প্রাণঘাতী নিপাহ ভাইরাস থেকে নিরাপদ এবং সুরক্ষিত থাকতে খেজুরের কাঁচা রস ও পশু-পাখি খাওয়া ফল না খাওয়ার পরামর্শ জানিয়েছে সরকার নিয়ন্ত্রিত প্রতিষ্ঠান রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইইডিসিআর)।
গতকাল (১০ ডিসেম্বর) রোববার বেলা ১১টায় আইইডিসিআর এর আয়োজনে এবং আইসিডিডিআরবি এর কারিগরি সহায়তায় আইইডিসিআর মিলনায়তনে নিপাহ ভাইরাসের বিস্তার এবং ঝুঁকি বিষয়ে অবহিতকরণ সভা অনুষ্ঠিত হয়। এই সভায় প্রাণঘাতী নিপাহ ভাইরাস থেকে নিরাপদ এবং সুরক্ষিত থাকতে দেশবাসীকে খেজুরের কাঁচা রস ও পশু-পাখি খাওয়া ফল না খাওয়ার পরামর্শ জানানো হয়।
আইইডিসিআর এর পরিচালক ডাঃ তাহমিনা শিরীন জানান, নিপাহ ভাইরাস একটি মারাত্মক রোগ সৃষ্টিকারী ভাইরাস। এ ভাইরাসের বাহক টেরোপাস (ফল আহারি) গোত্রীয় বাদুড়। বাদুড় থেকে মানুষে এই রোগের সংক্রমণ হয়। মানুষের মধ্যে এ সংক্রমণ প্রথম সনাক্ত হয় মালয়েশিয়ায় ১৯৯৮ সালে। বাংলাদেশে ২০০১ সালে মেহেরপুর জেলায় নিপাহ ভাইরাসের প্রথম প্রাদুর্ভাব চিহ্নিত হয়। এরপর থেকে প্রায় প্রতিবছরই বাংলাদেশে এই রোগের প্রাদুর্ভাব লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে শীত মৌসুমে ডিসেম্বর থেকে মে মাস পর্যন্ত এ রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা যায়। সাধারণত খেজুরের কাঁচা রস পানের মাধ্যমে এই ভাইরাস সংক্রমিত হয়। এ ছাড়াও বাদুড়ের মুখের লালা বা বাদুড়ের মল-মূত্র দ্বারা দূষিত তালের রস বা তাড়ি ও আংশিক খাওয়া ফল মানুষ খেলে নিপাহ ভাইরাসের সংক্রমণ ঘটতে পারে। বাংলাদেশে গবেষণা থেকে প্রমাণ পাওয়া গেছে, মানুষ থেকে মানুষে নিপাহ ভাইরাসের সংক্রমণ ঘটেছে।
তিনি আরও বলেন,নিপাহ ভাইরাস সংক্রমণ থেকে বাঁচার জন্য কোনোক্রমেই খেজুরের কাঁচা রস না খাওয়ার জন্য জনসাধারণের প্রতি আমরা আহ্বান জানাচ্ছি। যে কোনো ফল ভালো করে ধুয়ে থেতে হবে। গাছের নীচে পড়ে থাকা আধা খাওয়া কিংবা ফাটা ফল খাওয়া যাবে না। বিশেষ করে শিশুদেরকে এ বিষয়ে সতর্ক করতে হবে।
সভায় বিজ্ঞ আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অধ্যাপক ডা. মীরজাদী সেত্রিনা ফ্লোরা, পরিচালক, জাতীয় প্রতিষেধক ও সামাজিক চিকিৎসা প্রতিষ্ঠান (নিপসম), অধ্যাপক ডাঃ মোঃ শাহাদাত হোসেন, পরিচালক, এম, আই, এস ও লাইন ডিরেক্টর (এইচ, আই.এস, ই- হেলথ), ডাঃ আবু হোসাইন মোঃ মইনুল আহসান, পরিচালক, (হসপিটাল এন্ড ক্লিনিক), অধ্যাপক ডাঃ নীতিশ চন্দ্র দেবনাথ, ন্যাশনাল কোঅর্ডিনেটর, ওয়ান হেলথ বাংলাদেশ, ডাঃ এন্থনী ইসোফনি, টিম লিড, হেল্থ সিকিউরিটি এন্ড ইমারজেপি, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা, বাংলাদেশ।
এছাড়াও স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, আইইডিসিআর, আইসিডিডিআর, বি, ইকো হেল্থ এলায়েন্স, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা, ইউএস সিডিসি, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর এবং বিভিন্ন গণমাধ্যমের প্রতিনিধিগণ উপস্থিত ছিলেন।