একুশে পদকপ্রাপ্ত বরেণ্য আলোকচিত্রী পাভেল রহমানের রত্নাগর্ভা মা মতিজা রহমান মারা গেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।
মঙ্গলবার বিকালে রংপুরের নিজ বাসভবনে বার্ধক্যজনিত কারণে তিনি ইন্তেকাল করেন।
তার মৃত্যুতে সাহিত্য সংস্কৃতি সামাজিক সংগঠন ‘ফিরেদেখা’ পরিবার শোকা প্রকাশ করেছে।মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৯২ বছর।
পাভেল রহমান ১৯৫৬ সালের ২৬ এপ্রিল রংপুরে জন্ম গ্রহণ করেন। যশোর জিলা স্কুলে পড়ার সময়ই হাতে তুলে নিয়েছিলেন ক্যামেরা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ডিগ্রি লাভের আগেই পেশাদার আলোকচিত্রী হিসেবে কৃতিত্বের সঙ্গে কাজ করতে থাকেন জাতীয় সংবাদ মাধ্যমে। তরুণ বয়সেই পাভেল রহমানের তোলা শোবার ঘরে সাধারণ বেশে শেখ মুজিবুর রহমানের ছবিটি অবিস্মরণীয় হয়ে আছে। ক্রমশ মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী নানা গণ-আন্দোলনের চিত্র-ভাষ্যকার হয়ে ওঠেন পাভেল রহমান।
নব্বইয়ের স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে মৃত্যুর আগ মুহূর্তে নূর হোসেনের ছবিটি গণঅভ্যুত্থানের প্রতীক হয়ে ওঠে। আন্দোলন সংগ্রামের পাশপাশি ঘূর্ণিঝড়, বন্যা, লঞ্চডুবিসহ জনজীবনের নানা ছবিতে তিনি দেশের সাধারণ মানুষের অনন্য মুখচ্ছবি ফুটিয়ে তুলেছেন। তার ক্যামেরায় ভিন্ন মাত্রা পায় অনেক চিরচেনা বিষয়ও।
পেশাগত জীবনে দেশের শীর্ষস্থানীয় পত্র-পত্রিকার পাশাপাশি অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস, ফটো এজেন্সি গামা, এশিয়া উইক, কলকাতার দ্যা স্টেটসম্যান ও আনন্দবাজার পত্রিকাসহ নানা সংবাদ সংস্থার ফটোসাংবাদিক হিসেবে কাজ করেছেন।
বিভিন্ন সময়ে দেশ-বিদেশের নানা গুরুত্বপূর্ণ অ্যাসাইনমেন্ট কাভার করেছেন, ছবি তুলেছেন নানা দেশের রাষ্ট্রপ্রধান ও বিশ্ব নেতৃবৃন্দের। নানা ঘটনায় তার তোলা ছবিতে প্রচ্ছদ হয়েছে বিশ্বের খ্যাতনামা পত্রিকা-সাময়িকীতে।
আন্তর্জাতিক অঙ্গনে শ্রেষ্ঠ আলোকচিত্র সাংবাদিকের পুরষ্কারসহ নানা পুরষ্কারে ভূষিত হয়ে দেশের জন্যও তিনি সম্মান বয়ে এনেছেন। জাতিসংঘসহ দেশ-বিদেশের বহু স্থানে পাভেল রহমানের ছবির প্রদর্শনী হয়েছে। বাংলাদেশের আলোকচিত্র অঙ্গনে পাভেল রহমান এক উজ্জ্বল নাম।