজনীয় পরিস্থিতিতে বৈধপথে তথা ব্যাংকিং চ্যানেলে দেশে অর্থ পাঠানোর জন্য রাষ্ট্রদূত আহবান জানান।
ড. জাবেদ পাটোয়ারী বলেন, জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলা বাস্তবায়ন ও প্রধানমন্ত্রীর ভিশন ২০৪১ তথা বাংলাদেশকে একটি উচ্চ আয়ের দেশে উন্নীত করার লক্ষ্যে আমরা যার যার অবস্থান থেকে এগিয়ে আসি। বৈধপথে দেশে রেমিট্যান্স প্রেরণ করে দেশের অর্থনীতিকে শক্তিশালী করি।