ঈদে ১০৭ সিনেমা হলে মুক্তি পেয়েছে সুপারস্টার শাকিব খান অভিনীত হিমেল আশরাফের ছবি ‘প্রিয়তমা’। এই ছবিতে রয়েছে ‘ঈশ্বর’ নামের একটি গান। যে গানটির মাধ্যমে ৯ বছর পর চলচ্চিত্রের গানে সুর সংগীতে ফিরলেন কিংবদন্তী সুরকার প্রিন্স মাহমুদ।
সিনেমা মুক্তির দিনে প্রকাশ পেয়েছে গানটিও। গানের কথা লিখেছেন ‘ঘুড়ি তুমি কার আকাশে ওড়ো’ খ্যাত সোমেশ্বর অলি। গানটি গেয়েছেন রিয়াদ। প্রকাশের এক দিনেই গানটি বেশ সুনার কুড়িয়েছে!
শুধু বাংলাদেশ নয়, ভারতীয়রাও গানটি শুনে মুগ্ধতা প্রকাশ করছেন। গানটি দেখে তারা ‘প্রিয়তমা’ ছবিটি দেখতেও আগ্রহী হয়েছেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পরিচালককে উদ্দেশ্য করে বলছেন ‘প্রিয়তমা’ যেন ভারতে মুক্তি দেয়া হয়!
হিমেল আশরাফ জানান, আগামী ৭ জুলাই আমেরিকা ও কানাডায় মুক্তি দেয়া হচ্ছে ‘প্রিয়তমা’। পর্যায়ক্রমে মধ্যপ্রাচ্য, ইউরোপ, অস্ট্রেলিয়া, মালয়েশিয়া, ভারতসহ অনেক দেশে মুক্তি দেয়া হবে।
পরিচালক হিমেল আশরাফ খুব করে চেয়েছিলেন প্রিয়তমায় প্রিন্স মাহমুদের একটি গান থাকুক। চ্যানেল আই অনলাইনকে প্রিন্স মাহমুদ বলেন, হিমেল আমাকে এমনভাবে গানটি করার কথা বলছে ওর কথাগুলো আমাকে ইমোশনাল করে দেয়। গল্পটা এত চমৎকারভাবে শোনায় আমি গল্পে ঢুকে যাই। অলি খুব সহজভাবে গানটা লিখেছে। তাছাড়া ছবি গল্পকার প্রয়াত ফারুক হোসেন আমার পরিচিত। সবকিছু মিলিয়ে আমি আর না করতে পারিনি।
প্রিন্স মাহমুদ বলেন, এই সিচুয়েশনের গানগুলো অনেকে বানায় কিন্তু কেন জানি একই রকম লাগে। আমি একটু ভেবে নিজের মত করে সুর এনেছি। বেশী বেশী মায়া বাড়াতে চেয়েছি। কারণ সুরে মায়া তৈরি না হলে সে গান দর্শকদের হৃদয় ছুঁয়ে যায় না। তাছাড়া এই গানটি কিন্তু নগর কেন্দ্রিক না। সব অঞ্চলের মানুষ এই গান রিলেট করতে পারবে এবং প্রকাশের পর তাই হচ্ছে। গানটা যখন তৈরি করি শাকিব তার ব্যক্তিগত জীবনে ঝামেলার মধ্যে যাচ্ছিল। আমার বারবার মনে হচ্ছিল ‘ঈশ্বর’ গানটা যখন শুনবে মানুষ তখন যেন এ গানের মাধ্যমে শাকিবের প্রতি দর্শকদের মায়া জন্মায়।
সোমেশ্বর অলির লেখা বিভিন্ন গান প্রশংসিত হয়েছে, পেয়েছে জনপ্রিয়তা। বিশেষ করে তার লেখা ঘুড়ি তুমি কার আকাশে ওড়ো এবং রূপকথার জগতে গান দুটি সবার মুখে মুখে শোনা যায়। নতুন করে তিনি ঈশ্বর গানটি লিখে ভূয়সী প্রশংসা পাচ্ছেন।
তিনি বলেন, ঈদুল ফিতরের ছুটিতে হিমেল আশরাফ আমাকে ‘প্রিয়তমা’র গল্প শুনিয়েছিলেন। গল্পের পরিস্থিতিটা এমন যে, কাউকে দোষারোপ করে নয়, নিয়তি তাড়িত একটা বিচ্ছেদ ঘটেছে। কী ঘটেছে সেটাও অজানা। পরিচালক বলেননি আমাকে। ‘ঈশ্বর কী তোমার-আমার মিলন লিখতে পারতো না’, এই লাইনটা আগে থেকেই আমার লেখা ছিল। বাকি কথাগুলো গল্পের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে লিখে ফেলি। কোরাস লাইনটা নিয়ে আমার উচ্ছ্বাস ছিল। এরপর ৫-৭ দিনের মধ্যে লিরিকটা নির্মাতাকে দেই। জানলাম যে, ছবির সংশ্লিষ্ট সবাই লিরিকটা পছন্দ করেছেন। হিমেল আশরাফ আগেই বলেছিলেন, প্রিন্স ভাই (প্রিন্স মাহমুদ) এর সুর-সংগীত করবেন। তারপর তো ডেমোও শুনলাম। বেশ ভালো লাগল। তারপর রিলিজ হলো।
সোমেশ্বর অলি আরও বলেন, কয়েক মাস ধরেই আমি গান লেখালেখি নিয়ে এক প্রকার চিন্তিত ও বিরক্ত অবস্থায় ছিলাম। কারণ হিসেবে বলা যায়, সবকিছু ঠিক ব্যাটে-বলে হচ্ছিল না। কোথায় যেন কমতি, ঘাটতি থেকে যাচ্ছে! এ অবস্থায় কিছু কিছু কাজ করা থেকে বিরতও ছিলাম। এমন সময়েই ‘ঈশ্বর’ গানটি লেখার প্রস্তাব আসে। রিলিজের পর কিছুটা স্বস্তিবোধ করছি। সবার এত এত রেসপন্স! প্রায় সবই ইতিবাচক। এটা তো বেশ ভালো লাগার ব্যাপার। আমি গানটার নাম দিয়েছি ‘বিষাদগীতি’। প্রিন্স ভাইয়ের ভাষায়, চারদিকে কষ্ট উদযাপন করছে সবাই।