এশিয়া কাপে হতশ্রী পারফরম্যান্সের পর ওয়ানডে বিশ্বকাপেও আলো ছড়াতে পারেনি বাংলাদেশ। সেমিফাইনালের আশা নিয়ে ভারতের মাটিতে পা রাখা সাকিব আল হাসানের দলের সেই স্বপ্ন ধূলিসাৎ হয়। আসরে সবমিলিয়ে ৯ ম্যাচ খেলে মাত্র দুই খেলায় জয় পায় লাল-সবুজের দল। কোনোরকমে ২০২৫ সালের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে খেলা নিশ্চিত করে দেশে ফেরে টিম টাইগার্স। অথচ প্রত্যাশা ছিল সেমিফাইনালের!
চ্যানেল আই ভবনে এক আলাপচারিতায় বিশ্বকাপে এমন ভূপাতিত ব্যর্থতা নিয়ে প্রশ্নের খোলাখুলি উত্তর দিয়েছেন বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব। খারাপ পারফরম্যান্সের বিষয়টি অস্বীকার করার কোনো সুযোগ নেই বলে সাফ জানান। তার দাবি, ডাচদের বিপক্ষে হারটাই টাইগারদের একমাত্র খারাপ ফলাফল।
‘আমরা যদি নেদারল্যান্ডসের সঙ্গে অপ্রত্যাশিতভাবে না হারতাম, তাহলে অন্যান্য বিশ্বকাপের মতো এটিও একটি ঠিকঠাক বিশ্বকাপই হতো। তবে হ্যাঁ, অন্য বিশ্বকাপ থেকে হয়তো ভালো হতো না। কিন্তু আগের বিশ্বকাপগুলোতে যে ধরনের ফলাফল হয়েছে সেরকমই হতো। বিশ্বকাপে আমি বলব, ওই একটাই আমাদের খারাপ ফলাফল।’
‘তবে আমাদের দলটা যেভাবে পারফরম্যান্স করছিল, যদিও ২৩ সালে দল খুব বেশি পারফরম্যান্স করেনি। তবে ভালো করার কারণে মানুষের প্রত্যাশাটাও বেশি ছিল। কিন্তু দলের আসল বাস্তবতা বোঝা যায় আমরা যখন বিশ্বকাপের মতো মঞ্চে খেলতে যাই তখনই। এছাড়া আসলে আমাদের দলের বাস্তবতা পরীক্ষা করার মতো আর কোনো জায়গা নেই।’
বাংলাদেশ ঘরের মাঠে খেলার অভিজ্ঞতা ও সুবিধা কাজে লাগিয়ে বেশি সংখ্যক ম্যাচ জিতলেও বিশ্বকাপে প্রেক্ষাপট একেবারেই বদলে যায়। বিদেশের মাটিতে আরও অনেক ম্যাচ খেলা ও বিরুদ্ধ কন্ডিশনে জয়ের অভ্যাস গড়ার তাগিদটাই বেশি দিলেন সাকিব। শক্তিশালী দলগুলোর সঙ্গে অ্যাওয়ে সিরিজ খেলার সুযোগ না পাওয়া নিয়ে টাইগার অধিনায়কের কন্ঠে ঝরেছে আক্ষেপ।
‘আমি আমাদের জয়গুলোকে ছোট করে বলছি না। তবে যখন দ্বিপক্ষীয় সিরিজগুলো হয়, তখন আসলে ঘরের মাঠে আমাদের বেশি ম্যাচ খেলার কারণে অনেক সময় সুবিধা বেশি পাওয়া হয়। যে সুযোগগুলো আমরা আসলে নিয়ে থাকি। কিন্তু যখন বিশ্বকাপের মতো মঞ্চে খেলতে নামি, তখন আসলে পুরো বিষয়টাই আলাদা হয়ে যায়। তখন আমাদের পক্ষে বেশিরভাগ জিনিসই থাকে না। যেগুলো কিন্তু দ্বিপক্ষীয় সিরিজগুলোতে আমাদের পক্ষে অনেক বেশি থাকে। সুতরাং, ওই সুবিধা এবং অসুবিধাগুলো আমরা তখন উপলব্ধি করতে পারি। এ কারণেই আমার কাছে যেটি মনে হয়, আমরা যদি বেশি বেশি বাইরে গিয়ে ম্যাচ খেলে জিততে পারি, সেটি আমাদের জন্য খুব বেশি উপকার হবে।’
‘আমি কাউকে ছোট করে বলছি না। তবে জিম্বাবুয়ে বা এর চাইতে ছোট দলের সাথে খেলে আমরা যতটা না ভালো কিছু করতে পারবো, তার থেকে বড় দলগুলোর সাথে খেলে আমরা বেশি কিছু শিখতে পারবো। যেমন শ্রীলঙ্কায় গিয়ে আমরা খুব বেশি একটা ওয়ানডে ম্যাচ খেলি নাই। পাকিস্তানি গিয়েও ওরকম খেলা হয় না। ভারতে তো যাওয়াই হয় না। ইংল্যান্ডের সাথে সর্বশেষ হয়তো ২০০৯ সালে আমরা ওদের মাটিতে খেলেছিলাম।’
‘আসলে এ সকল দেশগুলোতে গিয়ে ওদের সাথে সিরিজ খেলাটা সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। যদি আমরা বিশ্বচ্যাম্পিয়ন একটি দল হতে চাই। যারা বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হয়েছে তাদের সাথেই আমাদের সবশেষ ১০ বছরে কোনো ম্যাচ খেলা হয়নি। তাহলে আপনি কীভাবে প্রত্যাশা করেন যে, আমরা ওই পর্যায়ে পারফরম্যান্স করবো?’
আগামী ৭ জানুয়ারির দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের জন্য মাগুরা-১ আসনে প্রার্থীদের মাঝে প্রতীক বরাদ্দ দেয়া হয়েছে সোমবার। আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী সাকিব প্রত্যাশামতো পেয়েছেন নৌকা প্রতীকই। এবারই প্রথম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন ৩৬ বর্ষী ক্রিকেটার। ২৬ নভেম্বর মাগুরা-১ আসন থেকে নৌকার মনোনয়ন পান টাইগারদের বিশ্বসেরা তারকা।