রাজধানীতে প্রথমবারের মতো আয়োজিত হলো ‘স্মার্ট বাংলাদেশ রান ২০২৪’ দৌড় প্রতিযোগিতা। ‘স্টেপ ইনটু দ্য ফিউচার: রান ফর মিশন ২০৪১’ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে এই প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছে এসপায়ার টু ইনোভেট-এটুআই এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ। সুস্থ-সবল নাগরিক তৈরিসহ স্মার্ট জাতি গড়ে তোলা ও মানুষের মধ্যে স্মার্ট বাংলাদেশের ভিশন ২০৪১ নিয়ে সচেতনতা ও উৎসাহ বাড়ানোর লক্ষ্যেই দৌড় প্রতিযোগিতার আয়োজন।
শুক্রবার হাতিরঝিলে জাঁকজমকভাবে উৎসবমুখর পরিবেশে আয়োজিত হয় এই দৌড় প্রতিযোগিতা। সকাল ৬টায় হাতিরঝিলের এম্ফিথিয়েটারের সামনের অংশ হতে শুরু হয়ে পুরো হাতিরঝিল ৭.৫ কিলোমিটার ঘুরে এম্ফিথিয়েটারে এসে দৌড় প্রতিযোগিতা শেষ হয়। ছেলে, মেয়ে, বয়স পঞ্চাশোর্ধ্ব, ও প্রতিবন্ধী ব্যক্তি- এই চার বিভাগে সবমিলিয়ে ২,০৪১ জন অপেশাদার দৌড়বিদ এতে অংশ নেন।
৭.৫ কিলোমিটার ক্যাটাগরিতে আলাদা আলাদা ইভেন্টে অংশ নেন নারী-পুরুষ ও ৫০ বছরের বেশি বয়সের দৌড়বিদরা। আর এক কিলোমিটার ক্যাটাগরিতে দৌড়ান প্রতিবন্ধী দৌড়বিদরা। চিপ টাইমিং সিস্টেমে ইভেন্টের বিজয়ী নির্ধারণ করা হয়। সকল দৌড়বিদদের রেস জার্সি ও মেডেল প্রদান করা হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ডাক, টেলিযোগাযোগ এবং তথ্য-প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, এমপি। দৌড় প্রতিযোগিতা শেষে তিনি এবং অন্যান্য অতিথিরা বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন। পুরস্কার বিতরণী শেষে ধারাবাহিকভাবে এই প্রতিযোগিতা আয়োজনের ঘোষণা দেন তিনি ডাক, টেলিযোগাযোগ এবং তথ্য-প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী।
চার বিভাগে সবমিলিয়ে ১৯ জন বিজয়ীকে আর্থিক পুরস্কার, সনদপত্র ও মেডেল প্রদান করা হয়। পুরুষ বিভাগে চ্যাম্পিয়ন হন মো. ইমরান হাসান, দ্বিতীয় হন তুফায়েল আহমেদ, তৃতীয় হন আশরাফুল আলম। চতুর্থ ও পঞ্চম হন যথাক্রমে দ্বীপ তালুকদার এবং পলাশ শেখ।
নারী বিভাগে চ্যাম্পিয়ন হন হামিদা আক্তার জেবা, দ্বিতীয় হন মোসাম্মদ সামিয়া, তৃতীয় হন সাদিয়া শাওলীন সিগমা। চতুর্থ ও পঞ্চম হন যথাক্রমে রিয়া আক্তার স্বর্ণা এবং হুমায়রা মনিশা।
পঞ্চাশোর্ধ্ব বিভাগে চ্যাম্পিয়ন হন মো. ওয়াহাব খান, দ্বিতীয় হন জসীম উদ্দীন, তৃতীয় হন আমিনুর রহমান। আর প্রতিবন্ধী ব্যক্তি বিভাগে ৩ ক্যাটাগরিতে (হুইল চেয়ার, দৃষ্টি প্রতিবন্ধী এবং শ্রবণ ও বাক প্রতিবন্ধী) যথাক্রমে চ্যাম্পিয়ন হন আবু রায়হান, শিহাব বিশ্বাস ও জান্নাতুল নাঈম এবং দ্বিতীয় হন তানভীর হোসেন, আলম দেওয়ান ও তানজিম হাসান।
স্মার্ট বাংলাদেশ রান ইভেন্টে অংশ নেয়া দৌড়বিদদের উদ্ভুদ্ধ করতে ৭.৫ কিলোমিটার বিভাগের দৌড়ে অংশ নিজেও নেন জুনাইদ আহ্মেদ পলক। ৬৮ মিনিটে দৌড় শেষ করেন প্রতিমন্ত্রী। পরে তিনি বলেন, ‘আমরা অদম্য জাতি। আমরা ৫২’এর ভাষা আন্দোলনে প্রমাণ করেছি, ৭১’এর মহান মুক্তিযুদ্ধে প্রমাণ করেছি। জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে আমরা মায়ের ভাষার মর্যাদা রক্ষা করেছি, আমরা স্বাধীন স্বার্বভৌম বাংলাদেশ নয় মাসের মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে অর্জন করেছি। আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যে রূপকল্প দিয়েছেন ২০৪১ সালের মধ্যে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে হবে, সেই লক্ষ্য পূরণের জন্য আমাদের তৈরি হতে হবে সুস্থ-সবল, প্রগতিশীল ও অসাম্প্রদায়িকতার মানসিকতা নিয়ে।’
প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, ‘স্মার্ট বাংলাদেশ হবে সকলের জন্য। সুস্থ স্বাভাবিক, বিশেষভাবে সক্ষম, নারী-পুরুষ, তৃতীয় লিঙ্গ সকলের জন্য আগামী দেশ কল্পনা করি। সকলকে উৎসাহ দিতে এই স্মার্ট বাংলাদেশ রান আয়োজন করা হয়েছে। আজকে যেমন ৭.৫ কিলোমিটার পেরিয়ে যাওয়ার জন্য লক্ষ্য ছিল ৭৫ মিনিট একইভাবে জননেত্রী শেখ হাসিনার স্মার্ট বাংলাদেশ লক্ষ্যপূরণের জন্য আমাদের সময় আছে ১৭ বছর। যার যার জায়গা থেকে দেশপ্রেমিক হিসেবে একজন উদ্ভাবনী, সমস্যার সমাধানকারী নাগরিক হিসেবে অবদান রাখার পাশাপাশি নিজেদের আমরা স্মার্ট নাগরিক হিসেবে তৈরি করবো। সুস্থ-সবল মেধাভিত্তিক স্মার্ট নাগরিকদের নিয়ে আমরা স্মার্ট বাংলাদেশ গড়বো।’