রবিবার সন্ধ্যায় কায়রোতে ফারুকীর ‘নো ল্যান্ডস ম্যান’
‘নো ল্যান্ডস ম্যান’ এর মধ্যপ্রাচ্য ও উত্তর আফ্রিকা প্রিমিয়ার
কায়রো আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের ৪৩তম আসরে দেখানো হবে মেধাবী নির্মাতা মোস্তফা সরয়ার ফারুকীর প্রথম ইংরেজি ভাষার সিনেমা ‘নো ল্যান্ডস ম্যান’। অন্যান্য বিভাগের পাশাপাশি এবছর বিভিন্ন দেশের মোট ১৬টি সিনেমার ‘বিশেষ প্রদর্শনী’ করছে উৎসব কর্তৃপক্ষ। তারমধ্যে ‘নো ল্যান্ডস ম্যান’ একটি।
মধ্যপ্রাচ্যের সবচেয়ে পুরনো চলচ্চিত্র উৎসব বলা হয় কায়রো আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবকে। এই আসরে ৬৩টি দেশের মোট ৯৮টি সিনেমা প্রদর্শীত হবে। শুক্রবার (২৬ নভেম্বর) থেকে শুরু হওয়া এই চলচ্চিত্র উৎসব চলবে ৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত। এবারের উৎসবে জুরিদের প্রধান বিখ্যাত নির্মাতা এমির কুস্তরিকা।
উৎসবে যোগ দিতে এরইমধ্যে মিশরের উদ্দেশে রওনা হয়েছেন মোস্তফা সরয়ার ফারুকী। এসময় তিনি চ্যানেল আই অনলাইনকে জানান, রবিবার সন্ধ্যায় ‘নো ল্যান্ডস ম্যান’ এর প্রথম প্রদর্শনী। যেখানে তিনি ছাড়াও উপস্থিত থাকবেন এই ছবির সংগীত পরিচালক ও সহ-প্রযোজক এ আর রহমান এবং ছবির প্রধান নারী চরিত্র অস্ট্রেলিয়ান মেগান মিচেল।
তৃতীয় বিশ্বের একজন মানুষের অস্তিত্বহীনতার বেদনাই ‘নো ল্যান্ডস ম্যান’ এর প্রধান অনুসঙ্গ। এতে মূল চরিত্রে অভিনয় করেছেন বলিউডের প্রখ্যাত অভিনেতা নওয়াজউদ্দিন সিদ্দিকী। এছাড়াও বাংলাদেশ থেকে আছেন তাহসান, অস্ট্রেলিয়া থেকে মেগান মিশেল, ভারত থেকে ঈশা চোপড়া, বিক্রম কোচার এবং কিরণ খোজে।

ছবিতে সংগীত পরিচালনার পাশাপাশি সহপ্রযোজক হিসেবে এ আর রহমান ছাড়াও প্রযোজক হিসেবে যুক্ত আছেন ফরিদুর রেজা সাগর, অঞ্জন চৌধুরী, নুসরাত ইমরোজ তিশা, নওয়াজউদ্দিন সিদ্দিকী ও আমেরিকান প্রযোজক শ্রীহরি সাঠে। কো-প্রডিউসার হিসেবে আছে বঙ্গবিডি।
সিনেমাটি নিয়ে ফারুকী তার নিজের অনুভূতি জানিয়ে আগেই বলেন, ‘নির্মাতা হিসেবে নিজের ব্যক্তিগত কিছু অনুভূতিকে সিনেমায় ব্যাখ্যা করেছি! যা মানসিক আঘাত আমার পৃথিবী নিয়ে ভাবনার এবং দেখার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। আমার জন্ম হয়েছে দেশের দক্ষিণাঞ্চল নোয়াখালিতে। এই এলাকার মানুষদের নিয়ে বহু বছর ধরেই ট্রল করা হয়। তাই, খুব কম বয়সেই আমি বুঝে গেছি, এই ট্রলের হাত থেকে নিজেকে রক্ষা করার উপায় খুঁজে বের করতে হবে! কোন এলাকা থেকে এসেছি তা নিয়ে মিথ্যা বলা শুরু করলাম। আমার স্কুলের কোনো বন্ধুকে বাড়িতে আনতাম না, তারা যেন আমার বাবা মায়ের আঞ্চলিক ভাষা শুনে আমার এলাকা সম্পর্কে ধারণা করতে না পারে। বড় হতে হতে বুঝতে পেরেছি এটা মনের ওপর কেমন প্রভাব ফেলে, কীভাবে আমাদের হৃদয়ে একটি শূন্যস্থান তৈরি করে দেয় যখন আমরা নিজের পরিচয়ে পরিচিত হতে পারি না, নিজেকে গ্রহণ করতে পারিনা, নিজের পরিচয় নিয়ে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করতে পারি না। এই বিষয়টি আমার কাজে অনুপ্রেরণা জুগিয়েছে। ছোটবেলার এই অস্তিত্বহীনতার বেদনা ‘নো ল্যান্ডস ম্যান’ -এর কেন্দ্রীয় চরিত্র অনুভব করে।’
‘নো ল্যান্ডস ম্যান’-এর চিত্রনাট্য একাধিক ফেস্টিভ্যালে ফান্ড জিতে নিয়েছে। এটি ২০১৪ সালে বুসান ফিল্ম ফেস্টিভালে এশিয়ান প্রজেক্ট মার্কেটে নির্বাচিত হয়। একই বছর নভেম্বরে ভারতের এনএফডিসি আয়োজিত ফিল্ম বাজারে শ্রেষ্ঠ প্রজেক্টের পুরস্কার লাভ করে এবং ডিসেম্বরে মোশন পিকচার্স অ্যাসোসিয়েশন অফ আমেরিকা এবং এশিয়া প্যাসিফিক স্ক্রিন অ্যাওয়ার্ড-এর যৌথ উদ্যোগে দেয়া অ্যাপসা ফিল্ম ফান্ড লাভ করে।