প্যালেস্টাইনের গাজা উপত্যকা নিয়ন্ত্রণকারী সশস্ত্র সংগঠন হামাস এবং ইসরায়েলের লড়াইয়ে মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছেই। গাজা থেকে চালানো রকেট হামলায় কমপক্ষে ২০০ ইসরাইলী নিহত হয়েছেন। ইসরাইলী বাহিনীর পাল্টা বিমান হামলায় কমপক্ষে ২৫০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।
রোববার ৮ অক্টোবর বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, দু’পক্ষের কয়েক হাজার মানুষ আহত হয়েছেন। পরিস্থিতি মোকাবেলায় দেশজুড়ে ৪৮ ঘণ্টার জরুরি অবস্থা জারি করেছে ইসরায়েল সরকার।
এর আগে শনিবার ভোরে হামাসের শীর্ষ নেতা মোহাম্মেদ দেইফ এক ভিডিও বার্তায় ইসরাইলের বিরুদ্ধে ‘অপারেশন আল-আকসা ফ্লাড’ এর ঘোষণা দেন। এর পরই ইসরাইলের দক্ষিণাঞ্চলে বিভিন্ন স্থাপনা লক্ষ্য করে শুরু হয় রকেট হামলা। হামাস দাবি করেছে, মাত্র ২০ মিনিটে ইসরাইলে প্রায় পাঁচ হাজার রকেট ছুঁড়েছে তারা।
রকেট হামলার জবাবে গাজা উপত্যকায় ইসরায়েল হামাসের বিভিন্ন স্থাপনা লক্ষ্য করে বিমান হামলা চালিয়েছে। ইসরাইল ডিফেন্স ফোর্স-আইডিএফ দাবি করেছে, তারা এখন পর্যন্ত ১৭টি সেনা কম্পাউন্ড আর হামাসের অপারেশনের চারটি হেডকোয়ার্টারে হামলা করেছে।
হামলা শুরুর পর ইসরায়েলের জনগণের উদ্দেশে এক বিবৃতিতে প্রধানমন্ত্রী বেনইয়ামিন নেতানিয়াহু জানান, তারা যুদ্ধের মধ্যে আছেন এবং এই যুদ্ধে ইসরাইল জয়ী হবে।
প্যালেস্টাইনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস বলেন, দখলদারদের বিরুদ্ধে নিজেদের আত্মরক্ষার অধিকার গাজাবাসীর রয়েছে।
ইসরায়েল জানিয়েছে, রকেট হামলার পাশাপাশি হামাসের অস্ত্রধারী সদস্যরা তাদের সীমানায় অনুপ্রবেশ করে অনেক ইসরাইলী সেনা এবং বেসামরিক নাগরিকদের আটক করছে। তবে হামাসের এক মুখপাত্র জানান, তারা আটক নয় বরং যুদ্ধবন্দি।
নিরাপত্তা বিষয়ক বিশেষজ্ঞরা বলেন, এটা ইসরায়েলি গোয়েন্দা মোসাদের ব্যর্থতা। এরইমধ্যে গোয়েন্দা সংস্থার বিরুদ্ধে তদন্তও শুরু করেছে ইসরাইলি সরকার, কীভাবে হামাসের এত বড় পরিকল্পিত হামলা মোসাদের নজর এড়িয়ে গেল।
যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য এবং ভারতসহ ইউরোপের বিভিন্ন দেশ চলমান এই সংঘাতে ইসরায়েলের পক্ষে বিবৃতি দিয়েছে। তীব্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে ইউরোপিয়ান কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ফন ডার লেয়েন এই হামলাকে ‘জঘন্য সন্ত্রাসী হামলা’ বলে বর্ণনা করেছেন।
তবে ইরান হামাসের এই হামলার প্রতি সমর্থন জানিয়েছে। ইরানের সাধারণ জনগণ রাস্তায় নেমে প্যালেস্টাইনের প্রতি একাত্মতা প্রকাশ করছেন। এছাড়া ইরাক এবং ইয়েমেনেও সাধারণ নাগরিকদের রাস্তায় নেমে হামাসের হামলার প্রতি সমর্থন দেখাতে ও আনন্দ মিছিল করতে দেখা গেছে।