ব্যর্থ হয়েছেন পাকিস্তানের দুই ওপেনার, শান মাসুদ বাদে টপ-মিডল অর্ডারের বাকি কেউই পাননি বলার মত রান। বোলিংয়ে মোহাম্মদ ওয়াসিম-সাদাব খানের সহজ করে দেওয়া ১৩০ রানের লক্ষ্যও পেরোতে পারেনি পাকিস্তান। শেষ ওভারের রোমাঞ্চে বাবর আজমের দলকে এক রানে হারিয়ে দিয়েছে জিম্বাবুয়ে।
পার্থে বৃহস্পতিবার গ্রুপ ‘২’র ম্যাচটিতে শুরু থেকেই হাঁসফাস করছিল পাকিস্তানের ব্যাটাররা। ছোট লক্ষ্যে শেষ ১২ বলে ২২ রানের সমীকরণ মেলাতে খাবি খেয়েছেন ফেভারিট দলটি। টেলএন্ডার নওয়াজ-ওয়াসিমের জুটি শেষ পর্যন্ত হারের ব্যবধানই কমিয়েছে। ব্রাড ইভান্সের করা ২০তম ওভারে ১১ রানের সমীকরণে পাকিস্তান থেমেছে ৮ উইকেট হারিয়ে ১২৯ রানে।
ভারতের পর জিম্বাবুয়ের বিপক্ষেও ধুঁকেছে পাকিস্তানের ওপেনার। বাবর আজম ও মোহাম্মদ রিজওয়ান ছিল খোলশ আবৃত। পারেননি চারে নামা ইফতেখার আহমেদও। ১৪ বলে ১৭ রান করা সাদাব খান ফেরার পর আসিফ আলীর জায়গায় খেলা হায়দার আলী ফেরেন ডাক মেরে। টপ-মিডলের প্রতিপক্ষের ব্যর্থতার সারি ক্রমেই বড় করছিলেন সিকান্দার রাজারা।
দলীয় ১৩ রানে ব্যক্তিগত ৪ করে ফেরা বাবরের পর রিজওয়ান আনেন ১৪ রান। সর্বোচ্চ স্কোরার শান মাসুদ ফেরেন বোর্ডে যখন ৯৪ রান। ষষ্ঠ উইকেট হিসেবে ফেরার আগে শান খেলেন ৩৮ বলে ৪৪ রানের ইনিংস, ১১৫.৭৮ স্ট্রাইক রেটে ছিল তিনটি চারের মার। এরপর কিছুটা শিথীল হয় পাকিস্তানের ইনিংস।
সপ্তম উইকেটে ধুঁকতে থাকা পাকিস্তানকে জয়ের আশা দেখান টেলএন্ডাররা। নওয়াজ ও ওয়াসিমের ৩২ রানের জুটি টেনে দেয় শেষ ১২ বলে ২২ রানের সমীকরণে। শেষ পর্যন্ত যা থামে ৬ বলে ১১ রানে। কিন্তু পারেননি পাকিস্তানের ব্যাটাররা।
শেষ ওভারে ইভান্সের করা প্রথম বলে আসে ৩ রান। দ্বিতীয় বলে চার মেরে পথ আরও সহজ করেন ওয়াসিম। এরপরই নাটকের শুরু। রানআউট হতে হতে বেচে যান নওয়াজ। চতুর্থ বলে কোনো রানই নিতে পারেননি তিনি। পঞ্চম বলে আরভিনের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন। এক বলে প্রয়োজন ৩ রান। নাটকীয় ম্যাচটি শেষ বলে শাহিন শাহ আফ্রিদি পারেননি। স্কোর সমতা করতে গিয়ে বরং রান আউট হয়েছেন। কয়েকটি আইসিসির আসরে অংশ নিতে না পারা জিম্বাবুয়েও ঘটিয়ে দেয় অঘটন।
ব্যাট হাতে ব্যর্থ রাজা পুষিয়ে দেন বোলিংয়ে। ৪ ওভারে ২৫ রান খরচায় নেন তিন উইকেট। দুটি উইকেট নিয়েছেন শেষ ওভারের নায়ক ইভান্স। ম্যাচের সেরা খেলোয়াড় বনেছেন সিকান্দার রাজা।
এর আগে ওপেনিংয়ে দারুণ শুরু পাওয়া জিম্বাবুয়ে প্রথম ধাক্কা খায় পঞ্চম ওভারে। ১৯ বলে ১৯ রান করে ফেরেন আরভিন। শেষ পর্যন্ত অধিনায়কের ইনিংসটি দলের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান। ১৩ বলে ১৭ রান করা আরেক ওপেনার মাধেভেরেকে এলবির ফাঁদে ফেলেন মোহাম্মদ ওয়াসিম।
দলীয় পঞ্চাশ রান পেরোতে দুই উইকেট হারানো দল একশ পর্যন্ত যেতে হারায় আরও ৫ উইকেট। উইলিয়ামসের ২৮ বলে ৩১ রান বাদে মিল্টন, রাজা, চাকাভা, জঙ্গে কেউই পাননি দুই অঙ্কের দেখা। ১৫তম ওভারে সিকান্দার রাজা ও লুক জঙ্গেকে তুলে নিয়ে হ্যাটট্রিকের সম্ভাবনা জাগান ওয়াসিম। শেষদিকে রায়ান বুর্লের ১০ ও ব্র্যাড ইভান্সের ১৯ রানে ১৩০ পর্যন্ত যায় জিম্বাবুয়ে।
পাকিস্তানের হয়ে বল হাতে দুর্দান্ত দিন কাটানো ওয়াসিম ৪ ওভারে খরচ করেন ২৪ রান, রোডেশিয়ানদের ধসিয়ে নেন ৪ উইকেট। ২৩ রান দিয়ে শাদাব খান ফিরিয়েছেন ৩ জিম্বাবুইয়ান ব্যাটার। গতির খেল দেখানো হারিস রউফ ছিলেন যথেষ্ট কৃপণ, ৪ ওভারে ১ মেডেনে ১২ খরচায় তুলেছেন প্রতিপক্ষ অধিনায়ককে।