বিশ্বকাপে ভারতের শুরুটা হয়েছিল দুর্দান্ত। ঘরের মাঠে হারিয়েছে আসরে অংশগ্রহণ করা সবগুলো দলকেই। গ্রুপপর্বের সবশেষ ম্যাচে নেদারল্যান্ডসকে ১৬০ রানে হারিয়েছে তারা। আর তাতেই নয় ম্যাচে নয় জয়ে হট ফেভারিট হিসেবেই লিগ পর্ব করলো রোহিত-কোহলিরা।
বেঙ্গালোরের এম চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামে টসে জিতে আগে ব্যাটের সিদ্ধান্ত নেন ভারত অধিনায়ক রোহিত শর্মা। ডাচ বোলারদের নাস্তানাবুদ করে নির্ধারিত ওভার শেষে ৪ উইকেটে ৪১০ রানের সংগ্রহ গড়ে আসরে অপরাজিত ভারত। আয়ার ও রাহুলের সেঞ্চুরির পাশাপাশি ফিফটি তুলে নেন গিল, রোহিত ও কোহলি। জবাবে নেমে.. ওভারে ৪৭.৫ ওভারে ২৫০ রানে গুটিয়ে যায় ডাচদের ইনিংস।
আসরে নয় ম্যাচের নয়টিতে জিতে ১৮ পয়েন্ট নিয়ে গ্রুপপর্ব শেষ করলো রোহিত শর্মার দল। অন্যদিকে ৯ ম্যাচে ৭ হারে রানরেটে পিছিয়ে টেবিলের তলানিতে থেকে আসর শেষ করলো ডাচরা। ফলে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ২০২৫ আসরে শ্রীলঙ্কার পাশাপাশি ডাচরাও কোয়ালিফাই করতে ব্যর্থ হয়েছে।
ভারতের দেয়া হিমালয়সম রান তাড়ায় নেমে শুরুতেই উইকেট হারায় তারা। দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে ৬১ রান তোলেন কলিন অ্যাকেরম্যান ও ম্যাক্স ও’ডাউড। ১৩তম ওভারে অ্যাকেরম্যান ফিরে যান ৩২ বলে ৩৫ রান করে।
১৬তম ওভারের প্রথম বলে ও’ডাউডকে ফেরান জাদেজা। ৪২ বলে ৩০ রান করেন ডাচ ওপেনার। ২৪.৩ ওভারে দলীয় ১১১ রানে স্কট এডওয়ার্ডসকে ফেরান বিরাট কোহলি। ৩০ বলে ১৭ রান করেন ডাচ অধিনায়ক।
৩২তম ওভারে দলীয় ১৪৪ রানে পঞ্চম ব্যাটারকে হারায় তারা। ২১ বলে ১২ রান করে বুমরাহ’র শিকার হন বাস ডে লেডে। ৩৮তম ওভারে দলীয় ১৭২ রানে ষষ্ঠ উইকেট তুলে নেন মোহাম্মদ সিরাজ। ৮০ বলে ৪৫ রান করা সাইব্র্যান্ড এঙ্গেলব্রেখটকে ফেরান তিনি।
৪৩তম ওভারে দলীয় ২০৮ রানে লোগান ফন বিককে ফেরান কুলদীপ যাদব। বিক ১৫ বলে ১৬ রান করেন। পরের ওভারে রোয়েলফ ফন ডের মেরউইকে ফেরান জাদেজা। ৮ বলে ১৬ রান করেন মেরউই।
৪৭তম ওভারে আরিয়ান দত্তকে ফেরান জাসপ্রীত বুমরাহ। ৪৮তম ওভারে ফিফটি পূর্ণ করেন তেজা নিদামানুরু। এক চার ও ছয়টি ছক্কায় ৩৮ বলে ফিফটি পূর্ণ করেন তিনি। পরের বলেই ফিরে যান শামির শিকার হয়ে। ৩৯ বলে ৫৪ রান করেন তিনি।
ভারতের হয়ে দুটি করে উইকেট নেন মোহাম্মদ সিরাজ, জাসপ্রীত বুমরাহ, কুলদীপ যাদব ও রবীন্দ্র জাদেজা। এছাড়া বিরাট কোহলি ও মোহাম্মদ শামি নেন একটি করে উইকেট।
এর আগে শ্রেয়াস আয়ার ও লোকেশ রাহুলের সেঞ্চুরি এবং তিন ব্যাটারের ফিফটিতে নেদারল্যান্ডসের সামনে হিমালয়সম ৪১১ রানের সংগ্রহ গড়ে ভারত।
ভারতের আন্তর্জাতিক ওয়ানডে ইতিহাসে চতুর্থ সর্বোচ্চ রানের সংগ্রহ এটি। ২০১১ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ৪১৮ রান করেছিল টিম ইন্ডিয়া। তবে বিশ্বকাপে ভারতের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সংগ্রহের রেকর্ড এটি। ২০০৭ বিশ্বকাপে বারমুডার বিপক্ষে ৪১৩ রান করেছিল দলটি।
ব্যাটে নেমে স্বাগতিকদের উড়ন্ত শুরু এনে দেন রোহিত শর্মা ও শুভমন গিল। শতরানের জুটি গড়েন তারা। ৩ চার ও ৪ ছয়ে ৫৬ বলে ৫১ রানে গিল ফিরে গেলে জুটি ভাঙে। ফিফটি তুলে নেন রোহিত শর্মাও। আঠারোতম ওভারে দলীয় ১২৯ রানে ফিরে যান রোহিত। ৮ চার ও ২ ছয়ে ৫৪ বলে ৬১ রান করে যান অধিনায়ক।
পরে শ্রেয়াস আয়ার ও বিরাট কোহলি ৭১ রানের জুটি গড়েন। ১৯তম ওভারে বিরাট ফিরে যান ৫ চার ও এক ছয়ে ৫৬ বলে ৫১ রান করে। চতুর্থ উইকেট জুটিতে লোকেশ রাহুলকে নিয়ে ডাচ বোলারদের উপর তোপ দাগেন শ্রেয়াস। ৮৪ বলে ক্যারিয়ারের চতুর্থ সেঞ্চুরি তুলে নেন।
ইনিংসের শেষ ওভারে সেঞ্চুরি তুলে নেন লোকেশ রাহুল। ১১ চার ও ৪ ছক্কায় ৬২ বলে সেঞ্চুরি স্পর্শ করেন। চলতি বিশ্বকাপের দ্রুততম সেঞ্চুরিতে পঞ্চম এবং বিশ্বকাপের ইতিহাসে নবম দ্রুততম সেঞ্চুরি এটি।
শ্রেয়াস আয়ার ও লোকেশ রাহুল ২০৮ রানের জুটি গড়েছেন। ইনিংসের এক বল বাকি থাকতে রাহুল ফিরে যান ৬৪ বলে ১০২ রান করে। ১১ চার ও ৪ ছক্কায় সাজানো ইনিংস।
ক্যারিয়ারসেরা ইনিংস খেলে অপরাজিত থাকেন শ্রেয়াস। ৯৪ বলে ১২৮ রানের ইনিংসে ছিল ১০ চার ও ৫ ছক্কার মার।
ডাচদের হয়ে দুটি উইকেট নেন বাস ডে লেডে। পল ফন মিকেরেন ও রোয়েলফ ফন ডের মেরউই নেন একটি করে উইকেট।