নারীর প্রতি সব ধরণের নির্যাতন ও সহিংসতা প্রতিরোধ ও বন্ধের উদ্দেশ্যে সচেতনতা তৈরী করার লক্ষ্যে বাংলাদেশ জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতি প্রতি বছরের ন্যায় এ বছর নারী নির্যাতন প্রতিরোধ পক্ষ পালন করছে।
এর ধারাবাহিকতায়বাংলাদেশ জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতি ও জেন্ডার প্ল্যাটফর্ম বাংলাদেশের উদ্যোগে ১০ ডিসেম্বর “বিশ্ব মানবাধিকার দিবস ২০২৩” উপলক্ষ্যে বাংলাদেশ জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতির (বিএনডব্লিউএলএ) এর সভা কক্ষে “নারীর মুক্তি, সমতা ও আইনের অধিকার রক্ষায় যৌন হয়রানী ও সহিংসতা প্রতিরোধ শীর্ষক আলোচনা সভার আয়োজন আয়োজন করে।
বাংলাদেশ জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি এডভোকেট সালমা আলীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উক্ত আলোচনা সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিএনডব্লিউএলএ এর প্রতিনিধি রাফাতুর রহমান রুবা।
এডভোকেট সালমা আলী বলেন, আমাদের দেশে খুবই ভালো ভালো আইন রয়েছে, কিন্তু এদের সঠিক বাস্তবায়ন হচ্ছেনা, পাশাপাশি বাংলাদেশের সংবিধানে মানবাধিকার সংক্রান্ত যে সকল আর্টিকেল যেমন, আইনগত অধিকার, মতামত প্রকাশের অধিকার, স্বাধীনভাবে চলাফেরার অধিকার ইত্যাদি রয়েছে তার সঠিক বাস্তবায়ন জরুরী।
ভুক্তভোগীকেন্দ্রিক সাপোর্ট সার্ভিস নিশ্চিত করা, সাক্ষী সুরক্ষা নিশ্চিতের জন্য আলানা আইন করা এবং তা বাস্তবায়নে দক্ষ জনবল নিয়োগ করা। যৌন হয়রানী প্রতিরোধে কর্মক্ষেত্রে এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কমিটিগুলোকে কার্যকরী করা। নিয়মিত তদারকির জন্য দক্ষ ও নিরপেক্ষ টিম গঠন করার উপর জোর দেন।
ফেয়ার ওয়ার ফাউন্ডেশন এর প্রতিনিধি আশফিক রহমান বলেন, যৌন হয়রানী প্রতিরোধে মাননীয় হাইকোর্টের দেয়া নির্দেশিকা অনুসারে প্রতিটি কর্মক্ষেত্র এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যৌন হয়রানি প্রতিরোধ কমিটি গঠন করার কথা থাকলেও তা এখনও পুরোপুরি বাস্তবায়ন হয়নি যা এখন সময়ের দাবি। তিনি সকল ক্ষেত্রে নারীদের অংশগ্রহণ বৃদ্ধির প্রতি গুরুত্ব প্রদান করেন। উক্ত আলোচনা সভায় জেন্ডার প্লাটফর্ম বাংলাদেশ ও বিভিন্ন এনজিও প্রতিনিধি, আইনজীবী, সাংবাদিক উপস্থিত থেকে নারীর মুক্তি, সমতা ও আইনের অধিকার রক্ষায় যৌন হয়রানী ও সহিংসতা প্রতিরোধে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ পদান করেন।
নারীর মুক্তি, সমতা ও আইনের অধিকার রক্ষায় যৌন হয়রানী ও সহিংসতা প্রতিরোধ বাংলাদেশ আতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতি ও জেন্ডার প্লাটফর্ম বাংলাদেশ এর সুপারিশ সমূহ:
- আমাদের দেশে খুবই ভালো ভালো আইন রয়েছে, কিন্তু এদের সঠিক বাস্তবায়ন হচ্ছেনা, পাশাপাশি বাংলাদেশের সংবিধানে মানবাধিকার সংক্রান্ত যে সকল আটিকেল রয়েছে তার বাস্তবায়ন ভুক্তোভোগীকেন্দ্রিক সাপোর্ট সার্ভিস নিশ্চিত করা।
- স্বাক্ষী সুরক্ষা নিশ্চিতের জন্য আলাদা আইন করা এবং তা বাস্তবায়নে দক্ষ জনবল নিয়োগ করা।
- পারিবারিক আইন বাস্তবায়নে নারী বান্ধব মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা নিয়োগ করা।
- যৌন হয়রানি প্রতিরোধে একটি আইন প্রণয়নের পাশাপাশি, সমস্ত কর্মক্ষেত্রে যৌন হয়রানি প্রতিরোধ ৫৯১৬/২০০৮ রিট পিটিশন নং ৫১১৯/২০০৮-এ যৌন হয়রানি প্রতিরোধের বিষয়ে ২০০৯ সালে মাননীয় হাইকোর্টের দেওয়া নির্দেশিকা অনুসারে প্রতিটি কর্মক্ষেত্র এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে একটি যৌন হয়রানি প্রতিরোধ কমিটি গঠন করা। কর্মক্ষেত্রে এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কমিটিগুলোকে কার্যকরী করা। নিয়মিত তদারকির জনা দক্ষ-ও নিরপেক্ষ টিম গঠন করা।
- একটি জবাবদিহিমূলক ব্যবস্থাপনা প্রতিষ্ঠার জন্য সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগ এবং সাংগঠনিক স্তর থেকে প্রক্রিয়া পর্যবেক্ষণ করা।
- আইন কমিশন যৌন হয়রানি প্রতিরোধের জন্য বাংলাদেশ দণ্ডবিধির ৫০৯ ধারায় কিছু সংশোধন করেছে, কিন্তু তারা এখনও এই বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ নেয়নি।