পেনাল্টি ইস্যুতে বিতর্ক হতে পারে, প্রশ্ন উঠতে পারে রেফারির ভূমিকা নিয়েও। ইংল্যান্ড অধিনায়ক হ্যারি কেনও আক্ষেপ করতে পারেন, সব হিসেব-নিকেশ ছাপিয়ে আল বাইত স্টেডিয়ামে জয় তুলেছে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ফ্রান্স। ২-১ গোলের রোমাঞ্চকর জয়ে সেমিতে জায়গা করে নিয়েছে দিদিয়ের দেশমের দল। যেখানে প্রতিপক্ষ মরক্কো।
প্রথম সেমিফাইনালের দুদল আগের দিনই জানা ছিল। নেদারল্যান্ডসকে হারিয়ে আসা আর্জেন্টিনা লড়বে ব্রাজিলকে বিদায় করে দেয়া ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে। তৃতীয় কোয়ার্টারে রোনালদোদের কাঁদিয়ে শেষ চারে ওঠা মরক্কোর বিপক্ষে টানা দ্বিতীয় ফাইনালের টিকিট কাটতে লড়বে এমবাপে-লরিসদের ফ্রান্স।
শনিবার রাতে চতুর্থ কোয়ার্টারে সমানে সমান লড়েছে ইংল্যান্ড-ফ্রান্স। ৫২ শতাংশ বল দখলে রেখে সাউথগেটের শিষ্যরা নিয়েছেন ১১টি শট, যার আটটিই ছিল গোলমুখে। কেন-সাকাদের আক্রমণ ঠেকিয়ে পাসমার্ক তুলেছেন ফ্রান্স গোলরক্ষক লরিস। ফ্রান্সও কম যায়নি, ৯টি শটের পাঁচটি লক্ষ্যে রাখে ফরাসিরা।
দেশমের দল এদিন এগারো মিনিটেই এগিয়ে যেতে পারত, সেখানে নায়কোচিত সেভ করেন ইংলিশ গোলরক্ষক পিকফোর্ড। জিরুদের শট দুর্দান্তভাবে ঠেকিয়ে স্কোরলাইন অক্ষত রাখেন। বেশি সময় অবশ্য অপেক্ষা করতে হয়নি ফরাসিদের। ১৭ মিনিটে শুয়ামেনির দূরপাল্লার দ্রুতগতির শট রুখতে পারেননি পিকফোর্ড। এমবাপের কাউন্টার অ্যাটাকে দুর্দান্ত গতিতে বলের নিয়ন্ত্রণ নেন গ্রিজম্যান, খুঁজে নেন শুয়ামেনিকে, ভুল করেননি তরুণ ফরাসি।
শুয়ামেনির এটি বিশ্বকাপে প্রথম গোল। দেশমের শিষ্যরা প্রথমার্ধে আরও কয়েকটি সুযোগ তৈরে করে, কিন্তু জালে বল জড়াতে পারেননি। উল্টো ২২ মিনিটে গোল পেতে পারত ফ্রান্স, অধিনায়ক লরিসকে গোলপোস্টের নিচে একাকী পেয়েও জাল খুঁজে পাননি ইংলিশ অধিনায়ক কেন। ৩৯ মিনিটে অপেক্ষাকৃত সহজ সুযোগ মিস করে আক্ষেপ আনেন কাইলিয়ান এমবাপে।
পিছিয়ে থেকে বিরতি শেষে খেলার গতি বাড়ায় ইংল্যান্ড। আক্রমণের ফলও মেলে দ্রুত। ৪৮ মিনিটে বেলিংহ্যামের শট কোনোমতে ঠেকিয়ে দেন লরিস। কিন্তু ৫২ মিনিটে ইংল্যান্ডের পাওয়া পেনাল্টি রুখতে পারেননি। বক্সের ভেতরে ঢুকে যাওয়া সাকাকে বাজেভাবে ট্যাকল করেন শুয়ামেনি। সফল স্পট কিক থেকে ইংল্যান্ডকে সমতায় ফেরান কেন।
ম্যাচের ৭৭ মিনিটে ব্রিটিশদের বাজে রক্ষণের ফাঁক গলে যান জিরুদ। দারুণ শটও নেন, আরেকবার ইংলিশদের ত্রাতা হন পিকফোর্ড। এর এক মিনিট পর জিরুদকে আর রুখতে পারেননি ইংলিশ গোলরক্ষক। গ্রিজম্যানের কর্নার কিক থেকে ইংল্যান্ড ডিফেন্ডারের গায়ে লেগে আসা বল জিরুদ রাখেন লক্ষ্যে, দুর্দান্ত এক হেডে লিড বাড়িয়ে নেন ফ্রান্সের।
খেলার ৮৪ মিনিটে সুযোগ আসে সমতা করার। কিন্তু পেনাল্টি থেকে গোল করতে ব্যর্থ হন কেন। দুই মিনিট আগে মাউন্টকে ফাউল করে বসেছিলেন থিও। রেফারি পেনাল্টি না দিলে জোরাল আবেদন করেন ইংলিশরা। ভিএআরের সাহায্য নিয়ে পেনাল্টি আসলেও শেষঅবধি সেটি কাল হয়ে দাঁড়ায় ইংল্যান্ডের। কেন হতাশায় ডোবান।
নির্ধারিত সময়ের পর আট মিনিট খেলা চলেছে। গোল শোধ দিতে পারেনি ইংল্যান্ড। কান্নাভেজা চোখে ছাড়তে হয়েছে মাঠ। ২-১এ জয় ছিনিয়ে সেমিফাইনালে পৌঁছে যায় বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা, ফাইনালের পথে যেখানে বাধা অ্যাটলাস পর্বতের সিংহ হয়ে ওঠা মরক্কো।