
লক্ষ্মীপুরে সজীবের হত্যাকাণ্ড কোনো রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ড নয় বলে দাবি করেছেন লক্ষ্মীপুর জেলার পুলিশ সুপার মোঃ মাহফুজ্জামান আশরাফ। তিনি বলেন, লক্ষ্মীপুর জেলায় বিএনপির পদযাত্রা কর্মসূচির আগে সম্পূর্ণ ভিন্ন একটি স্থানে সংঘটিত হত্যাকাণ্ডটি ব্যক্তিগত দ্বন্দ্বের কারণে হয়েছে।
১৯ জুলাই (বুধবার) এক বিবৃতিতে পুলিশ সুপার এ দাবি জানিয়েছেন।
পুলিশ সুপার মোঃ মাহফুজ্জামান আশরাফ বলেন, বিএনপি কর্তৃক দাবিকৃত সজীব নামক এক ব্যক্তির হত্যাকাণ্ডের যে ঘটনা ঘটেছে, প্রাথমিক অনুসন্ধানে তার কোনো সত্যতা পাওয়া যায়নি। ঘটনাটির প্রকৃত সত্য উদঘাটনে রাত দেড়টায় হত্যাকাণ্ডের স্থানে গিয়ে ঘটনার সিসি ক্যামেরা ফুটেজে দেখা যায়, সজীব এর মৃত্যু এবং ভাড়াটিয়া মোঃ নোমান হোসেনের সাথে সজীবের শেষ মুহুর্তে কিছু কথা হয়।
তিনি আরও বলেন, প্রকৃত ঘটনা হলো, বিএনপির সাথে পুলিশের যে স্থানে সংঘর্ষ হয়, সেখান থেকে হত্যাকাণ্ডের স্থানের দূরত্ব আনুমানিক ২ থেকে ২.৫ কিমি। বিএনপির পদযাত্রার রুটের সম্পূর্ণ বিপরীতে মূল সড়ক থেকে দেড়শ গজ দূরে কলেজ রোডের পাশে ফিরোজা টাওয়ারের গলির মুখে ৪/৫ জন ছেলে সজীবকে উপর্যুপরি ছুরিকাঘাত করতে থাকে। একপর্যায়ে সজীব নিজেকে বাচাঁতে দৌঁড়ে ফিরোজা টাওয়ারের এসএস গেট দিয়ে ভেতরে ঢুকে দোতলায় সিড়ি দিয়ে উঠে নোমান হোসেনের পাশের ফ্লাটের দরজার সামনে বসে শুয়ে পড়েন।

ভাড়াটিয়া নোমান মুমূর্ষু অবস্থায় থাকা সজীবের নাম ঠিকানা জিজ্ঞেসসহ আজকের রাজনৈতিক প্রোগ্রামে এসেছে কিনা, জিজ্ঞেসা করলে সজীব কোনো প্রোগ্রামে আসেনি বলে জানায় বলে উল্লেখ করেছেন লক্ষ্মীপুর জেলার পুলিশ সুপার। সজীবকে আঘাত করার কারণ হিসেবে পাওনা টাকা এবং বিবাহ সংক্রান্ত কারণে হামলার ঘটনা ঘটেছে বলে ভাড়াটিয়া নোমানের সূত্রে তিনি জানান।
পুলিশ সুপার আরও বলেন, প্রাথমিক অনুসন্ধানে, হত্যাকাণ্ডের সাথে বিএনপির পদযাত্রা কর্মসূচির কোনো সত্যতা নেই। এটি সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন একটি ঘটনা।
নোমান ও তার ছেলে সেসময় সজীবের রক্তার্ত দেহের পাশে থেকেই ৯৯৯ নম্বরে কল করলে পুলিশ কল রেসপন্স করলেও বিএনপির সাথে সংঘর্ষ চলাকালীন সেসময় তাৎক্ষণিকভাবে সেখানে যাবার মতো কোনো পরিস্থিতি ছিলো না বলেও জানান জেলার শীর্ষ পুলিশ কর্মকর্তা। তিনি আরও জানান, ভাড়াটিয়া নোমান সেসময় কয়েকটি অ্যাম্বুলেন্স মালিককে কল করলেও অস্থিতিশীল পরিস্থিতি ও রাস্তা অবরুদ্ধ থাকার কারণে তারাও আসতে অপরাগতা প্রকাশ করেছিল।
বিজ্ঞাপন
জ্বালাও-পোড়াও-ভাংচুর কর্মকাণ্ড নিয়ন্ত্রণ করে পুলিশ দ্রুতসম্ভব ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ হাসপাতালে নিয়ে আসে বলে জানান পুলিশ সুপার।
বিএনপি সম্পূর্ণ পরিকল্পিত ও উদ্দেশ্যমূলকভাবে রাজনৈতিক ফায়দা নিতে এ হত্যাকাণ্ড নিয়ে প্রচার চালাচ্ছে বলে অভিযোগ করেন লক্ষীপুর জেলার পুলিশ সুপার। ভিন্ন একটি ছবি দিয়ে লক্ষ্মীপুরে বিএনপি কর্মীকে হত্যা করা হয়েছে মর্মে যে গুজব ছড়িয়েছিল, তার সত্যতা পাওয়া যায়নি বলেও দাবি করেন তিনি।
ভাড়াটিয়া নোমানের ভাষ্যে পাওয়া মুমূর্ষু অবস্থায় সজীবের কাছ থেকে পাওয়া তথ্য যাচাই করা হচ্ছে বলে জানান পুলিশ সুপার মোঃ মাহফুজ্জামান আশরাফ।
বিজ্ঞাপন