রেফারির শেষ বাঁশি বাজার তখনো পাঁচ মিনিট বাকি। মাঠ থেকে ডিফেন্ডার জেরার্ড পিকেকে তুলে নেন বার্সেলোনা কোচ জাভি হার্নান্দেজ। এ সময় আসন ছেড়ে দাঁড়িয়ে পড়ে ন্যু ক্যাম্পের সব দর্শক। অশ্রুচোখে সতীর্থদের সঙ্গে আলিঙ্গন করে মাঠ ছাড়েন পিকে। ক্যারিয়ারে এটিই ছিল তার শেষ ফুটবল ম্যাচ।
ম্যাচের পর পিকেকে সতীর্থরা শূন্যে ছুঁড়ে উদযাপন করেছেন। গ্যালারিতে উপস্থিত ৯২,৬০৫ দর্শকের অভিবাদনের জবাব দেন ৩৫ বর্ষী তারকাও।
কিংবদন্তির বিদায়ী ম্যাচে হতাশ করেনি বার্সেলোনা। লা লিগায় আলমেরিয়াকে ২-০ গোলে হারিয়ে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে উঠে গেছে। ১৩ ম্যাচে ৩৪ পয়েন্ট নিয়ে টপার তারা। এক ম্যাচ কম খেলা রিয়াল মাদ্রিদের পয়েন্ট ৩২।
শনিবার রাতে ম্যাচের প্রথমার্ধ গোলশূন্য ছিল। সপ্তম মিনিটে পেনাল্টি থেকে গোল করতে ব্যর্থ হন রবার্ট লেভান্ডোভস্কি। তার শট বাঁ-পাশের পোস্টে লেগে ফিরে আসে।
বিরতির পর ৪৮ মিনিটে সার্জিও বুসকেটসের পাসে বল নিয়ে বাঁ-পায়ের শটে বার্সাকে এগিয়ে দেন উসমানে ডেম্বেলে। ১৪ মিনিট পর ব্যবধান দ্বিগুণ করেন ফ্রেঙ্কি ডি ইয়ং।
ম্যাচ শেষে পিকে বলেছেন, ‘আমি এখানে (বার্সেলোনা) জন্মেছি এবং এখানেই মরব। যখন আপনি বড় হন, বুঝতে পারেন যে কখনও কখনও প্রেম করতে হয় ছেড়ে দেয়ার জন্য। আমি নিশ্চিত, ভবিষ্যতে আবার এখানে আসব। বার্সাকে ভালোবাসি। সেজন্যই মনে করি, এটা চলে যাওয়ার সঠিক মুহূর্ত। এটা বিদায় নয়।’
২০১৮ সালে রাশিয়া বিশ্বকাপের পর পিকে আন্তর্জাতিক ফুটবল থেকে অবসর নিয়েছেন। স্পেনের হয়ে ১০২ ম্যাচ খেলে করেছেন ৫ গোল।
১৯৯৭ সালে বার্সেলোনার যুব একাডেমিতে ১০ বছর বয়সে যোগ দিয়েছিলেন। ২০০৪ সালে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের মূল দলে সুযোগ পান। ২০০৬-০৭ সালে ধারে রিয়াল জারাগোজাতে খেলার পর ২০০৮ সালে আবারও ঠিকানা হয় বার্সেলোনা।
কাতালান ক্লাবটির হয়ে ৬১৫ ম্যাচ খেলে ৫২ গোল করেছেন তারকা ডিফেন্ডার। ইউরোপিয়ান কাপের ট্রেবল ছাড়াও, বার্সেলোনাকে আটটি লা লিগা শিরোপা এবং সাতটি কোপা ডেল রে মুকুট জেতাতে ভূমিকা রেখেছেন। তিনবার চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জয়ের স্বাদও পেয়েছেন। সবমিলিয়ে তার রয়েছে ৩০টি মেজর ট্রফি।