নিজেকে ভুক্তভোগীর বাবা পরিচয় দিয়ে দীর্ঘ স্ট্যাটাস দিয়েছেন চিত্রনায়ক ওমর সানী। সেই স্ট্যাটাসে তিনি দাবী করেন, তার একমাত্র ছেলে ফারদিন এহসান প্রতারণার শিকার হয়েছেন!
বিট কয়েন এবং ক্রিপ্টো কারেন্সির মাধ্যমে এক ব্যক্তির সঙ্গে পরিচয়ের পর ২ কোটি ৫ লাখ টাকার লেনদেন করে প্রতারিত হয়েছেন ফারদিন। মূলত এমন অভিযোগ তুলেই নিজেকে ভুক্তভোগীর বাবা পরিচয় দিলেন অসংখ্য সুপারহিট ছবির এই নায়ক।
ছেলের প্রতারিত হওয়ার ঘটনা ফেসবুকে তুলে ধরে গণমাধ্যম ও আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সাহায্য চেয়েছেন ওমর সানী ও তার ছেলে। মূলত ফারদিনের আনা অভিযোগটিই নিজের ফেসবুকে শেয়ার করেছেন ওমর সানী।
ফারদিন জানিয়েছেন, গত বছরের মাঝামাঝি সময়ে নিশাত বিন জিয়া রুম্মান নামে এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে তার পরিচয় হয়। পরিচয়ের চার মাস পর সেই ব্যক্তি ব্যবসায়ের কথা বলে ফারদিনের কাছ থেকে পুঁজি হিসেবে টাকা ধার নেয়। কয়েকধাপে ফারদিন তাকে ২ কোটি ৫ লাখ ৭০ হাজার টাকা দেন। এ টাকাগুলো তিনি তাকে দিয়েছেন বিট কয়েন এবং ক্রিপ্টো কারেন্সির মাধ্যমে। পরে ফারদিন খোঁজ নিয়ে দেখেন, নিশাত নামে সেই ব্যক্তির কোন ব্যাংক অ্যাকাউন্ট নেই, এমনকি ব্যবসায়ের বৈধ ট্রেড লাইসেন্সও নেই। এরপর তার কাছে টাকা ফেরত চাইলে তিনি দিতে অস্বীকৃতি জানান।
ফারদিন বলেন, আমি ধাপে ধাপে তাকে ব্যবসায়িক বিনিয়োগে ধার হিসেবে ২ কোটি ৫ লাখ ৭০ হাজার টাকা প্রদান করেছি। তার বিপরীতে তাকে বলেছি যে আমাকে সিকিউরিটি হিসেবে আমার বিনিয়োগ মূল্যের ব্যাংকের চেক প্রদান করতে হবে এবং সেই চেক প্রদান করে সে আমার থেকে চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে পুরো টাকা বুঝে নেন। কিন্তু একমাস যেতে না যেতেই তার বিভিন্ন বাহানা শুরু হয়।
ফারদিন আরও বলেন, একজন ব্যবসায়ীর সঙ্গে আরেকজন ব্যবসায়ীর এটি একটি ব্যবসায়িক চুক্তি। প্রথমমাসে আমিসহ সবাইকেই চুক্তি মোতাবেক অর্থ প্রদান করলেও তারপর থেকে শুরু হয় বিভিন্ন বাহানা। অধিক অর্থ লাভের লোভে কোন অ্যাপ্স বা সফটওয়্যারে কোনো টাকা দেওয়া হয়নি।
“আমি এবং তার পাশাপাশি আরও যারা ভুক্তভোগী আছেন সকলেই তাকে একজন স্বনামধন্য ব্যবসায়ী এ এল এম জিয়াউল হকের ছেলে নতুন একটি ব্যবসা করতে চাচ্ছে সেই সুবাদেই অর্থ বিনিয়োগ করে। যখন এই ছেলে আমাকে এবং অন্যদেরকে টাকা দিতে ব্যর্থ হন তখন তার বাবার সাথে আমরা দেখা করলে তার বাবা আমাদেরকে আস্তে আস্তে টাকা দিয়ে দিবেন বলে আশ্বাস দেন। তারপর গোপন সূত্রে আমি জানতে পারি, তারা সবাইকে একই কথা বলে সবার থেকে কিছু সময় আদায় করে নিচ্ছিলেন। তার বাবা আমার কাছে পাঁচদিনের সময় চেয়েছিলেন। তিনি সুইজারল্যান্ডে যাবেন সেখান থেকে এসে আমার সঙ্গে মিটিং করার কথা থাকলেও আজও তা হয়নি। বিভিন্ন সময় তার কাছে আমার টাকা ফেরত চাইতে গিয়ে আমাকে এবং আমার অফিসের কর্মচারীদের হয়রানির শিকার হতে হয়। কিন্তু আমরা যখন আমাদের টাকা চাচ্ছি তখন তিনি তার পার্টনার সাহিল মোস্তাভি এবং তার স্ত্রী আফরা বাসনিন (যিনি এই পুরো SCAM এর মধ্যে জড়িত) দুবাই ঘুরে বেড়াচ্ছেন। নিশাত বিন জিয়া প্রতারণা করে দুবাই অর্থ পাচার করে। পরে আরও জানা যায়, প্রতারণার টাকা দিয়ে তার উচ্চবিলাসী জীবন দেখিয়ে গত ৮ মাসে প্রায় ৩০ কোটি টাকা আত্মসাৎ এবং পাচার করে।”
ফারদিন জানান, এই ভণ্ড প্রতারকের ভণ্ডামি দেখে একমাস আগে তার প্রদানকৃত সব চেকগুলো নিয়ে তাকে লিগ্যাল নোটিশ প্রদান করেন। সেইসঙ্গে ডিবি অফিসে অভিযোগ দেন। অর্থ পাচারকারীর মূল হোতা সাহিল মোস্তাভি (দুবাই প্রবাসী তবে এখন বাংলাদেশে) এবং প্রতারণা পরিচালনা করতেন নিশাত বিন জিয়া রুম্মান এবং তার স্ত্রী আফরা বাশনিন। লিগ্যাল নোটিশে উল্লেখ করা আছে আগামী ৩০ দিনের মধ্যে অর্থ পুরোপুরি ফেরত না দিলে চেকের উপরে এন আই অ্যাক্ট মামলা দিতে বাধ্য থাকিব।